বুধবার, ১৫ জুন, ২০২২ ০০:০০ টা
৬৯ কোটি টাকা আত্মসাৎ

ফারমার্স ব্যাংকের ছয়জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট অনুমোদন

নিজস্ব প্রতিবেদক

৬৯ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে দি ফারমার্স ব্যাংক লিমিটেডের (বর্তমান পদ্মা ব্যাংক) সাবেক চেয়ারম্যান মো. মাহবুবুল হক চিশতী ওরফে বাবুল চিশতীসহ ছয়জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট অনুমোদন করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

গতকাল দুদকের প্রধান কার্যালয়ে কমিশন সভায় এই চার্জশিট অনুমোদন দেওয়া হয় বলে জানিয়েছেন দুদক সচিব মো. মাহাবুব হোসেন। তিনি বলেন, আসামিরা পরস্পর যোগসাজশে ক্ষমতার অপব্যবহার করে ঋণের নামে ব্যাংকিং নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে, বন্ধকি সম্পত্তির অতি মূল্যায়ন দেখিয়ে, নিজ পদের অবৈধ প্রভাব খাটিয়ে ৫৮ কোটি টাকা আত্মসাৎ করেন। যার স্থিতি ৬৯ কোটি ৫৮ লাখ উত্তোলনপূর্বক আত্মসাৎ ও আত্মসাতের সহযোগিতা করেন। পরবর্তীতে বর্ণিত অর্থের অবৈধ প্রকৃতি গোপন করার লক্ষ্যে স্থানান্তর, হস্তান্তরপূর্বক লেয়ারিং করা ও লেয়ারিং কাজে সহযোগিতা করেন। মাহবুবুল হক চিশতী ছাড়াও চার্জশিটভুক্ত অপর পাঁচ আসামি হলেন- মেসার্স রোজবার্গ অটো রাইস মিলস লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. হযরত আলী, পরিচালক মো. দেলোয়ার হোসেন, দি ফারমার্স ব্যাংক শেরপুর শাখার প্রধান ও সাবেক এক্সিকিউটিভ অফিসার উত্তম বড়ুয়া, ফারমার্স ব্যাংক প্রধান শাখার সাবেক অতিরিক্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক এ কে এম এম শামীম ও সিটি সার্ভে লিমিটেডের ম্যানেজিং ডিরেক্টর মো. খায়রুল আলম। দুদকের অভিযোগে বলা হয়, আসামিরা পরস্পর যোগসাজশে ক্ষমতার অপব্যবহার করে অসৎ উদ্দেশ্যে অপরাধজনক বিশ্বাসভঙ্গ করে ঋণের নামে ব্যাংকিং নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে বন্ধকি সম্পত্তির অতি মূল্যায়ন দেখিয়ে, নিজ পদের অবৈধ প্রভাব খাটিয়ে আত্মসাৎ ও আত্মসাতের সহযোগিতা করেন। পরবর্তীতে বর্ণিত অর্থের অবৈধ প্রকৃতি গোপন করার লক্ষ্যে স্থানান্তর, হস্তান্তরপূর্বক লেয়ারিং করা ও লেয়ারিং কাজে সহযোগিতা করেন।

তিতাস কর্মচারীর কোটি টাকার অনিয়ম : জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে তিতাস গ্যাস টিএন্ডটি কোম্পানি লিমিটেডের সিনিয়র সুপারভাইজার তহুরুল ইসলামের বিরুদ্ধে চার্জশিট দিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। তিতাসের এই কর্মচারীর আর্থিক অনিয়মের সত্যতা মিলেছে বলে গতকাল সাংবাদিকদের জানিয়েছেন দুদক সচিব মাহবুব হোসেন।

দুদক সূত্রে জানা যায়, তিতাসের জোনাল বিপণন অফিস টঙ্গীর সিনিয়র সুপারভাইজার তহুরুল ইসলাম নিজের অর্জিত মোট ১ কোটি ৮১ লাখ ১১ হাজার ৮০৫ টাকা মূল্যের স্থাবর ও অস্থাবর সম্পদের তথ্য দিয়েছেন।

দুদকের তদন্তে প্রাপ্ত রেকর্ডপত্র বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, ১৯৯১ সাল থেকে তিতাস গ্যাস টিএন্ডটি কোম্পানি লিমিটেডে চাকরি করে তহুরুল নিজ নামে সর্বমোট ২ কোটি ৩৬ লাখ ১৭ হাজার ৭৪১ টাকা মূল্যের স্থাবর ও অস্থাবর সম্পদ অর্জন করেছেন। দুদকের তদন্তে আরও দেখা যায়, তিনি নিজ নামে দাখিলকৃত সম্পদ বিবরণীতে মোট ৫৩ লাখ ৩৫ হাজার ৯৩৬ টাকা মূল্যের অস্থাবর সম্পদের তথ্য গোপন করেছেন। এ ছাড়া মো. তহুরুল ইসলাম ও তার স্ত্রী শামীমা ইসলামের নামে মোট ১ কোটি ৬৪ লাখ ৪৩ হাজার ৬৬৪ টাকা মূল্যের সম্পদ নিজের দখলে রেখে পরবর্তীতে অর্জিত এই সম্পদ অসৎ উদ্দেশে স্থানান্তর, হস্তান্তর ও রূপান্তরের মাধ্যমে অবস্থান গোপন করেছেন।

অর্থ পাচারকারী সরকারি কর্মকর্তা কর্মচারী হলে ব্যবস্থা নেবে দুদক : প্রস্তাবিত ২০২২-২৩ অর্থবছরের বাজেটে দেশ থেকে বিভিন্ন উপায়ে পাচার হওয়া অর্থ কর দিয়ে বৈধ করার সুযোগ থাকছে বলে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল জানালেও দুদক সচিব মো. মাহবুব হোসেন বলেছেন সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী কর্তৃক পাচার হওয়া অর্থের বিষয়ে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।  গতকাল দুদকের প্রধান কার্যালয় সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে দুদক সচিব এ কথা জানান। তিনি বলেন, সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের অর্থ পাচারের বিষয়ে দুদকের প্রচলিত আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে। দুদকের মানি লন্ডারিং আইনে সরকারি কর্মকর্তা কর্মচারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে যে আইন আছে আমরা সেভাবেই ব্যবস্থা নেব।

 

 

সর্বশেষ খবর