রবিবার, ২৪ জুলাই, ২০২২ ০০:০০ টা

ক্ষমতা কেন্দ্রীকরণ গণতন্ত্রের জন্য অশনিসংকেত

নিজস্ব প্রতিবেদক

ক্ষমতা কেন্দ্রীকরণ গণতন্ত্রের জন্য অশনিসংকেত

তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা ড. আকবর আলি খান বলেছেন, সরকারের ওপর জনগণের নিয়ন্ত্রণ না থাকলে সেটিকে গণতন্ত্র বলা যায় না। ক্ষমতার কেন্দ্রীকরণ গণতন্ত্রের জন্য অশনিসংকেত। যে দেশে জনগণ সরকারকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারে, সেটিই হলো গণতন্ত্র। যে দেশে সরকারের ওপর জনগণের নিয়ন্ত্রণ নেই, সেটি ভোট হোক আর যা-ই হোক, তাকে গণতন্ত্র বলা যায় না। গতকাল রাজধানীর জাতীয় প্রেস ক্লাবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য এমাজউদ্দীন আহমদের দ্বিতীয় মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে এক স্মারক বক্তৃতায় ড. আকবর আলি খান এসব কথা বলেন। অধ্যাপক এমাজউদ্দীন আহমদ রিসার্চ সেন্টার আয়োজিত অনুষ্ঠানটি পরিচালনা করেন কবি আবদুল হাই শিকদার। পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. আবদুল লতিফ মাসুমের সভাপতিত্বে এতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিসংখ্যান বিভাগের অধ্যাপক ড. লুৎফর রহমান, অধ্যাপক ড. মাহবুব উল্লাহ, অধ্যাপক নাজমুল হাসান কলিমুল্লাহ প্রমুখ বক্তব্য রাখেন। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক দিল রওশন জিন্নাত আরা নাজনীন।

ড. আকবর আলি খান বলেন, ঔপনিবেশিক শাসনামলে নানা সংকট সত্ত্বেও শিক্ষার মান অনেক ভালো ছিল। ঔপনিবেশিক শিক্ষাব্যবস্থায়ই এমাজউদ্দীন আহমদের শিক্ষাজীবন অতিবাহিত হয়। সেই শিক্ষাব্যবস্থায় শুধু দুর্বলতাই ছিল না, তার কতগুলো সবল দিকও ছিল। সে সময়ের পাঠ্যক্রম ছিল পুরনো ধরনের, পাঠ্যপুস্তক ও শিক্ষকের অভাব ছিল, কিন্তু শিক্ষার মান অত্যন্ত উঁচু ছিল।

ওই সময়ের সঙ্গে বর্তমান শিক্ষাব্যবস্থার তুলনা করে তিনি বলেন, ‘আজ আমাদের অবকাঠামোর অভাব নেই, দালানকোঠা-বিশ্ববিদ্যালয়ে ভরে গেছে। বই, লাইব্রেরি, শিক্ষকের অভাব নেই। শোনা যায়, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে কোনো কোনো বিভাগে এত শিক্ষক আছেন যে পড়ানোর মতো কোর্স নেই এবং ভাগাভাগি করে একজন শিক্ষক সারা বছরে একটি কোর্স পড়াতে পারলে নিজেকে সৌভাগ্যবান মনে করেন। অথচ এমাজউদ্দীন সাহেব যখন পড়াশোনা করেছেন, তখন শিক্ষকরা দিনে তিন-চারটা করে ক্লাস নিতেন। কিন্তু পড়াশোনার মান কমেনি। ওই সময় নিয়মিত বিশ্ববিদ্যালয়, কলেজ ও হল সংসদের নির্বাচন হতো। কিন্তু এখন বছরের পর বছর বিশ্ববিদ্যালয়ের হলে কোনো নির্বাচন হয় না, কলেজগুলোয় নির্বাচন হয় না এবং গণতন্ত্রের প্রতি ভালোবাসা সৃষ্টি দূরের কথা, গণতন্ত্র সম্পর্কে আমাদের ছাত্রদের মনে বিভিন্ন প্রশ্ন তুলে ধরা হয়।’

আকবর আলি খান বলেন, ‘উদারনৈতিক গণতন্ত্রে বিশ্বাসী ছিলেন এমাজউদ্দীন আহমদ। সবার সঙ্গে তার সুসম্পর্ক ছিল। তিনি সমঝোতার রাজনীতি করতেন। কখনো সংঘাতের রাজনীতি করতেন না। সবাইকে একসঙ্গে কীভাবে আনা যায় সে জন্য তিনি সারা জীবন সাধনা করেছেন। এ জন্য তিনি শেরেবাংলা এ কে ফজলুল হক, মজলুম জননেতা মওলানা ভাসানী ও হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দীকে একই সভায় একই কাতারে আনতে পেরেছিলেন। আর এটা একমাত্র এমাজ ভাইয়ের পক্ষেই সম্ভব হয়েছিল।’

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর