শনিবার, ৯ জুলাই, ২০২২ ০০:০০ টা
দুই মহাসড়কে দুই রূপ

উত্তরে ভোগান্তি দক্ষিণে স্বস্তি

প্রতিদিন ডেস্ক

ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের কালিয়াকৈরে যানজটের কারণে থেমে থেমে চলছে বাস। ভোগান্তিতে পড়েছেন উত্তরাঞ্চলগামী মানুষ, দাউদকান্দি টোল প্লাজায় টোল গ্রহণে ধীরগতির কারণে কিছু সময়  যানজট লেগে যায়। এতে কয়েক কিলোমিটার যানজটের সৃষ্টি হয়। অপরদিকে এবারের ঈদযাত্রায় দক্ষিণাঞ্চরের যাত্রীদের নেই ভোগান্তি। স্বস্তিতেই বাড়ি ফিরছেন যাত্রীরা। এতে উচ্ছ্বসিত তারা। আমাদের প্রতিনিধিদের পাঠানো খবর-

কালিয়াকৈর (গাজীপুর) : গাজীপুরের কালিয়াকৈরে চন্দ্রা এলাকায় সকাল থেকে ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কে লাখ লাখ মানুষের ঢল। থেমে থেমে যানবাহন চলাচল করছে। এতে ভোগান্তিতে পড়েছেন যাত্রীরা। তবে  চন্দ্রা থেকে নবীনগর ও চন্দ্রা থেকে মির্জাপুর পর্যন্ত মহাসড়কে থেমে থেমে যানজটের সৃষ্টি হয়েছে। এতে চরম দুর্ভোগে পড়েছেন যাত্রীরা। অপরদিকে গণপরিবহনে দ্বিগুণ ভাড়া থাকায়  পিকআপ ও ট্রাকযোগ গন্তব্যে যাচ্ছেন যাত্রীরা। সালনা হাইওয়ে পুলিশের ওসি মো. ফিরোজ হোসেন জানান, মহাসড়কে যানবাহনের চাপ বেড়েছে তাই ধীরগতিতে চলছে যানবাহন।

মাদারীপুর : এবারের ঈদযাত্রায় দক্ষিণাঞ্চরের যাত্রীদের নেই ভোগান্তি। স্বস্তিতেই বাড়ি ফিরছেন তারা। এতে তারা উচ্ছ্বসিত। দক্ষিণাঞ্চলের অধিকাংশ মানুষের যাতায়াতের ভরসা ছিল শিমুলিয়া-কাঁঠালবাড়ি নৌরুট। বিশেষ করে বর্ষা মৌসুমে ঝড়-বৃষ্টি উপেক্ষা করেই আমাদের শঙ্কা নিয়েই নৌপথে ঢাকা থেকে গ্রামে আসতে হতো। তবে এ বছর পদ্মা সেতু চালু হওয়ায় শঙ্কাবিহীন ভ্রমণে বাড়ি যাচ্ছেন তারা। নাহিদ হোসেন নামে এক তরুণ বলেন, ‘গত বছরও কোরবানির ছুটিতে দ্যাশে আইছিলাম। তবে ভোগান্তির কথা আর কইমু কি, ১০টা ঘণ্টা যুদ্ধ কইরা আইতে হইছে আমাগো। আগে ছুটি পাইলেই বাড়ি যাওয়ার যেই কষ্ট, সেই কথা মনে পড়লেই টেনশনে পইড়া যাইতাম। এইবার তো চাইর ঘণ্টায় দ্যাশে আইলাম।’

কুমিল্লা : ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কুমিল্লা অংশে সকাল থেকে যানবাহনের চাপ লক্ষ্য করা গেছে। তবে এ চাপ কুমিল্লা অংশের দাউদকান্দি টোলপ্লাজার দুই কিলোমিটার এলাকায় বেশি প্রভাব ফেলেছে। শুক্রবার বিকাল পর্যন্ত সড়কের কোথাও যানজটের খবর পাওয়া যায়নি। তবে সকালের দিকে দাউদকান্দি টোলপ্লাজা এলাকায় ধীরগতি ছিল। দাউদকান্দি হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জহুরুল হক বলেন, কুমিল্লা অংশে কোনো যানজট নেই। গত রাতে যে চাপ ছিল তা আমরা ভোরের আগেই কাভার করেছি। টোলপ্লাজায় সকালের দিকে চাপ ছিল।

