শনিবার, ২ জুলাই, ২০২২ ০০:০০ টা

এক্সপ্রেসওয়েতে প্রথম দিনই ভয়াবহ যানজট

শুরু হয়েছে টোল আদায়

মুন্সীগঞ্জ ও ভাঙ্গা (ফরিদপুর) প্রতিনিধি

এক্সপ্রেসওয়েতে প্রথম দিনই ভয়াবহ যানজট

ঢাকা ও ফরিদপুরের ভাঙ্গার মধ্যে ৫৫ কিলোমিটার জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মহাসড়কে প্রথম দিনে টোল আদায়ে ধীরগতি দেখা গেছে। টোল প্লাজার সব বুথ চালু না হওয়ায় ভাঙ্গায় যানবাহনের দীর্ঘ জট তৈরি হয়েছে। একই অবস্থা ধলেশ্বরী সেতুর টোল প্লাজায়। এতে ভোগান্তিতে পড়েছেন যানবাহন চালক ও যাত্রীরা। এক্সপ্রেসওয়ে হিসেবে পরিচিত এই মহাসড়কে চলাচলকারী যানবাহনগুলো থেকে গত বৃহস্পতিবার দিনগত রাত ১২টায় (১ জুলাই) টোল আদায় শুরু হয়। ফরিদপুর প্রান্তে ভাঙ্গার বগাইল টোল প্লাজা এলাকায় গতকাল সকালে দুই কিলোমিটারের মতো এলাকাজুড়ে যানবাহনের সারি তৈরি হয়। টোল আদায়ে ধীরগতির কারণে বগাইল টোল প্লাজার সামনে দীর্ঘ সময় ধরে যানবাহনগুলোকে অপেক্ষা করতে হয়। এ বিষয়ে টোল প্লাজার দায়িত্বপ্রাপ্ত এক কর্মকর্তা বলেন, সকালে ১২টি বুথের মধ্যে ৪টি চালু ছিল। বিকাল ৩টার মধ্যে আরও ৪টি চালু করেছি। এখন গাড়ির চাপ অনেকটা কমেছে। গতকাল সকাল ৭টা থেকে বেলা ১১টা পর্যন্ত বিভিন্ন পরিবহনের যাত্রী চালকদের যানজটের কারণে ক্ষোভ প্রকাশ করতে দেখা যায়। মাদারীপুর থেকে ঢাকাগামী চন্দ্রা পরিবহনের একটি বাসের সুপারভাইজার জাকির হোসেন বলেন, এতক্ষণ আমাদের গাড়ি পদ্মা সেতু পার হয়ে যাওয়ার কথা। সেখানে ভাঙ্গার বগাইল টোলপ্লাজায় আটকে আছি প্রায় ৪০ মিনিট। খুলনা থেকে ঢাকাগামী বিএম পরিবহনের সুপারভাইজার রশিদ সরকার (৬১) বলেন, প্রথম দিনই টোল নেওয়ার গতি ধীর। এ কারণে আমাদের দীর্ঘক্ষণ এখানে দাঁড়িয়ে থাকতে হয়েছে। ব্যক্তিগত গাড়িতে ঢাকা থেকে নড়াইলগামী ব্যবসায়ী সাজ্জাত হোসেন (৪০) বলেন, আমরা ১ ঘণ্টারও বেশি সময় এখানে দাঁড়ানো। বগাইল টোল প্লাজার ডেপুটি ম্যানেজার দেলোয়ার হোসেন সকাল ১০টার দিকে বলেন, মোট টোল বুথ ১২টি। আমরা ৪টি চালু করেছি। বাকিগুলো চালুর চেষ্টা চলছে। সব চালু হলেই সমস্যার সমাধান হবে।

এদিকে গতকাল সাপ্তাহিক ছুটির দিন হওয়ায় রাজধানী ঢাকা থেকে পদ্মা সেতুর অভিমুখে গাড়ি আসছে। এ ছাড়া ছুটির দিন থাকায় সেতু হয়ে দক্ষিণাঞ্চলের বিভিন্ন জেলার মানুষ বাড়ি যাচ্ছেন। এতে মহাসড়কে যানবাহনের চাপ বেড়েছে। এর মধ্যে টোল আদায় শুরু হওয়ায় অনেক যানবাহনের চালকরা টোল প্লাজায় দায়িত্বরত ব্যক্তিদের সঙ্গে তর্কে জড়াচ্ছেন। এতে প্রতিটি গাড়ি থেকে টোল আদায় করতে দু-তিন মিনিট সময় লাগছে। এসব কারণে ধলেশ্বরী সেতুর টোল প্লাজা থেকে কেরানীগঞ্জের আবদুল্লাহপুর পর্যন্ত অন্তত কয়েক কিলোমিটার এলাকায় যানজটের সৃষ্টি হয়েছে।

ঢাকার কেরানীগঞ্জ থেকে ভোলাগামী পণ্যবাহী বড় ট্রাকের চালক মো. রমজান মিয়া (২৭) বলেন, টোল আদায়ে জ্যাম লেগেছে। এই জ্যাম আস্তে আস্তে বাড়বে ছাড়া কমবে না। কারণ যতই বেলা বাড়বে ততই গাড়ির চাপ বাড়বে।’ হাসারা হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. আফজাল হোসেন বলেন, আজ (গতকাল) মহাসড়কে গাড়ির অনেক চাপ রয়েছে। মুহূর্তের মধ্যে ঢাকার পথ থেকে মাওয়ামুখী অসংখ্য গাড়ি আসছে। মহাসড়কে টোল পরিশোধ করে যানবাহনগুলোকে যেতে হচ্ছে। তবে গাড়ি চলমান রয়েছে।

সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, ঢাকা-ভাঙ্গা ৫৫ কিলোমিটার এই এক্সপ্রেসওয়ের নাম দেওয়া হয়েছে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মহাসড়ক। পদ্মা সেতু পার হয়ে শরীয়তপুরের জাজিরা এলাকা থেকে ভাঙ্গা পর্যন্ত ২৩ কিলোমিটার এই মহাসড়ক ব্যবহার করলে একটি বড় বাসকে দিতে হবে ২০০ টাকা, মিনিবাস ১১০ টাকা, মাইক্রোবাস ৯০ টাকা, প্রাইভেট কার ৫৫ টাকা, মোটরবাইক ১০ টাকা। এ ছাড়া ট্রাকের ক্ষেত্রে ট্রেইলর ট্রাকের (সবচেয়ে বড় ট্রাক) টোল ধরা হয় ৬৭৫ টাকা, ভারী ট্রাকের ক্ষেত্রে ৪৪০ টাকা এবং মাঝারি আকার ট্রাকের ক্ষেত্রে ২২০ টাকা দিতে হবে।

সর্বশেষ খবর