বুধবার, ২২ জুন, ২০২২ ০০:০০ টা

ভারতে বন্যায় মৃত্যু বেড়ে ১৩১

সাইফ ইমন

ভারতের আসামে বন্যা পরিস্থিতি ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। মৃতের সংখ্যা ক্রমেই বেড়ে চলেছে। একই অবস্থা ত্রিপুরা ও মেঘালয়ের। অন্যদিকে, টানা বৃষ্টিতে পশ্চিমবঙ্গের উত্তর অঞ্চলে বন্যার সৃষ্টি হয়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় বন্যা পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হলেও পাহাড়ের একাধিক জায়গায় ধস নেমেছে। এর ফলে সিকিম ও ভুটানের সঙ্গে সড়কপথে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। ভারতের আবহাওয়া বিভাগ চলমান বন্যা পরিস্থিতিতে অরেঞ্জ অ্যালার্ট জারি করেছে। এখন পর্যন্ত আসাম, মেঘালয় ও অরুণাচল প্রদেশে মোট ১৩১ জন মারা গেছে। ভারী বর্ষণের পাশাপাশি কোথাও কোথাও থেমে থেমে বৃষ্টি হচ্ছে। এর ফলে সৃষ্ট ভূমিধস ও বন্যায় ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির মুখোমুখি হয়েছে বিভিন্ন রাজ্যের লাখ লাখ মানুষ। আইএমডি বলেছে, ভারতের বিভিন্ন স্থানে বৃষ্টিপাত শুক্রবার পর্যন্ত অব্যাহত থাকতে পারে। সোমবার সাতটি রাজ্যের জন্য নতুন করে বৃষ্টির সতর্কতা জারি করা হয়। পূর্বাভাসে বলা হয়েছে আগামী শুক্রবার পর্যন্ত আসাম, মেঘালয়, অরুণাচল প্রদেশ, মিজোরাম, নাগাল্যান্ড, মণিপুর ও ত্রিপুরার বিভিন্ন এলাকায় বজ্রসহ বৃষ্টি, ঝড় ও ভারী বৃষ্টি হতে পারে।

আসামে মৃত্যু ৮২ জনের : আসামে শুধু সোমবারই রাজ্যটিতে মারা গেছে আরও অন্তত ১১ জন। এ নিয়ে আসামের চলমান বন্যা ও ভূমিধসে মৃত্যুর সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৮২। বন্যাকবলিত হয়ে পড়েছেন রাজ্যের ৩২ জেলার প্রায় ৪৭ লাখ বাসিন্দা। প্লাবিত হয়েছে প্রায় সাড়ে পাঁচ হাজার গ্রাম। সেই সঙ্গে বিভিন্ন স্থানে ঘটেছে ভূমিধস। পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন রাজ্যের ৩৫টির মধ্যে ৩২টি জেলার ৪৭ লাখ বাসিন্দা। জীবন বাঁচাতে এরই মধ্যে ৬১৫টি আশ্রয় কেন্দ্রে ঠাঁই নিয়েছেন প্রায় আড়াই লাখ মানুষ।

মেঘালয়ে পরিস্থিতি অপরিবর্তিত : মেঘালয়ে বন্যা পরিস্থিতি আগের মতোই আছে। খুব একটা উন্নতি হচ্ছে না। ভারতের আবহাওয়া অফিস এ অঞ্চলে নতুন করে বজ্রসহ বৃষ্টি, ঝড়, ভারী বৃষ্টির সতর্কতা জারি করেছে। ভূমিধস, বজ্রপাত ও আকস্মিক বন্যায় মেঘালয়ে জীবনযাত্রা ব্যাহত হচ্ছে। মেঘালয়ের ৫ লাখের বেশি মানুষ বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ভূমি ধসের কারণে রাজ্যটির দুটি জাতীয় সড়ক বন্ধ হয়ে যায়।

শিলিগুড়িতে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে : কয়েক ঘণ্টার লাগাতার বৃষ্টিতে সোমবার পানির তলায় চলে গিয়েছিল শিলিগুড়ি শহরের বহু এলাকা। গতকাল থেকে অবশ্য পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে আসছে। বেশিরভাগ এলাকা থেকেই পানি নেমে গেছে। তবে সোমবার রাতে বৃষ্টির জেরে যে পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল, তা শেষ কবে শিলিগুড়িতে হয়েছে, মনে করতে পারছেন না অনেকেই।

আশঙ্কা বাড়ছে জলপাইগুড়িতে : জলপাইগুড়িতে আশঙ্কা তৈরি হয়েছে তিস্তা এবং করোলাকে নিয়ে। গজলডোবায় তিস্তার লকগেট থেকে পানি ছাড়া হয়েছে। ফলে জলপাইগুড়ির দোমোহনি এবং তিস্তার অসংরক্ষিত এলাকায় বাংলাদেশ সীমান্ত পর্যন্ত লাল সতর্কতা জারি হয়েছে। অন্য দিকে দোমোহনিতে তিস্তার যে সংরক্ষিত এলাকা রয়েছে সেখানে হলুদ সতর্কতা জারি হয়েছে।

শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ আগরতলায় : বন্যা পরিস্থিতির অবনতি ত্রিপুরা রাজ্যেও। প্লাবিত হয়েছে ত্রিপুরার নতুন নতুন এলাকা। অতিরিক্ত বৃষ্টিতে পানিমগ্ন আগরতলা শহরের একটি বড় অংশ। বৃষ্টির জেরে পানি বেড়েছে হাওড়া নদীতে। ফলে হাওড়া নদীর আশপাশের এলাকা প্লাবিত হয়েছে।

আধিকারিকরা জানান, ত্রিপুরার পাহাড়ি এলাকায় অতিরিক্ত বৃষ্টির জেরে পানির স্তর বাড়ছে নদীতে। তাই চূড়ান্ত সতর্কতা জারি করা হয়েছে। ইতোমধ্যেই ত্রাণশিবিরে নিয়ে আসা হয়েছে ৫ হাজারের বেশি বাসিন্দাকে। এর আগে বন্যার কারণে সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করা হয়।

 

 

 

সর্বশেষ খবর