পাবনার ঈশ্বরদী রেলস্টেশনে ১৯৯৪ সালে তৎকালীন বিরোধীদলীয় নেত্রী শেখ হাসিনাকে বহনকারী ট্রেনে হামলা ও গুলিবর্ষণের মাধ্যমে হত্যাচেষ্টা মামলার মৃত্যুদন্ডপ্রাপ্ত এবং অস্ত্র মামলাসহ একাধিক মামলায় সাজাপ্রাপ্ত ও ওয়ারেন্টভুক্ত পলাতক আসামি জাকারিয়া পিন্টুকে গ্রেফতার করেছে র্যাব।
গত শনিবার দিবাগত রাতে র্যাব-২-এর একটি দল কক্সবাজার জেলার টেকনাফ এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেফতার করে। গতকাল রাজধানীর কারওয়ান বাজারে র্যাব মিডিয়া সেন্টারে ফোর্সের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, বর্তমান প্রধানমন্ত্রীকে হত্যাচেষ্টার মামলায় ২০১৯ সালে মৃত্যুদন্ডের রায় ঘোষণার পর পিন্টু আত্মগোপনে যান। পার্শ্ববর্তী দেশ ভারত ছাড়াও দেশের বিভিন্ন স্থানে আত্মগোপনে ছিলেন তিনি। র্যাব বলছে, পিন্টু ঈশ্বরদী সদরের পিয়াখালী এলাকার মৃত সামাদ গার্ড ওরফে আবদুস সামাদের ছেলে। তিনি ঈশ্বরদী পৌর বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও তৎকালীন ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। গ্রেফতারকৃত জাকারিয়ার নেতৃত্বে ঈশ্বরদীতে আধিপত্য বিস্তার, চাঁদাবাজি, মারামারিসহ বিভিন্ন অরাজকতা চলত। প্রথমে ১৯৮৮ সালে ও পরবর্তীতে বিভিন্ন অপরাধে সম্পৃক্ততায় তার বিরুদ্ধে একাধিক মামলা রুজু হয়। ওইসব মামলায় গ্রেফতার এড়াতে তিনি এলাকা ত্যাগ করে ২০০৪ সাল থেকে ঢাকার মিরপুরে বসবাস শুরু করেন। তার পরিবার ঢাকায় থাকলেও তিনি নিয়মিত ঈশ্বরদীতে যাতায়াত করতেন। তিনি ২০১৫ সালে ঈশ্বরদীতে উপজেলা নির্বাচনে স্বতন্ত্রভাবে অংশগ্রহণ করেন এবং পরাজিত হন। গ্রেফতারকৃতের দেওয়া তথ্যের বরাত দিয়ে র্যাব জানায়, পিন্টু ১৯৯৪ সালে ঈশ্বরদীতে চম্পা হত্যা মামলার অভিযুক্ত আসামি এবং ২০০৯ সালে ঈশ্বরদীতে আজম হত্যা মামলায় অভিযুক্ত হয়ে কারাবরণ করেন। পরবর্তীতে ২০১১ সালে অস্ত্রসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কাছে গ্রেফতার হন। তার বিরুদ্ধে অস্ত্র আইনে কুষ্টিয়া ভেড়ামারা থানায় একটি মামলা হয়। এই মামলায় তিনি তিন মাস কারাভোগ করলেও পরবর্তীতে জামিনে মুক্তি নিয়ে ফেরারি হন। ওই মামলায় আদালত তাকে ১৭ বছরের সশ্রম কারাদন্ড দেন। এ ছাড়াও ২০১২, ২০১৪ এবং ২০১৫ সালে আধিপত্য বিস্তার, বিভিন্ন সন্ত্রাসী ও ধ্বংসাত্মক কর্মকান্ডের জন্য তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন থানায় ১০টি মামলা দায়ের হয়। এ পর্যন্ত তার নামে একটি মত্যুদন্ড ও একটি ১৭ বছরের সশ্রম কারাদন্ডের সাজা পরোয়ানা ছাড়াও বিভিন্ন অপরাধে ছয়টি গ্রেফতারি পরোয়ানা রয়েছে। তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন থানায় মোট ১৯টি মামলা রয়েছে।
