সোমবার, ২৩ মে, ২০২২ ০০:০০ টা
হত্যা মামলার চার্জশিট বাতিল

পিবিআই কর্মকর্তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলার নির্দেশ হাই কোর্টের

নিজস্ব প্রতিবেদক

উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে অভিযোগপত্র দেওয়ায় রাজশাহীর পুঠিয়ার শ্রমিক নেতা নুরুল ইসলাম হত্যা মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) পরিদর্শক শামীম আক্তারের বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা করার নির্দেশ দিয়েছে হাই কোর্ট। একই সঙ্গে তার দেওয়া অভিযোগপত্র (চার্জশিট) বাতিল করে পুনরায় তদন্ত করতে পিবিআইকে নির্দেশ দিয়েছে আদালত।

গতকাল বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলাম ও বিচারপতি মো. সেলিমের সমন্বয়ে গঠিত হাই কোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেয়। আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল মিজানুর রহমান। ২০১৯ সালের ১ ডিসেম্বর রাজশাহীর পুঠিয়ার শ্রমিক নেতা নুরুল ইসলাম হত্যা মামলা পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনকে (পিবিআই) তদন্তের নির্দেশ দেয় হাই কোর্ট। মামলার যাবতীয় নথি পিবিআইর কাছে হস্তান্তর করতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এই তদন্তকালে আবেদনকারীর মূল এজাহার, রাজশাহীর চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের তদন্ত প্রতিবেদন ও সাক্ষীদের সাক্ষ্য বিবেচনা করতে বলা হয়েছে। এই তদন্ত কার্যক্রম তদারকি করতে পিবিআই প্রধান ডিআইজি বনজ কুমার মজুমদারকে নির্দেশ দেয় হাই কোর্ট। পরে পিবিআইয়ের পরিদর্শক শামীম আক্তার মামলার তদন্তের দায়িত্ব পান। কিন্তু তার দেওয়া অভিযোগপত্রে সন্তুষ্ট হতে পারেনি আদালত।

পুঠিয়া সড়ক পরিবহন মোটর শ্রমিক ইউনিয়ন নির্বাচন নিয়ে বিরোধের জের ধরে খুন হন শ্রমিক নেতা নুরুল ইসলাম। ২০১৯ সালের ১১ জুন সকালে পুঠিয়ার কাঁঠালবাড়িয়া এলাকার ‘এসএস ব্রিক ফিল্ড’ নামক ইটভাটা থেকে নুরুল ইসলামের লাশ উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় নিহতের মেয়ে নিগার সুলতানা থানায় এজাহার দাখিল করেন। কিন্তু তার এজাহার গ্রহণ না করে তার কাছ থেকে সাদা কাগজে স্বাক্ষর নেওয়া হয়। এরপর কয়েক দিন থানা থেকে কোনো তৎপরতা না দেখে নিহতের স্ত্রী সাজেদা বেগম পুঠিয়া উপজেলা ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে নালিশি মামলা করেন। এ মামলায় শুনানিকালে পুঠিয়া থানা থেকে নিগার সুলতানার স্বাক্ষর করা একটি এজাহার হাজির করে থানা পুলিশ। তাতে অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের আসামি দেখানো হয়। ওই এজাহারে সন্দেহজনক হিসেবে পাঁচজনের নাম বলা হয়।

এই এজাহারের বিষয়ে তখনই নিগার সুলতানা ও তার মা সাজেদা বেগম আপত্তি জানিয়ে বলেন, এই এজাহার তাদের নয়। পরবর্তী সময়ে নিহত নুরুল ইসলামের পরিবারের পক্ষ থেকে ২০১৯ সালের ১৮ জুলাই আইজি, রাজশাহী রেঞ্জের পুলিশের ডিআইজি ও রাজশাহীর এসপির কাছে এজাহার বদলে ফেলার অভিযোগ দাখিল করে। কিন্তু পুলিশ প্রশাসন ব্যবস্থা নেয়নি। এ অবস্থায় হাই কোর্টে রিট আবেদন করা হয়। এ রিট আবেদনে হাই কোর্ট রুল জারি করে এবং বিচার বিভাগীয় তদন্তের নির্দেশ দেয়। হাই কোর্টের নির্দেশে অভিযোগ তদন্ত করে ওসি সাকিলসহ পাঁচ পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে প্রতিবেদন দাখিল করেন রাজশাহীর মুখ্য মহানগর হাকিম মো. মেহেদী হাসান তালুকদার। প্রতিবেদনটি ওই বছরের ৬ নভেম্বর হাই কোর্টে পাঠানো হয়। পরে হাই কোর্ট শ্রমিক নেতা নুরুল ইসলাম হত্যা মামলার তদন্ত পিবিআইকে তদন্তের নির্দেশ দেয়।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর