সোমবার, ১৩ জুন, ২০২২ ০০:০০ টা

ভারতের কারাগারে ১৮৫০ বাংলাদেশি

নিজস্ব প্রতিবেদক

ভারতের কারাগারে ১৮৫০ বাংলাদেশি

পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আবদুল মোমেন সংসদে জানিয়েছেন, বর্তমানে ভারতের বিভিন্ন কারাগারে ১ হাজার ৮৫০ বাংলাদেশি নাগরিক আটক বা বন্দি রয়েছেন। অধিকাংশই পদ্ধতিগত কারণে অনিয়মিত অবস্থানের দায়ে অভিযুক্ত। এ ছাড়া বর্তমানে মিয়ানমারে বাংলাদেশি হিসেবে বিবেচিত মোট ৬৩ জন আটক রয়েছেন, যারা অনুপ্রবেশের দায়ে বিভিন্ন মেয়াদে সাজা ভোগরত। তাদের সাজার মেয়াদ শেষ হলে প্রত্যাবাসন করা সম্ভব হবে। স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে একাদশ সংসদের ১৮তম (বাজেট) অধিবেশনের গতকালের বৈঠকে টেবিলে উত্থাপিত প্রশ্নোত্তর পর্বে সরকারি দলের এমপি দিদারুল আলমের (চট্টগ্রাম-৪) লিখিত প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব তথ্য জানান।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আবদুল মোমেন বলেন, আটকের খবর পেলে ভারতে বাংলাদেশের মিশনগুলো ভারতের সংশ্লিষ্ট কারাগার, পুলিশ স্টেশন/থানা ও ডিপোর্টেশন সেন্টার নিয়মিত পরিদর্শন করে। আটক বাংলাদেশি নাগরিকদের আটকের কারণ উদ্্ঘাটন, আইনি সহায়তা প্রদান, জেল কোড অনুযায়ী প্রাপ্য স্বাস্থ্যসেবা ও সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করার ব্যবস্থা নিয়ে থাকে। আটক বিচারাধীন আসামিদের মামলা যাতে দ্রুত নিষ্পত্তি হয় তার জন্য প্রয়োজনীয় সহায়তা দেওয়াসহ সাজাপ্রাপ্তরা যাতে সাজার মেয়াদ শেষ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই মুক্তি পান, সে ব্যবস্থাও গ্রহণ করে। ক্ষেত্রবিশেষ ভারত সরকারের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে মধ্যস্থতা করে তাদের মুক্তকরণপূর্বক দেশে প্রত্যাবাসনের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়। এ ছাড়া বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে বর্তমানে নারী ও শিশু পাচার রোধ, উদ্ধার ও পুনর্বাসন-সংক্রান্ত একটি টাস্কফোর্স গঠন করা হয়েছে, যার মাধ্যমে ভারতে আটক পাচারের শিকার নারী ও শিশুদের স্বদেশ প্রত্যাবাসন-সংক্রান্ত কার্যক্রম গ্রহণ করা হয়ে থাকে।

তিনি জানান, মিয়ানমারে আটক ৬৩ জনের মধ্যে ১০ জনের বাংলাদেশি নাগরিকত্ব সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া গেছে। অবশিষ্ট ৫০ জনের নাগরিকত্ব নিশ্চিত করার প্রক্রিয়া চলমান। তিনি বলেন, ২৩ মার্চ অনুষ্ঠিত পতাকা বৈঠকের মাধ্যমে ৪১ জন এবং ১ জুন চার কারামুক্ত বাংলাদেশি নাগরিককে প্রত্যাবাসন করা হয়েছে।

যুদ্ধের ফলে গম ও ভোজ্য তেলের দাম বেড়েছে : এ কে আবদুল মোমেন বলেছেন, রাশিয়া-ইউক্রেন সংঘাত এখনো চলমান। এ যুদ্ধ পৃথিবীর সব দেশের ওপর প্রভাব ফেলেছে। বাংলাদেশও এর ব্যতিক্রম নয়। বৈশ্বিক অর্থনীতির ওপর এ যুদ্ধের নেতিবাচক প্রভাব বহুমাত্রিক। বাংলাদেশেও এর প্রভাব বহুমাত্রিক।

তিনি জানান, জানুয়ারিতে বিশ্ববাজারে ‘ব্রেন্ট ক্রুড অয়েল’-এর দাম ছিল ব্যারেলপ্রতি ৫৬ ডলার, যা এখন ১২০ ডলারের বেশি হয়েছে। এ ছাড়া স্পট মার্কেটে এলএনজির দামও অনেক বেড়ে গেছে। জ্বালানি তেল ও এলএনজির দাম বেড়ে যাওয়ার ফলে জনগণের ওপর এর প্রভাব যেন না পড়ে সেজন্য সরকারের ভর্তুকির পরিমাণ বেড়ে যাচ্ছে, যা সামগ্রিক বাজেটের ওপর চাপ বাড়াচ্ছে। এ ছাড়া বাড়তি মূল্যে তেল ও এলএনজি কেনার ফলে তা বাংলাদেশের বৈদেশিক মুদ্রার ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছে।

বিশ্ববাজারে খাদ্যশস্য, ভোজ্য তেল ও রাসায়নিক সার সরবরাহের ক্ষেত্রে রাশিয়া ও ইউক্রেনের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। বাংলাদেশে আমদানি করা গমের সিংহভাগ আসে রাশিয়া ও ইউক্রেন থেকে। এ ছাড়া বাংলাদেশ ইউক্রেন থেকে ভোজ্য তেলও আমদানি করে। কিন্তু যুদ্ধের ফলে সরবরাহ ব্যবস্থা বাধাগ্রস্ত হওয়ায় গম ও ভোজ্য তেলের দাম বেড়েছে। সেই সঙ্গে গম ও তেল দিয়ে তৈরি খাবারের দামও বেড়েছে। তিনি বলেন, বিকল্প উৎস থেকে খাদ্যশস্য, ভোজ্য তেল ও রাসায়নিক সার আমদানির পরিকল্পনা সরকারের রয়েছে।

সর্বশেষ খবর