জেলা-উপজেলার মতো পৌরসভায়ও এমপিদের উপদেষ্টা করার দাবির আগ্রহের পরিপ্রেক্ষিতে এ বিষয়ে ইতিবাচক সুপারিশ করেছিল সংসদীয় কমিটি। তবে মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে তা নাকচ করে দেওয়া হয়েছে। একই সঙ্গে ভূমি রেজিস্ট্রেশনের দায়িত্ব আইন মন্ত্রণালয় থেকে ভূমি মন্ত্রণালয়ে ন্যস্ত করার সংসদীয় কমিটির সুপারিশও নাকচ করে দিয়েছে আইন মন্ত্রণালয়। সংসদ ভবনে গতকাল অনুষ্ঠিত ‘জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটি’র বৈঠকের কার্যপত্র থেকে এসব তথ্য জানা যায়। কমিটির সুপারিশ বাস্তবায়নের অগ্রগতি প্রতিবেদনের জবাবে মন্ত্রণালয়ের অবস্থান পরিষ্কার করা হয়। আগের বৈঠক থেকে এই দুটি সুপারিশ করা হয়েছিল। বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন কমিটির সভাপতি এইচ এন আশিকুর রহমান। বৈঠকে কমিটির সদস্য আবুল হাসান মাহমুদ আলী, আ স ম ফিরোজ, হাফিজ আহমদ মজুমদার, র আ ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী ও পনির উদ্দিন আহমেদ অংশগ্রহণ করেন।

কার্যপত্র থেকে জানা যায়, আগের বৈঠকে কমিটির সদস্য আ স ম ফিরোজ সংসদ সদস্যদের পৌরসভার উপদেষ্টা করার দাবি উত্থাপন করে বলেছিলেন, জেলা/উপজেলা পরিষদে উপদেষ্টা হিসেবে সংসদ সদস্যদের ভূমিকা থাকলেও পৌরসভার ক্ষেত্রে তা নেই। তিনি এমপিদের উপদেষ্টা করার পরামর্শ দেন। তার সঙ্গে একমত পোষণ করেন পনির উদ্দিন আহমেদ। কমিটির সদস্য ও জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেনও একাত্মতা প্রকাশ করেছিলেন। তিনি বলেন, ভোটের মাধ্যমে পৌরসভায় জনপ্রতিনিধি নির্বাচিত হবেন। কাজেই তাদের জবাবদিহি থাকা উচিত। তিনি জেলা/উপজেলা পরিষদের মতো পৌরসভায়ও এমপিদের উপদেষ্টা রাখার বিষয়ে যথাযথ ভূমিকা নেওয়ার পরামর্শ দেন। পরে এ বিষয়টি বৈঠকের সুপারিশ হিসেবে গৃহীত হয়। তবে ওই সুপারিশের অগ্রগতির বিষয়ে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় থেকে বলা হয়, সম্প্রতি সংশোধিত ও স্থানীয় সরকার (পৌরসভা) আইন, ২০০৯-এ পৌরসভায় সংসদ সদস্যদের উপদেষ্টা করার কোনো সুযোগ নেই। এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট অংশীজনের সঙ্গে আলোচনা করে পরবর্তী কার্যক্রম গ্রহণ করা হবে। একইভাবে জমি রেজিস্ট্রেশনের বিষয়টি ভূমি মন্ত্রণালয়ের ওপর ন্যস্ত করার সুপারিশের জবাবে মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে বলা হয়, ভূমি রেজিস্ট্রেশন বিষয়টি আইন ও বিচার বিভাগ, আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অধীনে থাকবে।

সংসদের গণসংযোগ বিভাগ জানায়, বৈঠকে ভূমি রেজিস্ট্রেশনের ক্ষেত্রে আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের পাশাপাশি ভূমি মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধি অন্তর্ভুক্ত করার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের সুপারিশ করা হয়। একই সঙ্গে কমিটি বালুমহাল ও জলমহালের সীমানা এবং বালুমহাল থেকে বালু উত্তোলনের বিষয়ে ভূমি মন্ত্রণালয়, পানিসম্পদ মন্ত্রণালয় এবং পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের মধ্যে দ্রুত সমন্বিত নীতিমালা প্রণয়নের সুপারিশ করেছে। এ ছাড়া পরিবার পরিকল্পনা অধিদফতরাধীন কর্মচারীদের উন্নয়ন প্রকল্প থেকে রাজস্ব খাতে স্থানান্তরিত করায় তাদের চাকরিকালসহ পূর্ণ চাকরিকাল গণনা করে অবসরকালীন পেনশন ও আনুতোষিক সুবিধা প্রদানে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণের সুপারিশ করে কমিটি।

বৈঠকে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব, পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিবসহ সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।