সোমবার, ১৩ জুন, ২০২২ ০০:০০ টা

অর্থ পাচারকারীদের সুযোগ দেওয়ায় সংসদে সমালোচনা

নিজস্ব প্রতিবেদক

জাতীয় সংসদে ২০২১-২২ অর্থ বছরের সম্পূরক বাজেট আলোচনায় সরকারি দলের সদস্যরা বলেছেন, প্রধানমন্ত্রীর সুযোগ্য নেতৃত্বে কারোনাকালেও উন্নয়ন ও অগ্রগতির ধারাবাহিকতা রক্ষা সম্ভব হয়েছে। পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে যখন দুর্ভিক্ষাবস্থা বিরাজ করছে, তখন বাংলাদেশ মাথা উঁচু করে এগিয়ে চলেছে। পক্ষান্তরে বিরোধী দলের সদস্যরা বলেন, বাজেটে বিদেশে পাচারকৃত অর্থ ফেরত আনার যে সুযোগ দেওয়া হয়েছে তাতে অর্থ পাচারকারীরা হবেন শ্রেষ্ঠ করদাতা।

গতকাল জাতীয় সংসদে বাজেট আলোচনায় তারা এসব কথা বলেন। স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন। আলোচনায় অংশ নিয়ে সরকারি দলের ড. মহীউদ্দিন খান আলমগীর বলেন, করোনাকালে বৈশ্বিক বিপর্যয়ের মধ্যে প্রধানমন্ত্রী বিভিন্ন খাত ও গণমানুষকে আর্থিক সহায়তা প্রদানের মাধ্যমে দেশের অর্থনীতিকে শক্ত ভিতের ওপর দাঁড় করিয়েছেন। যে কারণে সম্পূরক বাজেট প্রস্তাবিত বাজেটের থেকে খুব বেশি পরিবর্তন হয়নি। সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সুদক্ষ নেতৃত্বে বৈশ্বিক মহামারির মধ্যে দেশের অর্থনীতির চাকা সচল রেখে গণমানুষের জীবন জীবিকা স্বাভাবিক রাখা সম্ভব হয়েছে। শিল্প- বাণিজ্য থেকে শুরু করে সব খাতে এবং শহর থেকে তৃণমূল পর্যন্ত মানুষকে প্রণোদনা দেওয়া হয়েছে।

বিরোধী দল জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য পীর ফজলুর রহমান বলেন, বিদেশে টাকা পাচার করা অর্থ দেশে নিয়ে এলে দায়মুক্তি দেওয়া হবে তা আমি সমর্থন করি না। যারা বিদেশে অর্থ পাচার করেছে তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হোক। বাজেটে অর্থ পাচারকারীদের দায়মুক্তির যে সুযোগ রাখা হয়েছে, এটা থাকলে অর্থ চোরেরা হয়ে যাবে শ্রেষ্ঠ করদাতা।

জাতীয় পার্টির শামীম হায়দার পাটোয়ারী প্রশ্ন রেখে বলেন, কেউ ব্যাংক ডাকাতি করে, দুর্নীতি করে বিদেশে টাকা পাচার করে- তাদের বিরুদ্ধে কি কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হবে না?  বিএনপির রুমিন ফারহানা বলেন, দেশে দরিদ্রের হার কমেছে বলে সরকার যে আত্মতৃপ্তিতে ভুগছে তার প্রমাণ পাওয়া যায় টিসিবির গাড়ির পিছনের লাইন দেখে। সেখানে ক্যান্সারের রোগী থেকে পাঁচ বছরের শিশুও দিনভর লাইনে দাঁড়িয়ে মাল না পেয়ে ফিরতে বাধ্য হচ্ছে। তিনি বলেন, দেশে ধনী-দরিদ্রের ব্যবধান বাড়ছে। দেশে চিকিৎসা ব্যয় এমনভাবে বাড়ছে যে কোনো পরিবারের একজন আক্রান্ত হলে সে সংসারে দুর্যোগ নেমে আসে।

সরকারি দলের সদস্য প্রাণ গোপাল দত্ত বিদেশে পাচারকৃত অর্থ ফেরত আনার সুযোগ দেওয়াকে এক ধরনের দুর্নীতি বলে মন্তব্য করে এটা বন্ধ করার আহ্বান জানান। তিনি বলেন, যারা অবৈধ ভাবে বিদেশে টাকা পাচার করে তারা ভালো মানুষ নন। এ সুযোগ একবার দিলে বছরের পর বছর বিদেশে অর্থ পাচার হবে এবং স্বল্প ট্যাক্স দিয়ে তা সাদা করবে। গণফোরামের মোকাব্বির খান বলেন, দেশে যদি একজন বড় দুর্নীতিবাজকে ধরে সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করা যেত, তবে এতদিনে দেশে দুর্নীতি ৫০ ভাগ কমে যেত।

 

সর্বশেষ খবর