শিরোনাম
বুধবার, ১১ মে, ২০২২ ০০:০০ টা

শ্রীলঙ্কায় জ্বলছে মন্ত্রী এমপিদের বাড়ি

সামরিক বাহিনীকে গুলি চালানোর নির্দেশ, নিহত ৮ আহত ২০০, প্রেসিডেন্টের পদত্যাগ দাবি, সেনা পাহারায় রাজাপক্ষে

প্রতিদিন ডেস্ক

শ্রীলঙ্কায় জ্বলছে মন্ত্রী এমপিদের বাড়ি

শ্রীলঙ্কায় আগুনে জ্বলছে মন্ত্রীর বাড়ি। আহত একজনকে নিচ্ছেন পুলিশ সদস্যরা। বিক্ষোভ দমাতে নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যদের তৎপরতা

রাজনৈতিক সহিংসতায় শ্রীলঙ্কায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৮-এ। আহত হয়েছেন প্রায় ২০০ জন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সোমবার যে কারফিউ ঘোষণা করা হয়েছিল বুধবার পর্যন্ত তা বাড়ানো হয়েছে। পাশাপাশি বাড়ানো হয়েছে কারফিউ কার্যকরে পুলিশ ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ক্ষমতা। দেশটির পুলিশের বরাত দিয়ে এ খবর দিয়েছে খালিজ টাইমস। সর্বশেষ দেশটির দক্ষিণাঞ্চলীয় শহর বীরাকেটিয়ায় দুই আন্দোলনকারী নিহত হন। সেখানে সরকারদলীয় রাজনীতিবিদ আন্দোলনকারীদের লক্ষ্য করে গুলি ছোড়েন। এতে দুজন নিহত ও পাঁচজন আহত হন। এর আগে পদত্যাগ করেন শ্রীলঙ্কার প্রধানমন্ত্রী মাহিন্দা রাজাপক্ষে। তিনি টুইটারে একটি পোস্ট করে জানান, প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া রাজাপক্ষের কাছে তাঁর পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছেন। তবে তাতেও জনগণের ক্ষোভ কমছে না। তারা শাসক দলের এমপিদের বাড়িতে আগুন ও পার্টি অফিসগুলো ধ্বংস করে দিচ্ছে। বিবিসি জানিয়েছে, ক্ষুব্ধ জনতা পদত্যাগী প্রধানমন্ত্রী রাজাপক্ষে ও সরকারদলীয় কয়েকজন এমপির বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দিয়েছে। গতকাল হাজার হাজার বিক্ষোভকারী রাজাপক্ষের সরকারি বাসভবন টেম্পল ট্রিজের প্রধান গেট ভাঙার চেষ্টা করে। তখন রাজাপক্ষকে বাঁচাতে সেনারা বাড়ির ভিতরের সবাইকে উদ্ধার করে নিয়ে যায়। এর পরও বিক্ষোভকারীরা বাড়িতে আগুন লাগিয়ে দেয়। বাসভবন ও আশপাশে কমপক্ষে ১০টি পেট্রোলবোমা নিক্ষেপ করা হয়। তবে এখন রাজাপক্ষে ও তাঁর পরিবার নিরাপদে আছেন। বিক্ষোভকারীরা এখন দেশের প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া রাজাপক্ষের পদত্যাগ দাবিতে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছে। কিন্তু প্রেসিডেন্ট পদত্যাগ না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। এর প্রতিবাদে সোমবার গভীর রাতে বিক্ষোভকারীরা সরকার সমর্থক ও সরকারদলীয় এমপিদের লক্ষ্য করে হামলা চালাতে শুরু করে। দেশের বিভিন্ন স্থানে রাজাপক্ষের ভাইদের পৈতৃক বাড়ি ও বিভিন্ন মন্ত্রী-এমপির বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। যেসব মন্ত্রীর বাড়ি পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে তার মধ্যে রয়েছেন মন্ত্রী সানাৎ নিশান্তও। হাম্বানটোটায় রাজাপক্ষের পরিবারের নিজস্ব বাড়িতে গড়ে তোলা জাদুঘরটিও জ্বালিয়ে দেয় আন্দোলনকারীরা। সামাজিক মাধ্যমে বিভিন্ন ভিডিও ফুটেজে দেখা যাচ্ছে, বাড়িগুলোয় আগুনের লেলিহান শিখা ঘিরে মানুষজন উল্লাস করছে। প্রেসিডেন্টের সরকারি বাসভবনের চারপাশের এলাকায়ও আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। সরকারের শীর্ষ কর্মকর্তা কিংবা নেতারা যাতে দেশত্যাগ করতে না পারেন সেজন্য বিমানবন্দরে যাওয়া-আসার সড়কগুলোয় লাঠি ও রড নিয়ে অবরোধ সৃষ্টি করে আন্দোলনকারীরা। বিবিসি জানিয়েছে, স্বাভাবিক সময়ে ওই রাস্তাগুলোয় পুলিশ ও নিরাপত্তা বাহিনীর যেমন উপস্থিতি দেখা যায়, এখন তা-ও দেখা যাচ্ছে না। এমন পরিস্থিতিতে বিক্ষোভ নিয়ন্ত্রণে সোমবার দেওয়া কারফিউর সময় বাড়ানো হয়েছে। জননিরাপত্তা অর্ডিন্যান্সের ১৬ ধারা মেনে যে কারফিউ দেওয়া হয়েছিল তা গতকাল সকাল ৭টায় তুলে নেওয়ার কথা ছিল। পরে তা বাড়িয়ে আজ সকাল ৭টা পর্যন্ত করা হয়েছে। কারফিউ চলাকালে কেউ ঘর থেকে বের হতে পারবে না। তবে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের অনুমতি নিয়ে বের হওয়া যাবে। শ্রীলঙ্কার পর্যটন বিভাগ বলেছে, বেড়াতে আসা বিদেশিদের ট্রাভেল ডকুমেন্টকে তাদের কারফিউ পাস হিসেবে গণ্য করা হবে। চলাচলের সময় তাদের পাসপোর্ট বা উড়োজাহাজের টিকিট দেখাতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া বিদেশিদের তাদের হোটেলের আশপাশে থাকার অনুরোধ জানানো হয়েছে।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর