সোমবার, ১৩ জুন, ২০২২ ০০:০০ টা

ত্রিমুখী লড়াইয়ের আভাস কুমিল্লায়

কুমিল্লা প্রতিনিধি

নির্বাচনের বাকি আর মাত্র দুই দিন। প্রচারণার পর্দা নামবে আজ সন্ধ্যায়। কুমিল্লা সিটি করপোরেশন নির্বাচনের শেষ সময়ের প্রচারণায় ব্যস্ত প্রার্থীরা। জারি, সারি, ভাটিয়ালি আর ফোক গানের সুরে উৎসবের নগরী কুমিল্লা। আজ সকাল থেকে নগরীর ২৭টি কেন্দ্রে একসঙ্গে ইভিএমে ভোটদান সম্পর্কে ভোটারদের ধারণা দিতে মক ভোটিং অনুষ্ঠিত হবে। এর আগে প্রার্থী, প্রিসাইডিং অফিসার ও পোলিং এজেন্টদের ইভিএম নিয়ে পরিষ্কার ধারণা দেওয়া হয়। ১৫ জুন সকাল ৮টা থেকে নগরীর ২৭টি ওয়ার্ডের ১০৫টি কেন্দ্রে শুরু হবে ভোট গ্রহণ। সিটি নির্বাচনে ভোটার ২ লাখ ২৯ হাজার ৯২০ জন। ১৩ জুন বিকাল থেকে পরবর্তী ৪৮ ঘণ্টা পর্যন্ত কেন্দ্রে থাকবে সিসি ক্যামেরা। আসন্ন সিটি নির্বাচনে আওয়ামী লীগ প্রার্থী নৌকা প্রতীকের আরফানুল হক রিফাত, স্বতন্ত্র প্রার্থী টেবিল ঘড়ি প্রতীকের মনিরুল হক সাক্কু ও স্বতন্ত্র প্রার্থী ঘোড়া প্রতীকের নিজাম উদ্দিন কায়সারের মধ্যে ত্রিমুখী লড়াইয়ের সম্ভাবনা রয়েছে।

সূত্রমতে, নির্বাচনের প্রচারণায় যে ধরনের সহিংসতার শঙ্কা করেছিল নগরীর মানুষ, এবার দু-একটি ঘটনা ছাড়া নির্বাচন ঘিরে এখনো পর্যন্ত বড় কোনো সহিংসতার ঘটনা ঘটেনি। তবে নির্বাচন ঘিরে প্রধান তিন মেয়র প্রার্থীর মধ্যে বেশ বাহাস হয়েছে। তিন প্রার্থীর বাহাস উপভোগ করেছেন কুমিল্লার মানুষ। সেই সঙ্গে নির্বাচন কেন্দ্রে যাওয়া নিয়ে শঙ্কাও আছে সাধারণ মানুষের মনে। নির্বাচন ঘিরে সাধারণ মানুষের ভীতি দূর করা যায়নি। নির্বাচনী আচরণবিধিও অনেক প্রার্থী মেনে চলেননি। বিশেষ করে প্রতীক লাগানো টি-শার্ট, ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে নির্বাচনী প্রচারণা চোখে পড়েছে।

নির্বাচনী প্রচারণায় নৌকার প্রার্থী আরফানুল হক রিফাত সাবেক মেয়রকে চোর ও দুর্নীতিবাজ বলে আখ্যায়িত করেছেন। মন্ডপকান্ডে সাক্কুর সংশ্লিষ্টতা রয়েছে বলে পথসভাগুলোতে অভিযোগ তোলেন তিনি। সেই সঙ্গে জয়ী হলে কুমিল্লা টাউন হল প্রাঙ্গণে সাক্কুর দুর্নীতির শ্বেতপত্র তুলে ধরবেন বলে জনগণের কাছে অঙ্গীকার করেন। তবে আচরণবিধি লঙ্ঘন করায় বৃহস্পতিবার কুমিল্লা-৬ আসনের সংসদ সদস্যকে এলাকা ছাড়ার নির্দেশ দেয় নির্বাচন কমিশন। কিন্তু হাই কোর্টে রিটের শুনানি শেষ হয়নি জানিয়ে এলাকায় থেকে যান তিনি। এ নিয়ে নানা প্রশ্ন ওঠে।

অন্যদিকে স্বতন্ত্র প্রার্থী, সাবেক মেয়র ও সাবেক বিএনপি নেতা মনিরুল হক সাক্কু তার প্রচারণাকালে নৌকার প্রার্থীর আনীত অভিযোগ মিথ্যা বলে আখ্যায়িত করেন। শক্তিমত্তা পরীক্ষার জন্য নৌকার প্রার্থীকে স্টেডিয়ামে ডাকেন তিনি। সর্বশেষ গতকাল নির্বাচনী ইশতেহার ঘোষণাকালে সংশয় প্রকাশ করে এ প্রার্থী বলেন, ‘এখনো পর্যন্ত নির্বাচনের প্লেয়িং ফিল্ড সন্তোষজনক। আমাদের কাছে তথ্য রয়েছে নির্বাচনের দিন সিটি করপোশেনের চারদিকের লোকজনকে নগরীতে জড়ো করবেন নৌকার প্রার্থী। এ নিয়ে ভোটারদের মধ্যে ভয় তৈরি হতে পারে।’ প্রচারণাকালে বিভিন্ন সময় রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে চারটি লিখিত অভিযোগ দেন সাক্কু।

রিফাত ও সাক্কুকে একই ব্যক্তির প্রার্থী বলে সমালোচনা করেন স্বতন্ত্র প্রার্থী স্বেচ্ছাসেবক দলের সাবেক নেতা নিজাম উদ্দিন কায়সার। তিনি এ দুজন নির্বাচিত হলে কুমিল্লার মানুষের ভাগ্যের উন্নয়ন হবে না বলে বিভিন্ন সময় উঠান বৈঠক ও পথসভায় বলেন। এ ছাড়া ওই দুই প্রার্থীকেই আওয়ামী লীগের প্রার্থী বলেন তিনি। ইসির সামনে ২০১৮ সালের রাতের ভোট নিয়ে মন্তব্য করে আলোচনায় আসেন এই তরুণ প্রার্থী। এ ছাড়া তার দেওয়া ইশতেহার কুমিল্লা নগরীর দোদুল্যমান ভোটারদের মধ্যে সাড়া ফেলে। প্রসঙ্গত, কুমিল্লা সিটি নির্বাচনে পাঁচজন মেয়র প্রার্থী, ১০৮ জন কাউন্সিলর প্রার্থী ও ৩৮ জন সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলর প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। হাতপাখা পদের মেয়র প্রার্থী রাশেদুুল ইসলাম, স্বতন্ত্র প্রার্থী নিজাম উদ্দিন কায়সার ও মনিরুল হক সাক্কু তাদের নির্বাচনী ইশতেহার ঘোষণা করেছেন। নৌকা প্রতীকের প্রার্থী আরফানুল হক রিফাত ইশতেহার ঘোষণা করবেন না বলে জানান। আরেক স্বতন্ত্র প্রার্থী কামরুল আহসান বাবুলের ইশতেহারের বিষয়ে জানা যায়নি। নির্বাচনে আইনশৃঙ্খলার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ৬ হাজার কর্মী মাঠে থাকবেন।

সাক্কুর ১৬ দফা উন্নয়নের ইশতেহার : ১৬টি দফায় অতীত আমল ও আগামীর উন্নয়নের কথা তুলে ধরে ইশতেহার ঘোষণা করেছেন কুমিল্লা সিটি করপোরেশন নির্বাচনের স্বতন্ত্র মেয়র প্রার্থী ও সাবেক মেয়র মনিরুল হক সাক্কু। গতকাল নগরীর নানুয়া দীঘির পাড়ের ব্যক্তিগত কার্যালয়ে টেবিল ঘড়ি প্রতীকের এ প্রার্থী তার নির্বাচনী ইশতেহার তুলে ধরেন। তার ইশতেহারে অবকাঠামো, সড়কবাতি, শিক্ষা ও সংস্কৃতি, ধর্মীয় সম্প্রীতি, বিনোদন, স্বাস্থ্য ও করোনাকালীন সেবা, তথ্যপ্রযুক্তি, বিশুদ্ধ পানি সরবরাহ, বর্জ্য ব্যবস্থাপনা, বাজার, শপিং মল, ক্রীড়া ও খেলার মাঠ, বস্তিবাসী ও পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীর উন্নয়ন, ত্রাণ সহায়তা, নিরাপত্তা বিধান, মাদক, সন্ত্রাস ও ইভ টিজিংমুক্ত করা, জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তানদের সম্মান প্রদান, পাঠাগার স্থাপন ও গৃহকর নির্ণয়ের বিষয়টি উঠে এসেছে।

এ সময় উল্লিখিত বিষয়সমূহে তার বিগত দিনের অসম্পূর্ণ উন্নয়ন ও আগামী দিনে এর পরিপূর্ণ রূপদানের কথা তুলে ধরেন সাবেক এই বিএনপি নেতা।

তিনি বলেন, ‘আমি নতুন একটি সিটি হাতে পেয়েছিলাম। যার কিছুই ছিল না। গত দুই মেয়াদে আমি যতটুকু পেরেছি উন্নয়ন করেছি। আমার হাতে সিটির সমস্যার ৭০ শতাংশ সম্পন্ন হয়েছে। তাই আগামীতে বিজয়ী হতে পারলে বাকি কাজগুলো সম্পন্ন করব।’

 

মাধ্যমিকের গন্ডি পেরোতে পারেননি প্রার্থীদের ২৭ ভাগ : কুমিল্লা সিটি নির্বাচনের প্রার্থীদের ২৭ ভাগের শিক্ষাগত যোগ্যতা এসএসসির নিচে। ১৬ ভাগ এসএসসি, ২১ ভাগ এইচএসসি, ২৪ ভাগ স্নাতক ও ১০ স্নাতকোত্তর ।

কুমিল্লা সিটি করপোরেশন নির্বাচনে প্রার্থীদের তথ্য উপস্থাপন এবং অবাধ, নিরপেক্ষ ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচনের আহ্বানে সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানায় সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) কুমিল্লা মহানগর ও জেলা শাখা।

গতকাল কুমিল্লা টাউন হল কনফারেন্স রুমে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে সভাপতিত্ব করেন সুজন জেলা কমিটির সভাপতি শাহ মো. আলমগীর খান।

জেলা কমিটির যুগ্ম সম্পাদক রেজবাউল হক রানার সঞ্চালনায় সংবাদ সম্মেলনে স্বাগত বক্তব্য রাখেন সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক আলী আহসান টিটু। লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন মহানগর কমিটির সভাপতি আনিসুর রহমান আকন্দ।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন মহানগর কমিটির সাবেক সভাপতি অধ্যক্ষ সফিকুর রহমান, মহানগর কমিটির সাধারণ সম্পাদক ওমর ফারুক, জেলা কমিটির যুগ্ম সম্পাদক শাহানা হক, সদস্য মোহাম্মদ সাইফ উদ্দিন রনি, আজাদ সরকার লিটন, সুজনের সমন্বয়কারী সৈয়দ নাসির উদ্দিনসহ অনেকে।

সংবাদ সম্মেলনে বক্তারা অবাধ, নিরপেক্ষ ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন অনুষ্ঠানে রাষ্ট্র, ভোটার, নির্বাচন কমিশন, রাজনৈতিক দল, মন্ত্রী ও সাংসদ, সরকারি-বেসরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, গণমাধ্যম, প্রার্থী ও সমর্থক এবং সচেতন নাগরিকদের প্রতি তাদের দায়িত্ব ও কর্তব্য পালনসহ দায়িত্বশীল ভূমিকা রাখার আহ্বান জানান।

মাসিমার জন্য মাইক হাতে রাস্তায় : আগামী বুধবার কুমিল্লা সিটি করপোরেশন নির্বাচন। প্রচার-প্রচারণায় মুখর কুমিল্লা  নগরী। অন্য পুরুষদের মতো মাসিমার (খালা) জন্য ভোট চাইতে রাস্তায় নেমেছেন রিয়া পাল তরী। কিছুদিন আগে তিনি উচ্চ মাধ্যমিক শেষ করেছেন। বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষা দিচ্ছেন।

কুমিল্লা সিটি করপোরেশন নির্বাচনে সংরক্ষিত কাউন্সিলর পদে নগরীর ১০, ১১ ও ১২ নম্বর ওয়ার্ডে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন তার মাসিমা অনিতা রানী সরকার। আনারস প্রতীক পাওয়ার পর থেকে মাসিমার জন্য ভোট চাইতে মাইক্রোফোন হাতে নেন রিয়া। গানের সুরে, আবার কখনো ক্যানভাসারদের মতো ভোট চান তিনি। তার এই ভোট চাওয়ার বিষয়টি কুমিল্লা নগরীতে বেশ ইতিবাচকভাবে আলোচনার সৃষ্টি করেছে।

রিয়া বলেন, ‘আমার মাসিমা অনিতা রানী সরকার। তিনি ২০১২ সালে নগরীর ১০, ১১ ও ১২ নম্বর ওয়ার্ড থেকে সংরক্ষিত কাউন্সিলর নির্বাচিত হন। ২০১৭ সালে পরাজিত হন। এবার আবার নির্বাচন করছেন। মাসিমার ছেলে নেই। আমি ছোট থেকে বড় হয়েছি মাসিমার কাছে।  দুই মেয়ে আছে। তাই মাসিমা যেন প্রচার-প্রচারণায় পিছিয়ে না যান সে জন্য মাইক্রোফোন হাতে তুলে নিয়েছি। মানুষও বিষয়টিকে ইতিবাচকভাবে নিয়েছেন।’

ভাগ্নির প্রচারণার বিষয়ে খালা অনিতা রানী সরকার বলেন,  ‘আমার ছেলে নেই। আমার বোনের মেয়ে রিয়া বিকাল থেকে রাত পর্যন্ত মাইকে ভোট চেয়ে বেড়ায়। আমার খুব ভালো লাগে। আমার যে ছেলে নেই সেই অভাবটা বুঝতে দেয় না রিয়া।’

রাত জেগে ছেলের পোস্টার ভাঁজ করছেন মা : বিকাশ চন্দ্র দাস। নগরীর ৮ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর প্রার্থী। বিকাশ দাস আলোচনায় আসেন নিজের ফেসবুক পোস্টের জন্য। শনিবার সকালে তিনি তার ব্যক্তিগত ফেসবুক ওয়ালে তার মায়ের ছবি দেন। ছবিতে দেখা যায়, রাত জেগে ছেলের পোস্টার ভাঁজ করছেন বিকাশের মা। গভীর রাতে সজাগ থেকে ছেলের পোস্টার ভাঁজ করা, আঠা দিয়ে সুতলিতে পোস্টার সাঁটানোর ছবি ফেসবুকে দেওয়ার পরই আলোচনা শুরু হয়।

বিকাশ বলেন, ‘আমার বাবা সমাজসেবক ছিলেন। সমাজের সমস্যাজর্জরিত মানুষের পাশে থেকেছেন জীবনভর। আমিও বাবার মতো মানুষের সেবা করতে চাই। তবে আমার অত টাকা-পয়সা নেই। তাই আমি বন্ধু-বান্ধবের কাছ থেকে ঋণ করে কাউন্সিলর পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছি। আমার পোস্টার ভাঁজ করার লোক নাই। আমার মা রাত জেগে পোস্টার ভাঁজ করেন। সুতলিতে আঠা দিয়ে পোস্টার লাগিয়ে দেন।’

ঘুড়ি প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করা বিকাশ দাস বলেন, ‘নির্বাচনে জয়-পরাজয় ভাগ্যের ওপর নির্ভর করে। না করা সত্ত্বেও আমার জন্য রাত জেগে আমার মা নির্বাচনী পোস্টার ভাঁজ করেন। এখানেই আমার জয় হয়েছে।’

বিকাশের মা বাসন্তী রানী দাস বলেন, ‘ছেলেটা মানুষের সেবা করতে চায়। মানুষের সেবা করার জন্য অনেক পাগলামি করে। আমার ভালো লাগে। ছেলের হাতে টাকা নেই, আমি জানি। নির্বাচনটাও প্রায় চলে এসেছে। তাই পোস্টার ভাঁজ করি, পোস্টার লাগিয়ে দিই।’

গণসংযোগ : ভোটারদের কেন্দ্রে আসতে বাধার অভিযোগ করেছেন সাক্কু-কায়সার। নগরীজুড়ে এখন একটাই আলোচনা কে হচ্ছেন কুমিল্লার নগরপিতা। পুরাতন-নতুন মুখ, না তারুণ্যনির্ভর প্রার্থী?

শেষ সময়ে এসেও অভিযোগ-পাল্টা অভিযোগে প্রচারণায় বিরামহীন সময় পার করছেন প্রার্থীরা। অভিযোগের পাশাপাশি ভোটারদের মন জয়ে শেষবারের মতো দিচ্ছেন নানা প্রতিশ্রুতি। আওয়ামী লীগের প্রার্থী আরফানুল হক রিফাত দুর্নীতির সঙ্গে কখনই জড়াবেন না বলে প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। স্বতন্ত্র প্রার্থী মনিরুল হক সাক্কু ও নিজাম উদ্দিন কায়সার অভিযোগ করেছেন, ভোটারদের কেন্দ্রে আসতে বাধা দেওয়া হবে।

গতকাল সদর হাসপাতাল, শাসনগাছা, ডায়াবেটিক হাসপাতাল এলাকায় গণসংযোগ চালান আওয়ামী লীগের প্রার্থী আরফানুল হক রিফাত। এ সময়  তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমি দুর্নীতির সঙ্গে কখনই জড়াব না। আপনারা আমার ওপর আস্থা রাখতে পারেন। আমার প্রথম কাজ হবে জলাবদ্ধতা দূর করা, যানজট নিরসন করা। আমি এক বছরের মধ্যে এ কাজ করব।’

নগরীর দারোগাবাড়ী এলাকায় নির্বাচনী প্রচার চালান মনিরুল হক সাক্কু। এ সময় তিনি বলেন, ‘নির্বাচনের শুরু থেকেই সদর আসনের এমপি আ ক ম বাহাউদ্দিন আওয়ামী লীগ প্রার্থীর পক্ষে নানা কর্মকান্ড চালিয়ে যাচ্ছেন। এ বিষয়ে আমি ইসিতে অভিযোগ দিয়েছি। এর পরিপ্রেক্ষিতে তাকে এলাকা ছাড়ার জন্য নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। কিন্তু তিনি এলাকা ছাড়ছেন না।’

তিনি বলেন, ‘আমরা বিভিন্ন মাধ্যমে খবর পেয়েছি সিটি করপোরেশনের বাইরের লোকজন কুমিল্লায় এসে থাকছেন। তারা কুমিল্লার ক্লাবসহ বিভিন্ন হোটেলে অবস্থান নিচ্ছেন। তাদের এখানে অবস্থানের উদ্দেশ্য কী? আমরা ওয়ার্ক করার পর আমাদের কর্মীদের বিভিন্নভাবে হুমকি দেওয়া হচ্ছে। বিষয়টি আমি রিটার্নিং অফিসারকে জানিয়েছি। আমি শুনতে পেয়েছি, নির্বাচনের দিন তারা সিটি করপোরেশনের চতুর্দিকের ইউনিয়ন পরিষদ থেকে লোকজন এনে সিটি এলাকায় প্যানিক সৃষ্টি করবে- ভোটাররা যেন কেন্দ্রে যেতে দেরি করেন, ভয় পান।’

ঘোড়া প্রতীকের মেয়র প্রার্থী নিজাম উদ্দিন কায়সার প্রচারণা শুরু করেন নগরীর ৫ নম্বর ওয়ার্ড পুরাতন চৌধুরীপাড়া এলাকা থেকে। এ সময় তিনি বলেন, ‘আমরা বিভিন্ন মারফতে শুনেছি, স্থানীয় সংসদ সদস্য ২০১৮ সালে যেভাবে নির্বাচন হয়েছে সেভাবে নির্বাচন করার প্রস্তুতি নিচ্ছেন। বহিরাগত লোকজনকে কেন্দ্রের সামনে রেখে, ভোটারদের পাড়া-মহল্লায় বাধা দেওয়ার জন্য পরিকল্পনা করছেন। তাই আমি নির্বাচন কমিশনকে অনুরোধ করব, ভোটের দিন পরিবেশ সুষ্ঠু রাখার জন্য শহরজুড়ে নিরাপত্তাবেষ্টনী তৈরি করতে।’

সর্বশেষ খবর