বৃহস্পতিবার, ২৬ মে, ২০২২ ০০:০০ টা

ঢাবিতে সংঘর্ষে আসামি তিন শতাধিক

বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে ছাত্রলীগ ও ছাত্রদলের সংঘর্ষের ঘটনায় অজ্ঞাত পরিচয় ৩০০-৪০০ জনকে আসামি করে মামলা করেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। এতে বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাভাবিক পরিবেশে বিঘ্ন ঘটানো, জাতীয় সম্পদ বিনষ্ট ও পার্শ্ববর্তী প্রতিষ্ঠানে হামলাসহ বেশকিছু অভিযোগ আনা হয়েছে।

এদিকে সংঘর্ষের ঘটনায় উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামানের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের বিএনপি-জামায়াতপন্থি শিক্ষকদের সংগঠন সাদা দলের নেতারা। ঘটনার দ্বিতীয় দিনও ক্যাম্পাসে অবস্থান নিয়ে মহড়া দিয়েছেন ছাত্রলীগ নেতা-কর্মীরা। আর ছাত্রদলের আহত অন্তত ৪০ জন নেতা-কর্মী বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন বলে জানা গেছে।

৩০০-৪০০ জনের বিরুদ্ধে মামলা : মামলার বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. এ কে এম গোলাম রাব্বানী বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ে যেসব অপরাধ সংঘটিত হয়েছে আমরা তার পরিপ্রেক্ষিতে অভিযোগ দাখিল করেছি। বিশ্ববিদ্যালয়ের একটা গুরুত্বপূর্ণ নির্বাচনের দিন যারা এখানে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করেছে আমরা তাদের আইনের আওতায় নিয়ে আসব। সংঘর্ষে যারা জড়িত ছিল তাদের ভিডিও ফুটেজ দেখে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী শনাক্ত করে আমাদের কাছে প্রতিবেদন জমা দেবে। হামলাকারীদের মধ্যে যারা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী তাদের বিরুদ্ধে আমরা একাডেমিক ব্যবস্থা গ্রহণ করব।’ গতকাল ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আতাউল্লাহ মামলার এজাহার গ্রহণ করে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের জন্য ৩০ জুন দিন ধার্য করেন। এর আগে মঙ্গলবার শাহবাগ থানায় মামলা করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী এস্টেট ম্যানেজার মো. আলী আশ্রাফ। এজাহারে বলা হয়, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সিনেটের ৩৫ জন শিক্ষক প্রতিনিধি নির্বাচন হচ্ছিল। এ সময় একদল দুষ্কৃতকারী লাঠি, রড ও নানা ধরনের দেশি অস্ত্র নিয়ে ঢাকা মেডিকেলের বহির্বিভাগের সামনে একজোট হয়ে নির্বাচন বানচাল ও বিশ্ববিদ্যালয়ের চলমান শিক্ষার স্বাভাবিক পরিবেশ বিঘ্নিত করতে অপতৎপরতা শুরু করে। বিষয়টি আইন প্রয়োগকারী সংস্থাকে জানালে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সেখান থেকে তাদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়। মামলার এজাহারে আরও বলা হয়, ২৪ মে বেলা সাড়ে ১১টার দিকে পুনরায় শিক্ষা ভবনের সামনে থেকে ৩০০-৪০০ দুষ্কৃতকারী কার্জন হলের গেট দিয়ে জোরপূর্বক প্রবেশের চেষ্টা করে। এ সময় গেটের নিরাপত্তা প্রহরী কামাল হোসেন তাদের বাধা দেওয়ার চেষ্টা করলে তার মাথায় লাঠি ও রড দিয়ে আঘাত করতে গেলে তিনি হাত দিয়ে তা ঠেকানোর চেষ্টা করেন। এতে তার হাত জখম হয়। এ ছাড়া শিক্ষার্থীদের আনা-নেওয়ার কাজ ও নিয়মিত সেবা প্রদান করা দুটি বিআরটিসি বাস ভাঙচুর করে জাতীয় সম্পদের বিনষ্ট করা হয়।

চিকিৎসা নিচ্ছেন ছাত্রদলের আহতরা : ছাত্রদল সূত্রে জানা গেছে, তাদের কেন্দ্রীয় ও বিশ্ববিদ্যালয় শাখার অন্তত ৪০ জন বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন। প্রথমে তারা ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি থাকলেও পরে নিরাপত্তার শঙ্কায় অন্য হাসপাতালে ভর্তি হন।

উপাচার্যের সঙ্গে সাদা দলের সাক্ষাৎ : এদিকে সংঘর্ষের ঘটনায় উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামানের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের বিএনপি-জামায়াতপন্থি শিক্ষকদের সংগঠন সাদা দলের নেতারা। এ বিষয়ে সাদা দলের আহ্বায়ক অধ্যাপক লুৎফর রহমান বলেন, ‘আমরা উপাচার্যের কাছে ঘটনাটি বর্ণনা করেছি, নিন্দা জানিয়েছি। এ ঘটনাটি অত্যন্ত অনাকাক্সিক্ষত। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে যাতে সব ক্রিয়াশীল ছাত্র সংগঠন সহাবস্থান করতে পারে, তা নিশ্চিতের দায়িত্ব উপাচার্যের। গতকালের (মঙ্গলবার) ঘটনায় দোষীদের শনাক্ত করে ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছি। শিক্ষার পরিবেশ যাতে বজায় থাকে সে কথা বলেছি। এ ছাড়া গতকাল প্রক্টরের কার্যক্রম আমরা লক্ষ্য করেছি। সে বিষয়েও তাঁকে অবহিত করেছি। তবে উপাচার্যের সাড়ায় আমরা সন্তুষ্ট হতে পারিনি।’ মামলার বিষয়ে তার দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে তিনি বলেন, ‘এটি হয়রানির জন্য করা হয়েছে। আমরা এরও নিন্দা জানাই।’

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর