সোমবার, ৬ জুন, ২০২২ ০০:০০ টা

ভেঙে গেল কয়েক কিমি এলাকার জানালার কাচ

নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম

বিএম কনটেইনার ডিপোর পাশ্র্ববর্তী এলাকা কেশবপুর। এখানকার বাসিন্দা সাকিব। শনিবার যথারীতি রাতের খাবার খাচ্ছিলেন। এমন সময় আকাশচুম্বী বিকট আওয়াজ। আওয়াজ শুনে ঘর থেকে বের হলেন। বের হয়েই দেখলেন আগুনের স্ফুলিঙ্গ। আগুনের লেলিহান শিখা আকাশ ছোঁয়ার অপেক্ষা। সেই লেলিহান শিখার ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র কণা এসে পড়ল সাকিবের হাত-মুখে। এরপর থেকে তিনি আর কিছুই  জানেন না। হতবিহ্বল বিমর্ষ অবস্থায় পড়ে যান। পরে তিনি নিজেকে দেখেন চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে। আগুন তার শরীরে দৃশ্যমান কোনো ক্ষতি না করলেও ধোঁয়া এবং বিকট আওয়াজে মানসিক ভারসাম্য হারান তিনি। এ ছাড়া কয়েক কিলোমিটার এলাকায় ভেঙে গেছে বাড়িঘরের কাচের দরজা জানালা। নষ্ট হয়ে গেছে টিভি ফ্রিজসহ বৈদ্যুতিক সামগ্রী। 

চমেক হাসপাতালের সেবা তত্ত্বাবধায়ক মোছা. ইনসাফি হান্না বলেন, ওই যুবকের কপাল, হাত ও বাহুতে আগুনের শিখায় একটু ক্ষত হয়। সেখানে ব্যান্ডেজ করা হয়। তিনি অনেক বেশি আতঙ্কিত হয়েছেন। যার ফলে মানসিক ভারসাম্য হারান। তবে এখন অবস্থার অনেক উন্নতি হয়েছে। কথা বলতে পারছেন।  জানা যায়, শনিবার রাত ১১টায় চট্টগ্রামের সীতাকুন্ড উপজেলার ভাটিয়ারীতে বিএম কনটেইনার ডিপোয় ভয়াবহ বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় আহত হয়ে অনেকেই চমেক হাসপাতালের বিভিন্ন ওয়ার্ডে চিকিৎসা গ্রহণ করেন। গতকাল ভোর থেকে বিকাল ৩টা পর্যন্ত হাসপাতালের বার্ন ইউনিট, সার্জারি বিভাগ, চক্ষু বিভাগ ও অর্থোপেডিক্স বিভাগে ঘুরে দেখা যায় বিস্ফোরণে দগ্ধ হওয়াদের আহাজারি। এসব বিভাগে চলছে আহতদের চিকিৎসাসেবা। দুর্ঘটনায় বার্ন ইউনিটে ভর্তি হওয়া রোগীদের ২০ থেকে ২৫ শতাংশ পর্যন্ত পুড়ে গেলেও তাদের শরীরের ভিতরে ধোঁয়ার কারণে সমস্যা সৃষ্টি হয়েছে। গতকাল বিকাল পর্যন্ত হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে ভর্তি ছিলেন নয়জন, বার্ন ইউনিটের অধীনে গাইনি ওয়ার্ডে ভর্তি ছিলেন ৩৩ জন, সার্জারি বিভাগে ২৫ জন, অর্থোপেডিক্স বিভাগে আটজন, চক্ষু বিভাগে ১২ জন এবং অপারেশন থিয়েটারে আছেন চারজন। তাছাড়া উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় নেওয়া হয়েছে  ছয়জনকে। জেনারেল হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয় দুজনকে।

সর্বশেষ খবর