বুধবার, ৮ জুন, ২০২২ ০০:০০ টা

জনসভার মঞ্চ হবে পদ্মা সেতুর আদলে

রফিকুল ইসলাম রনি

পদ্মা সেতুর সাতটি পিলার। নিচে প্রবল স্রোত। পিলারের নিচ দিয়ে বয়ে চলছে পালতোলা নৌকা। অধিকাংশ নৌকায় আওয়ামী লীগের দলীয় পতাকা। আবার মাছ ধরার ট্রলারও যাওয়া-আসা করছে। দেখতে ঠিক যেন পদ্মা সেতুই। কিন্তু এটি পদ্মা সেতু নয়, পদ্মা সেতুর আদলে তৈরি মঞ্চ। এই মঞ্চেই করা হবে পদ্মা সেতুর উদ্বোধনী জনসভা। গতকাল পদ্মা সেতুর উদ্বোধনী মঞ্চের ডিজাইন অনুমোদন করেছেন      আওয়ামী লীগ সভানেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। জানা গেছে, ২৫ জুন সকাল ১০টায় মুন্সীগঞ্জ প্রান্তে পদ্মা সেতু উদ্বোধনের পর সেতু পেরিয়ে জাজিরা প্রান্তে যাবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এ প্রান্তের টোল প্লাজার সামনে উদ্বোধনী ফলক উন্মোচনের পর তিনি যোগ দেবেন জনসভায়। মাদারীপুরের শিবচরের কাঁঠালবাড়ীতে উদ্বোধনী জনসভার মঞ্চটি হবে পদ্মা সেতুর আদলে। পদ্মা সেতুর উদ্বোধনী জনসভা সফল করতে আওয়ামী লীগের নেতারা ইতোমধ্যে তৎপরতা শুরু করেছেন। এর অংশ হিসেবে জনসভার জন্য নির্ধারিত স্থান একাধিকবার পরিদর্শন করেছেন দলটির নেতারা। জনসভায় দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ২১ জেলার ১০ লাখ মানুষের সমাগম ঘটানোর আশা করছেন তারা।

পদ্মা সেতুর জনসভা সফল করতে কেন্দ্রীয় সমন্বয় কমিটির আহ্বায়ক ও ঢাকা বিভাগ আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, ‘পদ্মা সেতুর আদলে জনসভার মঞ্চ নির্মাণ করা হবে। আওয়ামী লীগ সভানেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গতকাল বিকালে মূল  মঞ্চের ডিজাইন অনুমোদন করেছেন।’ তিনি বলেন, আমরা ৫০০ জনের ধারণ ক্ষমতাসম্পন্ন মূল মঞ্চ তৈরি করব। সেখানে ৮১ জন বসতে পারেন, কিংবা দক্ষিণাঞ্চলের সব এমপি বসলে সংখ্যা দাঁড়াবে ১৮১ জনে। জেলার শীর্ষ নেতাদের বসানো হলে ৩০১ জনও হতে পারে। সবকিছু সময়ের ওপর নির্ভর করছে। মঞ্চে কতজন থাকবেন এটা এখনো নিশ্চিত করে বলা যাচ্ছে না।  দলীয় সূত্রমতে, প্রথমে নৌকার আদলে জনসভার মঞ্চ করার পরিকল্পনা ছিল। কিন্তু আওয়ামী লীগ সভানেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পদ্মা সেতুর আদলে মঞ্চ তৈরির নির্দেশনা দিয়েছেন। ফলে শুধু পদ্মা সেতু উদ্বোধনই নয়, মঞ্চেও চমক থাকবে পদ্মার। মঞ্চের সামনে থেকে দেখে মনে হবে অবিকল পদ্মা সেতুর ওপর মূল জনসভা করা হচ্ছে। পদ্মা সেতু যে বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার সাহসের প্রতীক, অহংকারের প্রতীক তা প্রমাণ করতেই এ উদ্যোগ বলে মনে করছেন আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতারা। আর মাত্র ১৬ দিন বাকি। এরপর কাক্সিক্ষত সেই দিন। স্বপ্নের পদ্মা সেতুর উদ্বোধন। ওই দিন চালু হতে যাচ্ছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাহসী উদ্যোগের ফসল স্বপ্নের পদ্মা সেতু। এদিন মূল আয়োজন থাকবে পদ্মার দুই পাড়েই। মাদারীপুরের কাঁঠালবাড়ীতে ১০ লক্ষাধিক লোকের ঐতিহাসিক জনসভা করবে দলটি। জনসভার পর ফানুস ওড়ানো থেকে শুরু করে জমকালো সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হবে। সেতুর পাশাপাশি সাজানো হবে দুই পাড়ের পুরো এলাকা। এদিন নদীতেও থাকবে সুসজ্জিত নৌকা। ক্ষমতাসীনদের প্রত্যাশা, শুধু পদ্মা সেতুর দুই পাড়ের মানুষই নয়, উদ্বোধনের দিন সারা দেশের মানুষ এই উৎসবে অংশ নেবে। কেউ সমাবেশস্থলে এসে, আবার কেউ টেলিভিশনের মাধ্যমে। আবার কেউ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে উৎসবে মেতে উঠবে। পাশাপাশি দেশের প্রতিটি জেলা-উপজেলা, ইউনিয়ন পর্যায় পর্যন্ত আনন্দ মিছিল, শোভাযাত্রা, আতশবাজিসহ বিভিন্ন অনুষ্ঠানের মাধ্যমে আনন্দ উৎসব করা হবে। আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনগুলোও সারা দেশে নানা কর্মসূচির আয়োজন করবে। আওয়ামী লীগ সূত্র জানায়, পদ্মা সেতু উদ্বোধনী জনসভায় শোডাউনের মধ্য দিয়ে দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচনের মহড়া দেবে আওয়ামী লীগ। জনসভা জনসমুদ্রে পরিণত করার মাধ্যমে সাংগঠনিক শক্তি প্রদর্শন দেখানো হবে। মূলত এ সভার মধ্য দিয়ে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আনুষ্ঠানিক প্রচার-প্রচারণা শুরু করবে ক্ষমতাসীনরা।

সর্বশেষ খবর