বুধবার, ১৮ মে, ২০২২ ০০:০০ টা
হাই কোর্টের মন্তব্য

অর্থ পাচারকারীরা কোনো দেশে গিয়েই শান্তি পাবে না

নিজস্ব প্রতিবেদক

অর্থ পাচারকারীরা পৃথিবীর কোনো দেশে গিয়েই শান্তি পাবে না বলে মন্তব্য করেছে হাই কোর্ট। আদালত বলেছে, অর্থ পাচারকারীদের কোনো ছাড় নেই। গতকাল বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি কাজী মো. ইজারুল হক আকন্দের সমন্বয়ে গঠিত হাই কোর্ট বেঞ্চ এমন মন্তব্য করে।

অর্থ পাচারকারীদের বিরুদ্ধে আদালতের অবস্থান কঠোর উল্লেখ করে হাই কোর্ট বলেছে, ‘আমরা আদেশ দিলে পৃথিবীর কোনো দেশে গিয়েই অর্থ পাচারকারীরা শান্তি পাবে না।’ আদালত বলে, ‘আমাদের আদেশের কারণেই আজ পি কে হালদার সারা বিশ্বের মানুষের কাছে অর্থ পাচারের অভিযোগে ভিন্নভাবে আলোচিত। এটা ভাবার সুযোগ নেই যে, অন্য দেশে গেলে আমরা তার বিরুদ্ধে আদেশ দিতে পারব না। শুধু অর্থ পাচারকারীর অবস্থানটা চিহ্নিত করে দিলেই আমরা তার বিরুদ্ধে আদেশ দিতে পারি। দেশের অর্থ পাচারকারীর বিষয়ে কোনো ছাড় নেই।’ পরে আদালত পি কে হালদারকে গ্রেফতার ও দেশে ফিরিয়ে আনা সংক্রান্ত জারি করা রুল শুনানির জন্য আগামী ১২ জুন দিন ঠিক করে দিয়েছে। একই সঙ্গে তার বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলার অগ্রগতির তথ্য জানাতে দুদককে নির্দেশ দিয়েছে আদালত। আদালতে দুদকের পক্ষে শুনানি করেন সিনিয়র আইনজীবী খুরশীদ আলম খান। আর রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন মানিক। গত শনিবার ভারতের পশ্চিমবঙ্গে পি কে হালদারকে গ্রেফতার করা হয়। বিষয়টি সোমবার আদালতের নজরে আনেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল। পরে আদালত গতকাল তালিকায় আসবে বলে জানিয়ে দেয়।

২০২০ সালের ১৮ নভেম্বর বাংলাদেশ প্রতিদিনে ‘পি কে হালদারকে ধরতে ইন্টারপোলের সহায়তা চাইবে দুদক’ শীর্ষক প্রকাশিত প্রতিবেদন নজরে নিয়ে রুল জারি করে আদেশ দেন বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদারের নেতৃত্বাধীন হাই কোর্ট বেঞ্চ। রুলে পি কে হালদারকে গ্রেফতার ও দেশে ফিরিয়ে আনতে বিবাদীদের নিষ্ক্রিয়তা কেন অবৈধ হবে না এবং এ ক্ষেত্রে দায়ী ব্যক্তি/প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা কেন গ্রহণ করা হবে না তা জানতে চেয়েছে হাই কোর্ট। সাড়ে ৩ হাজার কোটি টাকা পাচারের অভিযোগ নিয়ে বিদেশে পলাতক ছিলেন ইন্টারন্যাশনাল লিজিংয়ের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) পি কে হালদার। মামলার বিবরণে জানা যায়, রিলায়েন্স ফিন্যান্সের ব্যবস্থাপনা পরিচালক থাকা অবস্থায় আত্মীয়স্বজনকে দিয়ে ৩৯টি প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলেন পি কে হালদার। এসব প্রতিষ্ঠানের পরিচালক হিসেবে থাকা ৮৩ জনের ব্যাংক হিসাবের মাধ্যমে কৌশলে সাড়ে ৩ হাজার কোটি টাকা আত্মসাৎ করেন তিনি ও তার সহযোগীরা। এর মধ্যে ইন্টারন্যাশনাল লিজিং থেকেই ১৫০০ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। সবমিলিয়ে সাড়ে ৩ হাজার কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ রয়েছে।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর