শুক্রবার, ১ জুলাই, ২০২২ ০০:০০ টা

ঝুলে আছে ৭ জঙ্গির ডেথ রেফারেন্স

আরাফাত মুন্না

রাজধানীর কূটনৈতিকপাড়া গুলশানে হোলি আর্টিজান বেকারিতে নজিরবিহীন জঙ্গি হামলার ছয় বছর পূর্ণ হচ্ছে আজ। এ ঘটনায় ২২ জনকে হত্যার দায়ে ২০১৯ সালের ২৭ নভেম্বর সাত জঙ্গিকে মৃত্যুদণ্ড দেন বিচারিক আদালত। এখন এই সাত জঙ্গির মৃত্যুদণ্ড নিশ্চিতকরণ (ডেথ রেফারেন্স অনুমোদন) ঝুলে আছে হাই কোর্টে। আইন অনুযায়ী বিচারিক আদালতের রায়ে আসামির মৃত্যুদণ্ড হলে সেই মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের জন্য উচ্চ আদালতের অনুমোদনের প্রয়োজন হয়। জানতে চাইলে রাষ্ট্রের প্রধান আইন কর্মকর্তা (অ্যাটর্নি জেনারেল) এ এম আমিন উদ্দিন বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, হোলি আর্টিজান মামলার ডেথ রেফারেন্স শুনানির জন্য পেপারবুক প্রস্তুত রয়েছে। খুব শিগগিরই রাষ্ট্রপক্ষ থেকে মামলাটি অগ্রাধিকার ভিত্তিতে শুনানির জন্য প্রধান বিচারপতির কাছে আবেদন করা হবে। তিনি বলেন, এ মামলাটি দেশের ইতিহাসে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি মামলা। বিচারিক আদালত এ মামলায় ঐতিহাসিক রায় দিয়েছেন। আমরাও বিচারিক আদালতের দেওয়া রায় হাই কোর্টেও যেন বহাল থাকে সেই চেষ্টা করব। এ বিষয়ে জানতে চাইলে সুপ্রিম কোর্টের মুখপাত্র ও আপিল বিভাগের রেজিস্ট্রার মোহাম্মদ সাইফুর রহমান বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, বিচারিক আদালত থেকে ডেথ রেফারেন্স হিসেবে নথিপত্র হাই কোর্টে আসার পর প্রধান বিচারপতির অনুমোদন নিয়ে পেপারবুক (রায়সহ মামলার সকল নথি-সংবলিত বই) তৈরির জন্য বিজি প্রেসে পাঠানো হয়। ২০২০ সালেই পেপারবুক প্রস্তুত হয়ে সুপ্রিম কোর্টে চলে এসেছে। বাকি আনুষঙ্গিক কাজ শেষে শুনানির জন্য বিধি অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, বর্তমানে ২০১৬ সালে ফাইল হওয়া ডেথ রেফারেন্স শুনানি হচ্ছে। ঢাকার সন্ত্রাসবিরোধী বিশেষ ট্রাইব্যুনালের বিচারক মজিবুর রহমান ২০১৯ সালের ২৭ নভেম্বর আলোচিত এ মামলার রায় ঘোষণা করেন। নব্য জেএমবির সাত সদস্যকে সন্ত্রাসবিরোধী আইনের ৬(২)(অ) ধারায় দোষী সাব্যস্ত করে সর্বোচ্চ সাজা মৃত্যুদণ্ডের পাশাপাশি ৫০ হাজার টাকা করে অর্থদণ্ড দেওয়া হয় রায়ে। আরও দুটি ধারায় তাদের কয়েকজনকে দেওয়া হয় বিভিন্ন মেয়াদের কারাদণ্ড।  মৃত্যুদণ্ডাদেশপ্রাপ্তরা হলেন- জাহাঙ্গীর হোসেন ওরফে রাজীব গান্ধী, আসলাম হোসেন ওরফে র‌্যাশ, হাদিসুর রহমান, রাকিবুল হাসান রিগ্যান, আবদুস সবুর খান, শরিফুল ইসলাম ওরফে খালেদ ও মামুনুর রশিদ রিপন। অপরাধে সংশ্লিষ্টতা প্রমাণিত না হওয়ায় এ মামলায় বিচারের মুখোমুখি করা আসামি মিজানুর রহমান ওরফে বড় মিজানকে খালাস দেওয়া হয়েছে রায়ে। ২০১৬ সালের ১ জুলাই রাজধানীর গুলশান-২-এ হোলি আর্টিজান বেকারিতে ভয়াবহ হামলা চালায় জঙ্গিরা। এ হামলায় জঙ্গিরা হত্যা করেছিল ২০ জন দেশি-বিদেশি নাগরিককে, যাদের মধ্যে নয়জন ইতালীয়, সাতজন জাপানি, একজন ভারতীয় ও তিনজন বাংলাদেশি। হামলার পরদিন ২ জুলাই সন্ত্রাস দমন আইনে গুলশান থানায় মামলা করা হয়। গুলশান থানার এসআই রিপন কুমার বাদী হয়ে মামলাটি করেন। মামলাটি তদন্ত করেন কাউন্টার টেররিজম ইউনিটের পরিদর্শক হুমায়ুন কবির। হামলায় জড়িত মোট ২১ জনকে চিহ্নিত করা হলেও জীবিত আটজনকেই কেবল আসামি করা হয়।

সর্বশেষ খবর