শনিবার, ৭ মে, ২০২২ ০০:০০ টা

কী বার্তা দেবেন শেখ হাসিনা

আওয়ামী লীগ কার্যনির্বাহী সংসদের বৈঠক আজ

রফিকুল ইসলাম রনি

কী বার্তা দেবেন শেখ হাসিনা

দীর্ঘদিন পর কেন্দ্রীয় নেতাদের সঙ্গে বৈঠকে বসছেন আওয়ামী লীগ সভানেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। দলের ২২তম জাতীয় কাউন্সিল, মেয়াদোত্তীর্ণ সহযোগী সংগঠনের সম্মেলনের তারিখ ঘোষণা, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের কর্মপরিকল্পনাসহ কী বার্তা দেবেন দলীয় প্রধান? এমন প্রশ্ন আওয়ামী লীগের সর্বস্তরের নেতা-কর্মীর।

দলীয় সূত্রমতে, আজ বিকাল সাড়ে ৫টায় আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী সংসদের সভা গণভবনে হবে। এতে সভাপতিত্ব করবেন দলের সভানেত্রী শেখ হাসিনা। ধারণা করা হচ্ছে, দীর্ঘ আড়াই বছর পর সবচেয়ে বড় পরিসরে আজ বৈঠক হবে। এর আগে কার্যনির্বাহী সংসদের বৈঠক হলেও সব নেতা অংশগ্রহণ করার সুযোগ পাননি। সভার প্রস্তুতির অংশ হিসেবে শুক্রবার আওয়ামী লীগ সভানেত্রীর ধানমন্ডির কার্যালয়ে নেতাদের করোনা টেস্ট করানো হয়েছে। যাঁদের রিপোর্ট নেগেটিভ আসবে তাঁরাই কেবল সভায় অংশ নিতে পারবেন।

এ প্রসঙ্গে আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ও কৃষিমন্ত্রী ড. আবদুর রাজ্জাক বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, ‘আওয়ামী লীগ হচ্ছে ডায়নামিক রাজনৈতিক দল। দল ক্ষমতায় অথবা বিরোধী দলে যে অবস্থায় থাকুক না কেন নিয়মিত সম্মেলনসহ রাজনৈতিক কর্মসূচি গ্রহণ করে থাকে। সামনে আওয়ামী লীগের জাতীয় কাউন্সিল, এর মাধ্যমে নতুন নেতৃত্ব সৃষ্টি হবে। সে লক্ষ্যে তৃণমূলে সম্মেলন শেষ করা, জাতীয় নির্বাচনে বিজয়ী হওয়ার কৌশল কেমন হবে সে বিষয়ে নেত্রী দিকনির্দেশনা দেবেন।’

দলীয় সূত্র জানান, আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী সংসদের বৈঠকে এক ডজন আলোচ্যসূচি রাখা হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে- শোকপ্রস্তাব পাঠ, ১৭ মে আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনার স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস, ১১ জুন কারামুক্তি দিবস, ২৫ মে জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের জন্মবার্ষিকী, ৭ জুন ঐতিহাসিক ছয় দফা দিবস, ২৩ জুন আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী, ৫ আগস্ট জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জ্যেষ্ঠপুত্র বীর মুক্তিযোদ্ধা শেখ কামালের জন্মবার্ষিকী, ৮ আগস্ট বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন নেছা মুজিবের জন্মবার্ষিকী, ১৫ আগস্ট জাতীয় শোক দিবস, সমসাময়িক জাতীয় ও আন্তর্জাতিক বিষয়, সাংগঠনিক ও বিবিধ।

দলের নীতিনির্ধারক ফোরামের একাধিক নেতা জানিয়েছেন, এক ডজন কর্মসূচি ধরা হলেও মূলত গুরুত্বপূর্ণভাবে উপস্থাপন করা হবে জাতীয় কাউন্সিল, মেয়াদোত্তীর্ণ সহযোগী ও ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনের সম্মেলন এবং দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পূর্বপ্রস্তুতি। দলের গঠনতন্ত্র অনুসারে আগামী ডিসেম্বরে জাতীয় কাউন্সিল হওয়ার কথা রয়েছে। সে বিষয়ে দলীয় সভানেত্রী নেতাদের গাইডলাইন দেবেন। কেন্দ্রীয় সম্মেলনের আগে ঘোষণাপত্র তৈরি, গঠনতন্ত্র সংশোধন, পরিবর্তন, পরিমার্জনসহ নানা বিষয়ে দিকনির্দেশনা দেবেন দলীয় সভানেত্রী শেখ হাসিনা। কারণ হিসেবে নেতারা বলছেন, আওয়ামী লীগের সম্মেলন শুধু নিয়ম রক্ষার সম্মেলন নয়, এটি জাতির সামনে ভিশন। আগামীর বাংলাদেশ কেমন হবে আওয়ামী লীগের ঘোষণাপত্রে সে চিত্র তুলে ধরা হয়। এ ছাড়া গঠনতন্ত্র সংযোজন-বিয়োজনের প্রয়োজন হয়। ডিসেম্বরে সম্মেলন হলে এখনই কাজ শুরু করতে হবে। সহযোগী ও ভ্রাতৃপ্রতিম মেয়াদোত্তীর্ণ সংগঠনগুলোকে ঢেলে সাজাতে সম্মেলনের প্রস্তুতি নিতে নির্দেশনা দেওয়া হবে।

জানা গেছে, জেলা-উপজেলা শাখাগুলোর সম্মেলন হয়েছে কি না- সাংগঠনিক সম্পাদকদের কাছ থেকে এ রিপোর্ট নেবেন দলীয় সভানেত্রী। আসন্ন জাতীয় নির্বাচনের জন্য মাঠের প্রস্তুতি এবং যেসব জেলায় দলীয় কোন্দল বা অভ্যন্তরীণ সমস্যা আছে সেগুলো সমাধানেও কথা বলবেন। এ ছাড়া বিভিন্ন জেলা শাখার নেতাদের অব্যাহতি ও বহিষ্কারের সুপারিশের বিষয়েও সিদ্ধান্ত হবে। এ ছাড়া ইতোমধ্যে মেয়াদোত্তীর্ণ হয়েছে এমন সহযোগী সংগঠনগুলোর সম্মেলন আয়োজনের বিষয়েও কথা হবে এ বৈঠকে। সংগঠনগুলোর বিভিন্ন ইতিবাচক ও নেতিবাচক কর্মকাণ্ডের বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা উঠতে পারে। আগামী কয়েক মাসে বেশ কিছু দিবস আছে সেগুলোর কর্মসূচি ঠিক করা হবে। পাশাপাশি কুমিল্লা সিটি করপোরেশন (কুসিক)সহ বেশ কিছু স্থানীয় নির্বাচন নিয়ে আলোচনা হবে। কুসিক নির্বাচনের জন্য কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের নির্বাচনী সমন্বয় টিমও গঠন হতে পারে সভায়। এ প্রসঙ্গে আওয়ামী লীগের যুগ্মসাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল আলম হানিফ বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, ‘গঠনতন্ত্র অনুযায়ী দুই মাস পর পর কার্যনির্বাহী সংসদের বৈঠক হওয়ার কথা। কিন্তু করোনার কারণে তা করা সম্ভব হয়নি। করোনার প্রকোপ কমে যাওয়ায় এখন থেকে নিয়মিত বৈঠক হবে। এর অংশ হিসেবেই আগামীকাল (শনিবার) গণভবনে বৈঠক ডাকা হয়েছে।’

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর