মঙ্গলবার, ১০ মে, ২০২২ ০০:০০ টা

বিক্ষোভে উত্তাল শ্রীলঙ্কা, পদত্যাগ রাজাপক্ষের

এমপি নিহত, মন্ত্রীর বাড়িতে আগুন, কারফিউ

প্রতিদিন ডেস্ক

বিক্ষোভে উত্তাল শ্রীলঙ্কা, পদত্যাগ রাজাপক্ষের

গণআন্দোলনের মুখে অবশেষে শ্রীলঙ্কার প্রধানমন্ত্রী মাহিন্দা রাজাপক্ষে পদত্যাগ করেছেন। গতকাল বিকালে পদত্যাগের এ ঘোষণা প্রকাশ করা হয়। এর আগে বিক্ষুব্ধ জনতার ওপর পুলিশ গুলি চালায়। এতে অন্তত ৭৮ জন আহত হন। এদিকে জনতা-পুলিশ সংঘর্ষের সময় রাজধানী কলম্বোর কাছে নিত্তামবুয়া এলাকায় ক্ষমতাসীন দলের এক এমপি নিহত হয়েছেন বলে খবর পাওয়া গেছে। আগুন দেওয়া হয়েছে এক মন্ত্রীর বাড়িতে। দেশব্যাপী কারফিউ জারি করা হয়েছে। সূত্র : বিবিসি, রয়টার্স।

রাজাপক্ষের মুখপাত্র রোহান ওয়েলিউইটা জানান, ৭৬ বছর বয়সী মাহিন্দা তাঁর পদত্যাগপত্র ছোট ভাই প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া রাজাপক্ষের কাছে পাঠান। রোহান বলেন, ‘নতুন জোট সরকার’ গঠনের পথ পরিষ্কার করতে তিনি (মাহিন্দা) পদত্যাগ করেছেন। খবরে বলা হয়, শ্রীলঙ্কার স্মরণকালের সবচেয়ে ভয়াবহ অর্থনৈতিক সংকটের জন্য দেশটির ক্ষমতাধর রাজাপক্ষে পরিবারকে দায়ী করা হচ্ছে। প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া ও প্রধানমন্ত্রী মাহিন্দার পদত্যাগের দাবিতে দেশটিতে কিছুদিন ধরে লাগাতার বিক্ষোভ চলছে। নজিরবিহীন ওই সংকটের মধ্যে গতকালের সংঘর্ষের পর কারফিউ জারি করে পুলিশ। সরকারি কর্মকর্তাদের সূত্র জানায়, কলম্বোর কেন্দ্রস্থলে সহিংসতায় অন্তত ২০ জন আহত হয়েছেন। তবে কলম্বো ন্যাশনাল হাসপাতালের মুখপাত্র পুষ্পা সোয়সা বলেন, এরই মধ্যে আহত হয়ে হাসপাতালে এসেছেন ৭৮ জন। এদিকে শ্রীলঙ্কা পুলিশ জানিয়েছে, অমরাকীর্থি আথুকোরালা নামে সরকারি দলের এক এমপি গতকাল নিত্তামবুয়া এলাকায় বিক্ষোভকারীদের সামনে পড়েন। এ সময় তার গাড়ির পথরোধ করলে তিনি গুলিবর্ষণ করেন। এতে দুজন গুরুতর আহত হন। সংঘর্ষের একপর্যায়ে কাছের একটি ভবনে আশ্রয় নেওয়ার চেষ্টা করেন ওই এমপি। পরে তার লাশ পাওয়া যায়। পুলিশ তখনই কলম্বোতে কারফিউ জারি করলেও পরে দেশজুড়ে তা জারি করা হয়। প্রসঙ্গত, অর্থনৈতিক সংকটসহ নানা সংকটে জর্জরিত দেশটিতে বিক্ষোভ চলছে। এ পরিস্থিতি থেকে বেরিয়ে আসতে প্রধানমন্ত্রীকে পদত্যাগের অনুরোধ করেছিলেন প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া রাজাপক্ষে। তবে প্রেসিডেন্ট নিজেও পদত্যাগের চাপে রয়েছেন। কারণ শুরু থেকেই প্রেসিডেন্টসহ প্রধানমন্ত্রীকে পদত্যাগের দাবিতে বিক্ষোভ করছেন সাধারণ মানুষ। উল্লেখ্য, গত ২০ বছরের মধ্যে ১২ বছরই শ্রীলঙ্কার সরকারের গুরুত্বপূর্ণ পদে থেকেছেন রাজাপক্ষে পরিবারের সদস্যরা। এ সময় তারা স্বৈরতন্ত্রের তকমা পেয়েছেন। এর আগে তার ভাই দুই মেয়াদে প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব পালন করেন।

তাছাড়া তার অন্য দুই ভাই দেশটির বন্দর ও কৃষিব্যবস্থা নিয়ন্ত্রণ করছেন। এভাবে রাজাপক্ষে পরিবারের কয়েক ডজন সদস্য সরকারের সর্বোচ্চ পদে দায়িত্ব পালন করছেন। তাদের কারণে অর্থনৈতিক সংকটে ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে পৌঁছেছে দেশটি। এরই মধ্যে ঋণ খেলাপিতে পরিণত হয়েছে দেশটি।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর