বুধবার, ৬ জুলাই, ২০২২ ০০:০০ টা

ইভিএম একটি নিকৃষ্ট যন্ত্র

নিজস্ব প্রতিবেদক

ইভিএম একটি নিকৃষ্ট যন্ত্র

বদিউল আলম মজুমদার

সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) সম্পাদক ড. বদিউল আলম মজুমদার বলেছেন, ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) একটা নিকৃষ্ট যন্ত্র, এটা প্রতিষ্ঠিত। কুমিল্লা সিটি করপোরেশন নির্বাচনে ইভিএম কাঠগড়ায় ছিল। ইভিএম বিষয়ে অনেক প্রশ্ন উঠেছে। যে কোনো যন্ত্র যা সফটওয়্যার দিয়ে পরিচালিত হয়, তাতে কারসাজি করা যেতে পারে। যারা প্রোগ্রামিং করেন তারাও কারসাজি (ভোট ডাকাতি) করতে পারেন। আবার যেহেতু নির্বাচন কর্মকর্তাদের ওভার রাইটিংয়ের ক্ষমতা দেওয়া আছে, তারাও কারসাজি করতে পারেন।

গতকাল ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে কুমিল্লা সিটি করপোরেশনের নবনির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের তথ্যের বিশ্লেষণ-সংক্রান্ত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন। সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন সুজন কেন্দ্রীয় নির্বাহী সদস্য রোবায়েত ফেরদৌস এবং সুজন জাতীয় কমিটির সদস্য একরাম হোসেন। লিখিত বক্তব্য দেন সুজন-এর কেন্দ্রীয় সমন্বয়কারী দিলীপ কুমার সরকার। 

বদিউল আলম মজুমদার বলেন, আমার কাছে বড় প্রশ্ন নির্বাচন কমিশনের সক্ষমতা। নির্বাচন কমিশন তাদের সক্ষমতা প্রদর্শন করে আইনকানুন বিধিবিধান প্রয়োগের মাধ্যমে। কুমিল্লা সিটি করপোরেশন নির্বাচনে দেখা গেছে, চুনোপুঁটিদের ক্ষেত্রে তারা আচরণবিধি লঙ্ঘনের বিষয়ে আইন প্রয়োগ করেছেন, রাঘব বোয়ালদের ক্ষেত্রে তারা আইন প্রয়োগ করতে ব্যর্থ হয়েছে। তারা আত্মসমর্পণ করেছে। নির্বাচন কমিশন যদি আত্মসমর্পণ করে, তাহলে নাগরিকরা যাবে কোথায়। প্রধান নির্বাচন কমিশনার এবং অন্যান্য কমিশনার কতগুলো বিষয়ে পরস্পরবিরোধী এবং অসংলগ্ন বক্তব্য দিয়েছেন। এর মাধ্যমে নির্বাচন কমিশন তাদের শপথ ভঙ্গ করেছে বলে আমাদের আশঙ্কা। সুজন সম্পাদক বলেন, জাতীয় নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহৃত হয়েছিল ছয়টি আসনে আর ২৯৪টি আসনে নির্বাচন হয়েছিল পেপার ব্যালটে। নির্বাচন কমিশনের তথ্যানুযায়ী ২৯৪ আসনে যেখানে পেপার ব্যালটে ভোট হয়েছে, সেখানে ভোট পড়েছে ৮১ শতাংশ। অন্যদিকে যে ছয় আসনে ইভিএমে ভোট হয়েছে সেখানে ভোট পড়েছিল ৫১ শতাংশ। অর্থাৎ ৩০ শতাংশ পার্থক্য, তার মানে যেখানে পেপার ব্যালটে ভোট হয়েছে সেখানে কারসাজি করা হয়েছে, না হয় যেখানে ইভিএমে ভোট হয়েছে, সেখানে মানুষকে ভোটাধিকারবঞ্চিত করা হয়েছে। তিনি আরও বলেন, ইভিএম যদি মানুষকে ভোটাধিকার থেকে বঞ্চিত করে, সেই ইভিএম ব্যবহারের যৌক্তিকতা কী? ২০১৭ সালে কুমিল্লায় পেপার ব্যালটে ভোট পড়েছিল ৬৪ শতাংশ। এবারে সেখানে ভোট পড়েছে ৫৯ শতাংশ। ইভিএমে ভোট দিতে গিয়ে, বায়োমেট্রিক ছাপ না মেলায় অনেকে বিরক্ত হয়ে চলে গেছেন। এখানে ইভিএম মানুষকে ভোটাধিকার থেকে বঞ্চিত করেছে। দিলীপ কুমার সরকার লিখিত বক্তব্যে কুমিল্লায় বিজয়ীদের শিক্ষাগত যোগ্যতার চিত্র তুলে ধরে বলেন, ৩৭ জন জনপ্রতিনিধির মধ্যে যে ৩৬ জনের তথ্য পাওয়া গেছে তাদের মধ্যে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর ডিগ্রিধারীর সংখ্যা ১৭ জন (৪৭.২২%)। পক্ষান্তরে এসএসসি ও তার চেয়ে কম শিক্ষাগত যোগ্যতাসম্পন্ন জনপ্রতিনিধির সংখ্যা ৯ জন (২৫%)। রোবায়েত ফেরদৌস বলেন, কুমিল্লা নির্বাচন ছিল এই কমিশনের প্রথম পরীক্ষা। প্রথম পরীক্ষাতেই তারা অনেক প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে। ইভিএমে প্রিন্টআউট না থাকার কারণে পুনঃগণনার সুযোগ নেই।

সর্বশেষ খবর