প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তাঁর পরিবারের কোনো সদস্যের নাম ব্যবহার করে কোনো অনুরোধ/তদবির বা অবৈধ সুবিধা ভোগের চেষ্টা করলে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির বিরুদ্ধে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে সব জেলা প্রশাসককে (ডিসি) চিঠি দিয়েছে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ। ডিসিদের পাশাপাশি চিঠির অনুলিপি ইতোমধ্যে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়সহ সব বিভাগীয় কমিশনারকেও দেওয়া হয়েছে।
গত রবিবার ডিসিদের কাছে পাঠানো চিঠিতে বলা হয়- ‘মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ও বঙ্গবন্ধু পরিবারের কোনো সদস্য কোনো প্রকার ব্যবসা বা অনুরূপ কোনো তদবিরের সঙ্গে সম্পৃক্ত নয়। কেউ প্রধানমন্ত্রী এবং বঙ্গবন্ধু পরিবারের কোনো সদস্যের নাম ব্যবহার করে এ ধরনের কোনো অনুরোধ/তদবির বা অবৈধ সুবিধা ভোগের প্রচেষ্টা দৃষ্টিগোচর হলে প্রতারকের সম্পর্কে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের তথ্য প্রদান করে তাদের বিরুদ্ধে কঠোরভাবে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের অনুরোধ করা হলো।’
এর আগে ১২ মে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, তাঁর বোন শেখ রেহানা এবং তাঁদের পরিবারের সদস্যদের নাম ব্যবহার করে তদবির, অবৈধভাবে সরকারি কাজ ও সুবিধা পাওয়ার চেষ্টাকারীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে সব সচিবকে নির্দেশ দিয়েছিল প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়। এমন নির্দেশ পাওয়ার পর সব মন্ত্রণালয় ও বিভাগগুলো তাদের অধীন দফতরগুলোকে এ বিষয়ে সতর্ক করে চিঠি দিয়েছিল। তারও আগে গত ২১ এপ্রিল প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে মন্ত্রিপরিষদ সচিবসহ সব মন্ত্রণালয়ের সচিবদের চিঠি দিয়ে এ বিষয়ে সতর্ক করা হয়। ওই চিঠিতে বলা হয়, সম্প্রতি দেখা যাচ্ছে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, তাঁর বোন শেখ রেহানা এবং তাঁদের সন্তানদের নাম ব্যবহার করে অবৈধভাবে সরকারি কাজ এবং অনুরূপ সুবিধা পাওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী ও তাঁর পরিবারের সদস্যদের নাম অনৈতিকভাবে ব্যবহার করে অনেকে অবৈধ অর্থ লেনদেনের সঙ্গে যুক্ত হচ্ছেন। সবাইকে জানানো যাচ্ছে, প্রধানমন্ত্রী ও বঙ্গবন্ধু পরিবারের কোনো সদস্য কোনো প্রকার ব্যবসা বা অনুরূপ কোনো তদবিরের সঙ্গে সম্পৃক্ত নন। প্রধানমন্ত্রী ও বঙ্গবন্ধু পরিবারের কোনো সদস্যের নাম ব্যবহার করে এ ধরনের প্রতারণার চেষ্টা করা হলে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। এ ধরনের কোনো অনুরোধ বা তদবির বা অবৈধ সুবিধা ভোগের চেষ্টা চোখে পড়লে প্রতারকদের বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর একান্ত সচিব-১ মোহাম্মদ সালাহ উদ্দিন ও একান্ত সচিব-২ মনিরা বেগম এবং সহকারী একান্ত সচিব-১ ইসমাত মাহমুদের কাছে তথ্য দিতে বলা হয় ওই চিঠিতে। এর আগে বিভিন্ন সময়ে জাতীয় সংসদসহ একাধিক রাষ্ট্রীয় অনুষ্ঠানে নিজ পরিবারের সদস্যদের নাম জানিয়ে দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ২০১৯ সালের ১ অক্টোবর রাতে এক গুরুত্বপূর্ণ অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী বলেছিলেন, ‘তিনি, তাঁর ছোট বোন শেখ রেহানা, তাঁর ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়, তাঁর মেয়ে সায়মা ওয়াজেদ পুতুল, শেখ রেহানার ছেলে রাদওয়ান মুজিব ববি, শেখ রেহানার দুই মেয়ে টিউলিপ সিদ্দিক এবং রুপন্তী সিদ্দিক ছাড়া তাঁর পরিবারের আর কোনো সদস্য নেই। এ ছাড়া আর কেউ তাঁর পরিবারের সদস্য হিসেবে বিবেচিত হবে না।’