চট্টগ্রাম : চট্টগ্রাম নগরের বহদ্দার হাট থেকে নতুন ব্রিজ পর্যন্ত বাসে যেতে সময় লাগে মাত্র ১৫ থেকে ২০ মিনিট। কিন্তু গতকাল শুক্রবার সকালে লেগেছে প্রায় এক ঘণ্টা। যানবাহন চলেছে থেমে থেমে। কখনো দীর্ঘ সময় ধরে চাকা বন্ধ। দীর্ঘ যানজটে আটকে থাকতে হয়েছে যাত্রীদের। পোহাতে হয়েছে দুর্ভোগ। এভাবে পথে পথে চরম দুর্ভোগ ও ভোগান্তি মাড়িয়েই ঈদে যেতে হচ্ছে বাড়িতে। ফলে নারী-শিশু ও পরিবারের বৃদ্ধ সদস্যদের নিয়ে ভোগান্তির মুখোমুখি হতে হচ্ছে বাড়ি ফেরা মানুষদের। সঙ্গী হয় অন্তহীন দুর্ভোগ-ভোগান্তি। তবুও প্রাণের টানে বাড়ি যায় মানুষ।

মানিকগঞ্জ : পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া নৌরুটে মানুষের চাপ বাড়লেও যানবাহনের চাপ কম। ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে লোকজন লোকাল গাড়িতে পাটুরিয়া ঘাটে আসছে। দূরপাল্লার গাড়ি কম থাকায় ফেরিতে যানবাহনের অতিরিক্ত চাপ নেই। ঘাটে পর্যাপ্ত ফেরি ও লঞ্চ থাকার কারণে ভোগান্তি ছাড়াই লোকজন বাড়ি ফিরতে পারছেন। তবে যাত্রীদের অভিযোগ বাসে অতিরিক্ত ভারা আদায় করা হচ্ছে। বিআইডব্লিউটিসি আরিচা কার্যালয়ের উপমহাব্যবস্থাপক শাহ মো. খালেদ নেওয়াজ বলেন, ঈদে ঘরমুখো মানুষের কিছুটা চাপ থাকলেও পর্যাপ্ত ফেরি থাকায় দুর্ভোগ ছাড়াই যাত্রী ও যানবাহন  পারাপার হচ্ছে। দৌলতদিয়া নৌরুটে ২১টি ফেরির মধ্যে ১৯টি ফেরি চলাচল করছে।

ভাঙ্গা (ফরিদপুর) : জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মহাসড়কের (ঢাকা-ভাঙ্গা এক্সপ্রেসওয়ে) শেষ প্রান্তে দক্ষিণাঞ্চলের প্রবেশ মুখে ঢাকা-বরিশাল মহাসড়কের ভাঙ্গা বাজার বাসস্ট্যান্ডে শুক্রবার সকাল থেকেই যানজট লেগে আছে। ঈদুল আজহা উপলক্ষে ঘরমুখো মানুষের ভিড়ের কারণেই এ যানজটের সৃষ্টি হয়েছে। সকাল থেকেই এক কিলোমিটারের অধিক জায়গাজুড়ে এ জট রয়েছে।

টাঙ্গাইল : বঙ্গবন্ধু সেতুতে সড়ক দুর্ঘটনার কারণে এক ঘণ্টা ৪০ মিনিট টোল আদায় বন্ধ থাকায় ঢাকা-টাঙ্গাইল-বঙ্গবন্ধু সেতু মহাসড়কে শুক্রবার ভোর থেকে সেতুর পূর্বপাড়ে এলেঙ্গা পর্যন্ত অনন্ত ১৪ কিলোমিটার এলাকায় যানজটের সৃষ্টি হয়। যানজটের কারণে ঘরমুখো মানুষ বিশেষ করে নারী ও শিশুরা বিপাকে পড়েছেন। গন্তব্যে যেতে দুই থেকে তিন গুণ বেশি সময় লাগছে।

রাজবাড়ীরাজবাড়ী দৌলতদিয়া প্রান্তে ঘরে ফেরা মানুষের ভোগান্তি হয়েছে। মানিকগঞ্জের পাটুরিয়া থেকে ছেড়ে আসার পর যানবাহনের স্বল্পতা ও অতিরিক্ত ভাড়ার কারণে এ ভোগান্তি সৃষ্টি হয়েছে। রাজবাড়ী বাস টার্মিনাল থেকে ফরিদপুর-রাজবাড়ী-পাংশা পর্যন্ত কোনো বাসকে যাত্রী পরিবহন করতে দেখা যায়নি।

দৌলতদিয়া বাস টার্মিনাল থেকে বাসগুলো দূরের যাত্রী পরিবহন করার কারণে এ ভোগান্তি তীব্র হয়েছে। টার্মিনালে থাকা যাত্রীরা অভিযোগ করে বলেন, বাস মালিক সমিতি একটি সিন্ডিকেট তৈরি করেছেন। তারা ফরিদপুর-পাংশা-মাগুরার যাত্রী পরিবহন করছেন না। ফলে ঝুঁকি নিয়ে ব্যাটারিচালিত ইজিবাইক ও মাহেন্দ্রতে করে যেতে হচ্ছে। তারা অতিরিক্ত ভাড়া নিচ্ছেন।

সর্বশেষ খবর