মঙ্গলবার, ১৭ মে, ২০২২ ০০:০০ টা

দুই বছর মেয়াদি সরকারের প্রস্তাব জাফরুল্লাহর

নিজস্ব প্রতিবেদক

বিদ্যমান রাজনৈতিক সংকট সমাধানে দুই বছর মেয়াদি একটি জাতীয় সরকার গঠনের প্রস্তাব দিয়েছেন গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী। প্রস্তাবনায় জাতীয় সরকারের একটি রূপরেখাও তুলে ধরেছেন তিনি। এতে বলেছেন, সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমে সরকার পরিবর্তন নীতিতে আস্থা সৃষ্টি, সুশাসন নিশ্চিত করা এবং কয়েকটি ক্ষেত্রে সংবিধানের পরিবর্তনের জন্য প্রেসিডেন্টের অধ্যাদেশ ও গণভোটে একটি সর্বদলীয় জাতীয় সরকার হতে পারে। এই সরকারের সদস্যবৃন্দ, ন্যায়পাল ও বিভিন্ন কমিশনের চেয়ারম্যানগণ ২০২৮ সাল পর্যন্ত কোনো নির্বাচনে অংশ নেবেন না। তাদের সব আর্থিক তথ্য জনসম্মুখে প্রকাশ করা হবে।

জাতীয় সরকারের প্রস্তাবনায় ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী যাদের নাম প্রস্তাব করেন তারা হলেন- রাষ্ট্রপতি পদে অধ্যাপক রেহমান সোবহান অথবা ড. কামাল হোসেন। জনসংযোগ, স্বরাষ্ট্র ও জনপ্রশাসনের দায়িত্বসহ প্রধানমন্ত্রী পদে অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস। এ ছাড়াও দুর্নীতি দমনে ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) সাখাওয়াত হোসেন, মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস ও শহীদদের তালিকা প্রণয়নে প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্বে ইশতিয়াক আজিজ উলফাত, জবাবদিহিতামূলক গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার জন্য ড. বদিউল আলম মজুমদার এবং সাবেক সেনাপ্রধান জেনারেল (অব.) ইকবাল করিম ভূঁইয়া প্রতিরক্ষায়। আইন, সংসদ ও সংবিধান সংস্কারে ব্যারিস্টার মইনুল হোসেন সঙ্গে মানবাধিকার ও আইন কমিশনে অধ্যাপক আসিফ নজরুল, পররাষ্ট্র ও বৈদেশিক সম্পর্কিত আবুল হাসান চৌধুরী (কায়সার), প্রতিমন্ত্রী বিএনপির শামা ওবায়েদ, অর্থ ও দারিদ্র্য নিরসনে ড. বিনায়ক সেন, ব্যাংক ও মানি লন্ডারিং নিয়ন্ত্রণে ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড ও সিন্ডিকেট নিয়ন্ত্রণে এস এম আকরাম, সংখ্যালঘু ও আদিবাসীর দায়িত্বে অধ্যাপক সুকোমল বড়ুয়া, বৈদেশিক ও আন্তর্জাতিক বাণিজ্য সম্পর্কিত দায়িত্বে ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য। শিক্ষা ও মানব উন্নয়নে অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে অধ্যাপক কাজী কামরুজ্জামান, সঙ্গে ওষুধ প্রশাসনের প্রধানের দায়িত্বে বিএসএমএমইউ অধ্যাপক সাইদুর রহমান খসরু এবং মেডিকেল ও প্যারামেডিকেল শিক্ষার ব্যাপক প্রসারের দায়িত্বে গণবিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন ভিসি অধ্যাপক আবুল কাশেম চৌধুরী, শিল্প-বাণিজ্যের দায়িত্বে শেখ বসিরুদ্দিন আকিজ, তথ্য সম্প্রচার ও মিডিয়ার দায়িত্বে এ কে আজাদ, স্থানীয় শাসন ও প্রদেশ/স্টেট সৃষ্টি সংক্রান্ত মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে ড. তোফায়েল আহমেদ, নৌ-পথ, নৌবন্দর, আন্তর্জাতিক নদীর পানির অধিকার সংক্রান্ত মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে প্রকৌশলী ইনামুল হক, বিদ্যুৎ ও জ্বালানির দায়িত্বে প্রকৌশলী সামসুল আলম, নগর উন্নয়ন ও যোগাযোগে স্থপতি  মোবাশ্বের হোসেন। প্রবাসী অভিবাসীদের কল্যাণ এবং বৈদেশিক বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে সংযোগ স্থাপন ও শিক্ষক-ছাত্র সংযোগ স্থাপনে প্রবাসী শিক্ষাবিদ অধ্যাপক হাসনাত হোসেন, এমবিই। ধর্ম ও নৈতিকতায় অধ্যাপক পারভীন হাসান, সংস্কৃতি-যাত্রা ও মেলার প্রসারে নবনীতা চৌধুরী, পরিবেশ ও প্রাণিজসম্পদ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান, শ্রমিক কল্যাণ ও নিরাপদ সড়কের দায়িত্বে বাম সম্মিলিত জোট প্রতিনিধি মনজুরুল আহসান। নারী ও যুব উন্নয়নে বিএনপি প্রতিনিধি ব্যারিস্টার জাইমা রহমান, মানবাধিকার ও সমাজ কল্যাণে আওয়ামী লীগ প্রতিনিধি শেখ রেহানা এবং খাদ্য সরবরাহ ও রেশনিংয়ে মতিয়া চৌধুরী, সঙ্গে কৃষি ও কৃষক সমবায় প্রসারে ড. শওকত আলী।

প্রস্তাবনায় বলা হয়, পরবর্তী ছয় মাসের মধ্যে বিএনপি নেত্রী বেগম খালেদা জিয়াসহ সব রাজনৈতিক কর্মী ও আলেমদের জামিন নিশ্চিত করে এক বছরের মধ্যে তাদের বিচার শেষ করে রায় কার্যকর করা হবে। এ ছাড়া জাতীয় সরকারের প্রথম তিন মাসের মধ্যে- নতুন করে নির্বাচন কমিশন গঠন, নির্বাচনী আইনের কিছু ধারার সংস্কার, গণভোট এবং ‘না’ ভোটের প্রচলন, প্রশ্নবিদ্ধ সংসদকে ভোটারের স্বাক্ষরে প্রত্যাহার ব্যবস্থা, জনস্বার্থ সম্পর্কিত বিভাগে ন্যায়পাল নিয়োগ, প্রকাশ্যে ধূমপান নিষিদ্ধকরণ এবং ১৯৮২ সালের জাতীয় ওষুধ নীতি পুরোপুরি কার্যকর করে, ওষুধ, শৈল্য চিকিৎসা ও রোগ নিরীক্ষার দর সরকার স্থির করে দেওয়া হবে।

সর্বশেষ খবর