শুক্রবার, ২৪ জুন, ২০২২ ০০:০০ টা

পাহাড়ে বন্দুকযুদ্ধে নিহত বেড়ে ৪

রাঙামাটি প্রতিনিধি

পাহাড়ে মুখোমুখি অবস্থানে পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি (জেএসএস) ও কুকি-চিন ন্যাশনাল ফ্রন্ট (কেএনএফ)। রাঙামাটির বিলাইছড়ি উপজেলায় বড়থলী ইউনিয়নের সাইজাম পাড়ায় জেএসএস ও কেএনএফের মধ্যে বন্দুকযুদ্ধের ঘটনায় উৎকণ্ঠা বিরাজ করছে পাহাড়ে। বুধবার তিনজন নিহতের পর গতকাল আরও একজনের নিহতের খবর পাওয়া গেছে। এ নিয়ে নিহত সংখ্যা দাঁড়িয়েছে চারজনে। তারা হলেন- বৃষচন্দ্র ত্রিপুরা (৫২), তার ছেলে ধনরাম ত্রিপুরা (১৬), সুভাস চন্দ্র ত্রিপুরা (২৩) ও বীর কুমার ত্রিপুরা (২০)। নিহতরা সবাই পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি জেএসএস কর্মী বলে গণমাধ্যম কর্মীদের উদ্দেশে দেওয়া এক বিবৃতিতে কুকি-চিন ন্যাশনাল ফ্রন্ট (কেএনএফ)-এর ইনফরমেশন ডিপার্টমেন্ট লে. কর্নেল সলোমন দাবি করেন। বিবৃতিতে তিনি বলেন, সাইজাম পাড়াতে বন্দুকযুদ্ধে যারা নিহত হয়েছেন তারা গ্রামবাসী নয়। তারা সবাই পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির সশস্ত্র গ্রুপের সদস্য। তিনি আরও বলেন, সাইজাম পাড়াটি ছিল বম ও পাংখোয়া জনগোষ্ঠীদের প্রতিষ্ঠিত গ্রাম। এ ছোট গ্রামের প্রথম কারবারি ছিলেন বম সম্প্রদায়ের ননদৌ বম। প্রতিষ্ঠার পর কুকি-চিন জনগোষ্ঠী খিয়াং সম্প্রদায় বসবাস করে আসছে। পরে চাষাবাদের সুবিধার্থে কয়েকটি ত্রিপুরা পরিবার ও সর্বশেষ দুটি তঞ্চঙ্গ্যা পরিবারও একই গ্রামে নিয়ে আসা হয়। এ গ্রামটিতে এখনো বমদের একটি গির্জা রয়েছে। কিন্তু এ গ্রামটিকে জোরপূর্বক দখলে নিতে নাশকতামূলক কর্মকাণ্ড চালিয়ে যাচ্ছে জেএসএস। শুধু তাই নয়, কয়েক মাস আগে তাদের নির্যাতনে জুমে উৎপাদিত ধান (আড়াই হাজার হাড়ি), গবাদি-পশু ফেলে খিয়াং-ত্রিপুরাসহ সবাই গ্রাম ত্যাগ করতে বাধ্য হয়েছেন। তারা এখন নিজের ভিটামাটি হারিয়ে অন্য গ্রামে থাকতে বাধ্য হচ্ছেন। এ ব্যাপারে পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক শীর্ষ নেতা বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির বিরুদ্ধে কুকি-চিন ন্যাশনাল ফ্রন্ট (কেএনএফ) অপপ্রচার চালিয়ে যাচ্ছে। পাহাড়ে নিজেদের আধিপত্য বিস্তার করার জন্য নাশকতা চালিয়ে যাচ্ছে। যারা নিহত হয়েছেন তারা সবাই গ্রামবাসী। এদের সঙ্গে পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির কোনো সম্পৃক্ততা নেই। তার একেবারে নিরীহ। গ্রামের চারজন মানুষকে হত্যা করেছে। শিশুদেরও বাদ দেয়নি।

আমরা জানতে পেরেছি বিচাই চন্দ্র ত্রিপুরাকে ঘটনাস্থলেই গুলি করে হত্যা করা হয়।

তিনি আরও বলেন, ঘটনার পরপরই কুকি-চিন ন্যাশনাল ফ্রন্ট তাদের ফেসবুক অ্যাকাউন্টে পোস্ট করা একটি স্ট্যাটাসে হত্যার দায় স্বীকার করেছে। তারা এই হত্যাকাণ্ডকে দলের সফল অভিযান বলে বর্ণনা করেছে। নিরীহ গ্রামবাসী হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় আমি তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি।

বিলাইছড়ি উপজেলার বড়থলী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান অথৌয় মং মারমা বলেন, গ্রামবাসীর মধ্যে চারজনকে হত্যার ঘটনা সত্য। তবে লাশ উদ্ধারের বিষয়ে আমি কিছুই জানি না। কারণ, আমি বর্তমানে বান্দরবানে অবস্থান করছি।

রাঙামাটি অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অপরাধ) মাহমুদা বেগম বলেন, ঘটনাস্থলটি বেশ দুর্গম। নিশ্চিত না হয়ে কিছুই বলা যাচ্ছে না।

সর্বশেষ খবর