বৃহস্পতিবার, ১২ মে, ২০২২ ০০:০০ টা

যুগ্ম সচিব পদে পদোন্নতি এ মাসেই

ডিআইজি হলেন পুলিশের ৩২ কর্মকর্তা

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রশাসনে আবারও যুগ্ম সচিব পদে পদোন্নতির প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। পদোন্নতির জন্য মঙ্গলবার দুপুরে মন্ত্রিপরিষদ সচিবের সভাপতিত্বে সুপিরিয়র সিলেকশন বোর্ডের (এসএসবি) সভা অনুষ্ঠিত হয়। এবারের পদোন্নতিতে বিসিএসের ২০তম ব্যাচের যুগ্মসচিব পদে পদোন্নতি না পাওয়া কর্মকর্তাদের বিবেচনায় নেওয়া হচ্ছে। বৈঠকে পদোন্নতি দেওয়ার জন্য প্রত্যেক কর্মকর্তার কর্মজীবনের সব নথিপত্র আলাদাভাবে পর্যালোচনা করা হয়। বিশেষ করে প্রয়োজনীয় নম্বর, চাকরিজীবনের শৃঙ্খলা, দুর্নীতির বিষয়সহ সামগ্রিক বিষয় পর্যালোচনা করা হচ্ছে। প্রয়োজনীয় সংখ্যক আরও বৈঠক করে এ মাসের শেষের দিকে পদোন্নতি দেওয়া হতে পারে। এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, ‘যুগ্মসচিব পদে পদোন্নতির কাজ চলছে। যথাযথ প্রক্রিয়া শেষে এ মাসের শেষের দিকে পদোন্নতির প্রজ্ঞাপন জারি হবে।’ সংশ্লিষ্ট সূত্র জানান, উপসচিব থেকে যুগ্মসচিব পদে পদোন্নতিতে নিয়মিত হিসেবে ২০তম ব্যাচের যুগ্মসচিব পদে পদোন্নতি না পাওয়া কর্মকর্তাদের বিবেচনা করা হচ্ছে। তবে এরই মধ্যে ২১তম ব্যাচের কর্মকর্তাদের অভ্যন্তরীণ গোপনীয় প্রতিবেদন সংগ্রহ করেছে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। নির্দেশনা অনুযায়ী যোগ্য কর্মকর্তাদের ব্যক্তিগত ও পারিবারিক বিভিন্ন তথ্য সংগ্রহ করে জেলা প্রশাসকরা ৯ মের মধ্যে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে পাঠান। তবে পদোন্নতির জন্য দুই ব্যাচকেই বিবেচনায় নেওয়া হচ্ছে কি না তা নিশ্চিত করতে পারেননি সংশ্লিষ্টরা। প্রশাসন ক্যাডারের পাশাপাশি অন্যান্য ক্যাডার থেকেও উল্লেখযোগ্য সংখ্যক কর্মকর্তাকে পদোন্নতি দেওয়া হবে। এ ছাড়া যোগ্যতা থাকা সত্ত্বেও আগে পদোন্নতিবঞ্চিত বিভিন্ন ব্যাচের কিছু কর্মকর্তাকে পদোন্নতির জন্য বিবেচনা করা হতে পারে। এবার যুগ্মসচিব পদে পদোন্নতির জন্য উপসচিব পদমর্যাদার ৩৮৯ জন যোগ্য কর্মকর্তা বিবেচনায় নেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে ২০তম ব্যাচের নিয়মিত ২৪ জন কর্মকর্তা রয়েছেন। একই ব্যাচের পদোন্নতিবঞ্চিত (লেফট আউট) ৫২, বিভিন্ন সময় পদোন্নতিবঞ্চিত ১৩৪ ও অন্যান্য ক্যাডারের ১৭৯ জন কর্মকর্তা বিবেচনায় রয়েছেন। এ পদে গত বছরের ২৯ অক্টোবর ২০তম ব্যাচের আংশিক পদোন্নতি দেওয়া হয়। অবশিষ্ট কর্মকর্তাদের পদোন্নতির জন্য তথ্য চেয়ে পাঠায় মন্ত্রণালয়ের এপিডি শাখা। জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের প্রশিক্ষণ, সিআর, শৃঙ্খলা ও পিএসিসি শাখায় চিঠি পাঠানো হয়। যুগ্মসচিবের পাশাপাশি উপসচিব পদে পদোন্নতির জন্য আগ্রহী বা যোগ্য বিভিন্ন ক্যাডারের ২৮তম ব্যাচ পর্যন্ত কর্মকর্তাদের তালিকা চেয়ে ক্যাডার নিয়ন্ত্রণকারী মন্ত্রণালয়গুলোকে চিঠি পাঠানো হয়েছে। উপসচিব পদে পদোন্নতির জন্য ২৮ ব্যাচের প্রশাসন ক্যাডারের ৩৬৩ জন কর্মকর্তাকে বিবেচনায় নেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে নিয়মিত ব্যাচের রয়েছেন ১৬৪ জন। ইকোনমিক ক্যাডারের বিবেচনায় নেওয়া হয়েছে ৪৫ জনকে। বিভিন্ন সময়ে পদোন্নতিবঞ্চিত (লেফট আউট) ১৫৪ জন রয়েছেন। এ ছাড়া চলতি বছর অবসরের কারণে সচিবের ১১ পদ ফাঁকা হচ্ছে। অতিরিক্ত সচিবদের পদোন্নতি দিয়ে ১১টি পদে নিয়োগ দেওয়া হতে পারে। শূন্য হতে যাওয়া এসব পদ পাওয়া নিয়ে চলছে হিসাব-নিকাশ। অবসরের সময় হওয়ায় কোনো কোনো সচিব চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ পাওয়ার চেষ্টা করছেন।

