বৃহস্পতিবার, ১৬ জুন, ২০২২ ০০:০০ টা

এমপিকে এভাবে নির্দেশ দিতে পারে না ইসি

নিজস্ব প্রতিবেদক

এমপিকে এভাবে নির্দেশ দিতে পারে না ইসি

নির্বাচন কমিশনের নির্দেশে সিটি করপোরেশন এলাকা না ছেড়ে আলোচনার জন্ম দেওয়া কুমিল্লার সংসদ সদস্য আ ক ম বাহাউদ্দিন বাহার ইসির ‘নির্দেশ দেওয়ার’ এখতিয়ার নিয়েই প্রশ্ন তুলেছেন। তিনি মনে করেন, ইসি তাঁকে যে চিঠি দিয়েছে তা ‘আইনের লঙ্ঘন, এখতিয়ারবহির্ভূত’; এতে তাঁর ‘সাংবিধানিক অধিকার ক্ষুণ্ন’ হয়েছে। আগামীতে এ নিয়ে তিনি সংসদে কথা বলবেন এবং আইনটি সংশোধনের দাবি তুলবেন। চিঠিটা ভাষাগতভাবেও ঠিক হয়নি। একজন সংসদ সদস্যকে এভাবে ‘নির্দেশ’ শব্দ ব্যবহার করতে পারে না কেউ। চিঠিটা অসমাপ্ত। চিঠিতে আইনের পুরো ব্যাখ্যা নেই।

গতকাল দুপুরে নগরীর ১১ নম্বর ওয়ার্ডের ভিক্টোরিয়া কলেজিয়েট স্কুল কেন্দ্রে নিজের ভোট দিতে যান সংসদ সদস্য বাহার। এরপর তিনি সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন। বাহার বলেন, ‘আইন তো সবার জন্য সমান। নির্বাচন কমিশনকে আগে আইন মানতে হবে। আমি খুব দুঃখ পেয়েছি, একজন নির্বাচন কমিশনার আপনাদের সামনে বক্তব্য দিয়ে বলেছেন, আই অ্যাম আ ল মেকার। আমি আইন ভঙ্গ করেছি! আমি আপনাদের প্রশ্ন করতে চাই, আপনারা কি আমাকে কোথাও দেখেছেন নির্বাচনে? আমি কীভাবে আইন ভাঙলাম?’ সংসদ সদস্য বাহাউদ্দিন বাহার আইনের কথা তুলে ধরে বলেন, ‘আইনটি আপনাদের বলি, সরকারের গুরুত্বপূর্ণ কোনো সুবিধাভোগী ব্যক্তি নির্বাচনের প্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণ করতে পারবেন না। আই এম নট পার্ট অব দি গভর্নমেন্ট। আমার ঠিকানা হচ্ছে, আমি জাতীয় সংসদের পার্ট। সুতরাং আমাকে এ আইনের আওতায় আটকে ঘরে ঢুকিয়ে দেওয়া হয়েছে। আমি আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। আমাকে পার্লামেন্টে কথা বলতে হবে। আইনটা আমরা সংশোধন করব ইনশা আল্লাহ। আমি হাই কোর্টে রিট করেছি, একটা রুলও পেয়েছি। এ আইনটা পরিবর্তন হবে, কারণ একজন সংসদ সদস্য যেহেতু সরকারের অংশ নয়, সেহেতু এখানে আমার সাংবিধানিক অধিকার ক্ষুণ্ন হচ্ছে।’

ইসি ওই চিঠি দেওয়ার কারণে কুমিল্লার মানুষ ‘ক্ষুব্ধ হয়ে নৌকার পক্ষে ভোট দিচ্ছে’ বলে মন্তব্য করেন বাহার। তিনি বলেন, ‘এ চিঠিটা যদি না দিত, কুমিল্লার মানুষ এতটা বিক্ষুব্ধ হতো না। আমি তাদের ধন্যবাদ জানাই, তারা আমার কাজটা সহজ করে দিয়েছেন।’

মহামারির আড়াই বছরে কুমিল্লার মানুষকে ছেড়ে যাননি মন্তব্য করে তিনি বলেন, ‘এলাকা ছেড়ে কীভাবে যাব আমি? আমি চলে গেলে মূর্তি ভেঙে দেয় কুমিল্লায়। আমি হজে গিয়েছিলাম। কুমিল্লায় মূর্তি ভেঙে দিয়েছে। আমি সফর সংক্ষিপ্ত করে চলে এসেছি। কুমিল্লাকে টার্গেট করার পরও সেখানে কারও ক্যাজুয়ালটি হয়নি। অথচ বাংলাদেশের বিভিন্ন জায়গায় মূর্তি ভাঙার কারণে মানুষকে হত্যা করা হয়েছে।’ সিটি ভোটের পরিবেশ নিয়ে সন্তোষ প্রকাশ করে এই সংসদ সদস্য বলেন, ‘বাসা থেকে বের হয়ে, কেন্দ্রে এসে ভোট দিলাম। এ পর্যন্ত যা দেখলাম, শব্দটা ছিল উৎসবমুখর। কুমিল্লায় সুন্দর পরিবেশে ভোট হচ্ছে। বৃষ্টিতে কিছুটা হতাশ হয়েছিল ভোটাররা। কিন্তু বৃষ্টি চলে যাওয়ায় উৎসাহ-উদ্দীপনা নিয়ে ভোট দিচ্ছে।’ ‘কোথাও কোনো ঝামেলা নেই’ মন্তব্য করে তিনি বলেন, ‘আপনাদের মাধ্যমে প্রশাসনকে বলতে চাই, অতি উৎসাহী কোনো কর্মকর্তা যেন পরিবেশ নষ্ট না করেন। প্রার্থী ও সমর্থকরা উৎসবমুখর পরিবেশে আছেন।’

তিনি বলেন, ‘ভোটের আইডি নিয়ে গিয়ে ভোট না দেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। কারণ ভোটের চিঠি নিয়ে গেছে। কিন্তু এটা তো ঠিক না, আইডি নিলেই তো হবে। তাই সব কর্মকর্তাকে বলব, একটা উৎসবমুখর পরিবেশে নির্বাচন সম্পন্ন করার জন্য আপনারা সহযোগিতা করেন। নৌকা বিজয়ী হবে, বাহার নয়।’

 

সর্বশেষ খবর