শুক্রবার, ৬ মে, ২০২২ ০০:০০ টা
নিউমার্কেটে সংঘর্ষ

নাহিদ হত্যায় সিয়ামসহ তিনজন গ্রেফতার

নিজস্ব প্রতিবেদক

রাজধানীর নিউমার্কেট এলাকায় দোকান মালিক ও কর্মীদের সঙ্গে ঢাকা কলেজ শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষের ঘটনায় জড়িত আরও তিনজনকে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব। তারা হলেন মোয়াজ্জেম হোসেন সজীব, মেহেদী হাসান বাপ্পি ও মাহমুদুল হাসান সিয়াম।

বুধবার রাতে র‌্যাব সদর দফতরের গোয়েন্দা শাখা, র‌্যাব-২ ও র‌্যাব-৩-এর যৌথ অভিযানে শরীয়তপুর ও কক্সবাজার থেকে তাদের গ্রেফতার করা হয়। র‌্যাব জানিয়েছে, ঢাকা কলেজের বাংলা বিভাগের তৃতীয় বর্ষের ছাত্র সিয়ামকে গ্রেফতার করা হয়েছে সংঘর্ষে নিহত ডেলিভারিম্যান নাহিদ হোসেনকে হত্যার সঙ্গে সরাসরি জড়িত থাকার অভিযোগে। আর ওয়েলকাম নামে নিউমার্কেটের একটি খাবারের দোকানের কর্মী সজীব ও বাপ্পিকে গ্রেফতার করা হয়েছে সংঘর্ষ, দাঙ্গা-হাঙ্গামা ও উসকানির অভিযোগে।

গতকাল রাজধানীর কারওয়ান বাজারে র‌্যাব মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে সংস্থাটির আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বলেন, শরীয়তপুর থেকে সিয়ামকে গ্রেফতার করা হয়েছে। সেখানে এক আত্মীয়র বাসায় তিনি আত্মগোপন করে ছিলেন। ভিডিও ফুটেজে দেখা গেছে, ১৮ এপ্রিল বেলা দেড়টার দিকে ইটের আঘাতে ডেলিভারিম্যান নাহিদ পড়ে যান। এ সময় সিয়াম রড দিয়ে তাকে বেদম পেটাচ্ছিলেন। তিনি চলে যাওয়ার পর ইমন নামে আরেকজন এসে নাহিদকে কুপিয়ে মারাত্মক জখম করেন। নাহিদ ওই দিন রাত সাড়ে ৯টার দিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের আইসিইউতে মারা যান।

গ্রেফতার সজীব ও বাপ্পিকে কক্সবাজার থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তারা সেখানে আত্মগোপনে থেকে বিভিন্ন হোটেলে চাকরির জন্য চেষ্টা করছিলেন। এমনকি নিজেদের পরিচয় লুকানোর জন্য তারা লম্বা চুল কেটে ছোট করেন।

সংঘর্ষের ওই ঘটনায় নিউমার্কেট থানায় দুটি হত্যা মামলার পাশাপাশি সংঘর্ষ, বোমাবাজি ও অ্যাম্বুলেন্সে হামলার অভিযোগে মোট পাঁচটি মামলা হয়েছে। সংঘর্ষের এসব মামলায় ২৪ জনের নাম উল্লেখ করে কয়েক শ ছাত্র ও দোকানকর্মীকে আসামি করা হয়েছে। এ মামলার প্রধান আসামি অ্যাডভোকেট মকবুল হোসেনকে গ্রেফতার করে এরই মধ্যে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে পুলিশ। নিউমার্কেট থানা বিএনপির সাবেক সভাপতি মকবুল ‘ক্যাপিটাল’ ও ‘ওয়েলকাম’ দোকান দুটির মালিক। তবে কোনো দোকানই তিনি নিজে চালাতেন না। রফিকুল ইসলাম ও শহিদুল ইসলাম নামে দুজনকে দোকান দুটি ভাড়া দিয়ে রেখেছিলেন। মামলায় নাম আসা মকবুল ছাড়া বাকিরাও বিএনপির নেতা-কর্মী।

এর আগে ডেলিভারিম্যান নাহিদকে পিটিয়ে ও কুপিয়ে হত্যার ঘটনায় পাঁচজনকে গ্রেফতার করে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। তারা হলেন ঢাকা কলেজের হিসাববিজ্ঞান বিভাগের চতুর্থ বর্ষের আবদুল কাইয়ুম, সমাজবিজ্ঞান বিভাগের শেষ বর্ষের পলাশ মিয়া ও মাহমুদ ইরফান, বাংলা বিভাগের ফয়সাল, ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের প্রথম বর্ষের জুনায়েদ বুগদাদী। তবে মুরসালিনকে হত্যায় জড়িত কাউকে চিহ্নিত করা যায়নি বলে পুলিশ ও র‌্যাব সূত্রে জানা গেছে। তারা বলছেন, নাহিদ ও মুরসালিন হত্যার ঘটনা গুরুত্বসহকারে তদন্ত করা হচ্ছে। বিভিন্ন ভিডিও ও সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণ করে হত্যায় জড়িত সবাইকে আইনের আওতায় আনা হবে।

 

সর্বশেষ খবর