ডিআইজি হলেন ৩২ কর্মকর্তা : পুলিশের অতিরিক্ত উপ মহাপরিদর্শক (অ্যাডিশনাল ডিআইজি) পদমর্যদায় ৩২ কর্মকর্তা পদোন্নতি পেয়ে উপ মহাপরিদর্শক (ডিআইজি) হয়েছেন। গতকাল স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগ থেকে এ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়। সদ্য ডিআইজি পদে পদোন্নতি পাওয়া কর্মকর্তাদের তালিকায় প্রথম নামটি হচ্ছে র‌্যাব-৪ এর পরিচালক মোজাম্মেল হকের আর সর্বশেষ নামটি হচ্ছে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) যুগ্ম কমিশনার মোহাম্মদ হারুন অর রশীদের। এছাড়া আরও পদোন্নতি পেয়েছেন, পুলিশ সদর দফতরের অতিরিক্ত ডিআইজি রেজাউল হক, এন্টি টেরোরিজম ইউনিটের মো. মনিরুজ্জামান, ডিএমপির কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিটের প্রধান আসাদুজ্জামান, ডিএমপির গোয়েন্দা বিভাগের যুগ্ম কমিশনার মাহাবুব আলম, র‌্যাবের পরিচালক শেখ মোহাম্মদ রেজাউল হায়দার, র‌্যাব ১০ এর অধিনায়ক মাহফুজুর রহমান, রাজশাহী রেঞ্জের অতিরিক্ত ডিআইজি জয়দেব কুমার ভদ্র, রংপুর রেঞ্জের শাহ মিজান শফিউর রহমান, ডিএমপির সৈয়দ নুরুল ইসলাম, হারুন অর রশীদ, নৌ পুলিশের মোল্যা নজরুল ইসলামসহ মোট ৩২ জন। পুলিশ সদর দফতর ও সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, মন্ত্রিপরিষদ সচিবের সভাপতিত্বে মঙ্গলবার সুপিরিয়র সিলেকশন বোর্ডের (এসএসবি) এক সভা অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে গ্রেড-৩ পদমর্যাদার ডিআইজি পদে পুলিশের ৩২ কর্মকর্তাকে পদোন্নতি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এবারের পদোন্নতির জন্য ১৮ ও ২০তম ব্যাচের কর্মকর্তাদের বিবেচনা করা হয়েছে।

ডিআইজি পদে পদোন্নতির জন্য পুলিশ সদর দফতর থেকে প্রায় ১৫০ জনের একটি প্রাথমিক তালিকা পাঠানো হয়েছিল স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে। সেখানে মন্ত্রী ও সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের পর্যালোচনার পর একটি সংক্ষিপ্ত তালিকা করা হয়। ওই তালিকা পাঠানো হয় জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে।

জানা গেছে, ডিআইজি হিসেবে এক সঙ্গে এত বেশি সংখ্যক পদোন্নতি বাংলাদেশ পুলিশের ইতিহাসে এই প্রথম। ২০১৬ থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত প্রতি বছর ডিআইজি পদে পদোন্নতি হয়। এরপর গত প্রায় দেড় বছর এই পদে (ডিআইজি) কোনো পদোন্নতি হয়নি। সর্বশেষ পদোন্নতি হয় ২০২০ সালের ডিসেম্বরে।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর