সোমবার, ৯ মে, ২০২২ ০০:০০ টা

নন্দিত গীতিকার কে জি মোস্তফা আর নেই

নিজস্ব প্রতিবেদক

নন্দিত গীতিকার কে জি মোস্তফা আর নেই

‘তোমারে লেগেছে এত যে ভালো...’, ‘আয়নাতে ওই মুখ দেখবে যখন...’ এমন কালজয়ী জনপ্রিয় গানের গীতিকার, সাংবাদিক, কবি ও কলামিস্ট কে জি মোস্তফা মারা গেছেন [ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন]। গতকাল রাত ৮টার দিকে নিজ বাসায় অসুস্থবোধ করলে তাকে শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। পরিবার সূত্রে জানা গেছে, আজ বাদ জোহর কে জি মোস্তফার লাশ জাতীয় প্রেস ক্লাবে নেওয়া হবে। সেখানে তার জানাজা শেষে লাশ দাফন করা হবে।

কে জি মোস্তফার জন্ম ১৯৩৭ সালের ১ জুলাই নোয়াখালীর বেগমগঞ্জে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বাংলা ভাষা ও সাহিত্যে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি লাভ করেন তিনি। শিক্ষানবীস হিসেবে তার হাতেখড়ি দৈনিক ইত্তেহাদে ১৯৫৮ সালে। ওই বছরই ‘দৈনিক মজলুম’-এ সহ সম্পাদক পদে নিয়োগ পান। পত্রিকাটি বিলুপ্ত হওয়ার আগ পর্যন্ত তিনি বহাল ছিলেন। দীর্ঘ বিরতির পর ১৯৬৮ সালে ফের সাংবাদিকতা শুরু করে সাপ্তাহিক জনতায়। ১৯৭০ সালে সাবেক মন্ত্রী ও বর্ষীয়ান আওয়ামী লীগ নেতা কফিলউদ্দীন চৌধুরীর প্রেস সেক্রেটারি নিযুক্ত হন তিনি। সে সময় তিনি সরকারি চাকরি হিসেবে প্রথম শ্রেণির রেডিও সার্ভিসের জন্যও মনোনীত হন। তবে মুক্তিযুদ্ধের কারণে চাকরিতে যোগ দেননি। স্বাধীনতার পর কে জি মোস্তফা দৈনিক গণকণ্ঠ, দৈনিক স্বদেশ, দৈনিক জনপদসহ বিভিন্ন গণমাধ্যমে কাজ করেন। তিনি ‘নূপুর’ নামে একটি বিনোদন মাসিক সম্পাদনা করতেন। ১৯৭৬ সালে বিলুপ্ত সংবাদপত্রের একজন সাংবাদিক হিসেবে কে জি মোস্তফা বিসিএস (তথ্য) ক্যাডারভুক্ত হন এবং চলচ্চিত্র ও প্রকাশনা অধিদফতরে সহকারী সম্পাদক পদে যোগ দেন। পদোন্নতি পেয়ে প্রথমে সম্পাদক, পরে সিনিয়র সম্পাদক পদে উন্নীত হন। অবসর নেন ১৯৯৬ সালে। চলচ্চিত্র ও প্রকাশনা অধিদফতর থেকে প্রকাশিত কিশোর পত্রিকা ‘নবারুণ’, সাহিত্য মাসিক ‘পূর্বাচল’, ‘সাপ্তাহিক বাংলাদেশ সংবাদ’ এবং সবশেষ ‘সচিত্র বাংলাদেশ’ পত্রিকার সম্পাদক পদে দায়িত্ব পালন করেন তিনি। কিছুদিনের জন্য বাংলাদেশ স্কাউটসের মুখপত্র ‘অগ্রদূত’-এর ব্যবস্থাপনা সম্পাদক ছিলেন। ছাত্রজীবনেই তিনি লেখালেখি শুরু করেন। এক পর্যায়ে গান লিখতে শুরু করেন এবং তার লেখা বেশ কিছু গান অসামান্য জনপ্রিয়তা পায়। এ পর্যন্ত তিনি সহস্রাধিক গান রচনা করেছেন। এছাড়া বেশ কিছু কাব্যগ্রন্থ, ছড়ার বই ও গল্পের বই রচনা করেন তিনি। নাম লেখান চলচ্চিত্র পরিচালনায়।

কুমিল্লা অলক্ত সাহিত্য সংসদ, জাতীয় প্রেস ক্লাব, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ললিতকলা বিভাগের ‘সফেন’, ‘সৃজনী’ সংগীত গোষ্ঠী, বাংলাদেশ লেখিকা সংঘ, বাংলাদেশ স্কাউটস, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ‘ডাকসু’সহ বিভিন্ন সংগঠন থেকে সম্মাননা, সংবর্ধনা ও পদক পেয়েছেন তিনি।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর