শিরোনাম
সোমবার, ২০ জুন, ২০২২ ০০:০০ টা

রোহিঙ্গাদের বাড়ি চল সমাবেশ

কক্সবাজার প্রতিনিধি

রোহিঙ্গাদের বাড়ি চল সমাবেশ

রোহিঙ্গারা গতকাল গো হোম কর্মসূচি পালন করেন -এএফপি

নিজ দেশ মিয়ানমারে ফিরিয়ে নেওয়ার দাবিতে কক্সবাজারের উখিয়া ও টেকনাফের ৩৪টি ক্যাম্পে ‘গো হোম’ প্রচারণা করছে রোহিঙ্গারা। গতকাল উখিয়ার ৯, ১৪, ১৩, ১৭, ২ ওয়েস্ট, ১ ওয়েস্ট, ৪ ও ১৮ নম্বর রোহিঙ্গা ক্যাম্পের নির্ধারিত স্থানে সকাল ৮টা থেকে এ প্রচারণা শুরু হয়। যেখানে উল্লিখিত ক্যাম্পগুলোর পার্শ্ববর্তী ক্যাম্পের রোহিঙ্গারা অংশ নেন। এ ছাড়াও টেকনাফের ক্যাম্পগুলোতে একযোগে শুরু হয় কর্মসূচি। অনুষ্ঠিত হয় মানববন্ধন। এ সময় নিজের দেশে ফিরিয়ে দিতে বিশ্ব সম্প্রদায়কে অনুরোধ জানায় রোহিঙ্গারা। ‘ব্যাক টু হোম’ স্লোগানে এই কর্মসূচিতে লাখো রোহিঙ্গা অংশগ্রহণ করছে। ২০২১ সালের ২৯ সেপ্টেম্বর দুর্বৃত্তের গুলিতে নিহত রোহিঙ্গা নেতা মুহিবুল্লাহ একই দাবিতে ২০১৯ সালের ২৫ আগস্ট অনুষ্ঠিত মহাসমাবেশের নেতৃত্বে ছিলেন। তবে, এবারের সমাবেশের একক কোনো আয়োজক কিংবা নেতৃত্ব পর্যায়ের কেউ সামনে না এলেও প্রচারপত্রে আয়োজক হিসেবে নির্যাতিত রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠী লেখা হয়েছে। রোহিঙ্গাদের রোহিঙ্গা বলেই ডাকা, দ্রুত সময়ের মধ্যে প্রত্যেক রোহিঙ্গাকে আরাকানের গ্রামে গ্রামে প্রত্যাবাসন, প্রত্যাবাসন সংক্রান্ত প্রত্যেক চুক্তি অন্তর্ভুক্ত করা, প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়ায় অবশ্যই যুক্তরাষ্ট্র, জাতিসংঘ, ওআইসি, যুক্তরাজ্য, ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন, বাংলাদেশ, এনজিও, সংশ্লিষ্ট সবাইকে অন্তর্ভুক্ত করা, বার্মার ১৯৮২ সালের নাগরিকত্ব আইন বাতিল, সম্পত্তি ফেরত, স্বাধীনভাবে বেঁচে থাকার অধিকারসহ ইত্যাদি দাবি উত্থাপন করা হয় এই কর্মসূচিতে। উখিয়ার ৪ নম্বর রোহিঙ্গা ক্যাম্পের হেড মাঝি মোহাম্মদ হোসেন বলেন, আমরা নিরাপদ প্রত্যাবাসন চাই এবং আমাদের আশা এবারের সমাবেশটির মাধ্যমে উত্থাপিত রোহিঙ্গাদের যৌক্তিক দাবিগুলো আন্তর্জাতিক পরিমন্ডলে গুরুত্ব পাবে। রোহিঙ্গা ইয়ুথ অ্যাসোসিয়েশন-এর সভাপতি কিন মং বলেন, সম্মান ও মর্যাদার সঙ্গে আমাদের দেশ মিয়ানমারে ফিরতে চাই আমরা, সমাবেশে আমরা এই মূল দাবিটাই জানাচ্ছি বিশ্ববাসীর কাছে। বাংলাদেশ সরকার আমাদের আশ্রয় দিয়ে মানবিক দৃষ্টান্ত তৈরি করেছে, আমরা কৃতজ্ঞ। অতিরিক্ত শরণার্থী, ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার মোহাম্মদ সামছুদ্দৌজা বলেন, রোহিঙ্গারা নিজ নিজ অবস্থান থেকে দাঁড়িয়ে বাড়ি ফিরে যাওয়ার ইচ্ছার কথা জানাচ্ছে। তাঁদের শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে বাধা দেওয়া হবে হচ্ছে না তবে, এখন পর্যন্ত দাঁড়িয়ে মানববন্ধন ছাড়া রোহিঙ্গাদের বড় কোনো জমায়েত কিংবা বিক্ষোভ মিছিল-সমাবেশের অনুমতি দেওয়া হয়নি বলে জানান তিনি। ক্যাম্পে আইনশৃঙ্খলায় নিয়োজিত ৮ এপিবিএন এর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (মিডিয়া) কামরান হোসাইন জানান, ক্যাম্পের বিভিন্ন জায়গায় কর্মসূচি হচ্ছে। ক্যাম্প এলাকার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ ও সার্বিক নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে ৮ এপিবিএনের তৎপরতা সবসময় অব্যাহত আছে। ২০১৭ সালে মিয়ানমার সেনাবাহিনীর জঘন্য নৃশংসতায় মিয়ানমারের রোহিঙ্গা নাগরিকেরা নির্যাতিত হয়ে জোরপূর্বক বাংলাদেশে বিতাড়িত হয়েছিল যা ইতিহাসে রোহিঙ্গাদের সবচেয়ে ভয়াবহ দেশত্যাগ হিসেবে বিবেচিত। নির্যাতিত রোহিঙ্গারা শান্তিপূর্ণ মানববন্ধনের মাধ্যমে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের নিকট ১৯ দফা দাবি উত্থাপন করেছে।

সর্বশেষ খবর