শিরোনাম
মঙ্গলবার, ২ আগস্ট, ২০২২ ০০:০০ টা

ফের হচ্ছে যুগ্ম সচিব পদে পদোন্নতি

উবায়দুল্লাহ বাদল

প্রশাসনে আবারও যুগ্ম সচিব পদে পদোন্নতি দেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু করেছে সরকার। এবারের পদোন্নতিতে নিয়মিত হিসেবে বিসিএসের ২১তম ব্যাচের কর্মকর্তাদের বিবেচনায় নেওয়া হচ্ছে।

পদোন্নতি প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে গত ২০ জুলাই মন্ত্রিপরিষদ সচিবের সভাপতিত্বে সুপিরিয়র সিলেকশন বোর্ডের (এসএসবি) বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। বৈঠকে পদোন্নতি দেওয়ার জন্য প্রত্যেক কর্মকর্তার কর্মজীবনের সব নথিপত্র আলাদাভাবে পর্যালোচনা করা হয়। শোকের মাস আগস্টে এসএসবির বৈঠক আর নাও হতে পারে। সেপ্টেম্বরে আরও কয়েক দফা বৈঠক করে পদোন্নতিযোগ্য কর্মকর্তাদের প্রয়োজনীয় নম্বর, চাকরিজীবনের শৃঙ্খলা, দুর্নীতির বিষয়সহ সামগ্রিক বিষয় পর্যালোচনা করে নামের তালিকা চূড়ান্ত করা হবে। বড় ধরনের কিছু না ঘটলে আগামী অক্টোবরে এ পদোন্নতির প্রজ্ঞাপন জারি করা হতে পারে। এ নিয়ে দায়িত্বশীল কোনো কর্মকর্তা নাম প্রকাশ করে কথা বলতে রাজি হননি। জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, সর্বশেষ গত ২৯ জুন রাতে ৮৪ জন উপসচিবকে পদোন্নতি দেয় সরকার। ফলে বর্তমানে ৩৩০টি অনুমোদিত যুগ্ম সচিব পদের বিপরীতে ৭২৪ জন কর্মকর্তা রয়েছেন। তারপরও বিসিএস ২১তম ব্যাচের ১৮১ জন কর্মকর্তার মধ্যে ১৫৩ জন পদোন্নতির যোগ্যতা অর্জন করে অপেক্ষায় রয়েছেন। এ ছাড়া সদ্য বিলুপ্ত ইকোনমিক ক্যাডারের নয়জন কর্মকর্তাও পদোন্নতির যোগ্যতা অর্জন করেছেন। এর বাইরে বিভিন্ন সময়ে পদোন্নতিবঞ্চিত (লেফট আউট) এক শ’র মতো কর্মকর্তা এবং অন্যান্য ক্যাডারের দেড় শ কর্মকর্তাকেও বিবেচনায় নেওয়া হতে পারে। ফলে পদোন্নতির জন্য পদ না থাকলেও প্রশাসনের ৪০০-এর বেশি কর্মকর্তার তথ্য-উপাত্ত বিশ্লেষণ করতে হবে এসএসবিকে। এর মধ্য থেকে সর্বোচ্চ দেড় শ কর্মকর্তাকে পদোন্নতি দেওয়া হতে পারে। ২১তম ব্যাচকে গত ২৯ জুনেই ২০তম ব্যাচের সঙ্গে পদোন্নতি দেওয়ার উদ্যোগ ছিল সরকারের। কিন্তু ব্যাচের একটি অংশ মনে করে অন্য ব্যাচের সঙ্গে পদোন্নতি হলে ২০তম ব্যাচের মতো দুই দফায় পদোন্নতি দেওয়া হবে। প্রথম দফায় যারা পদোন্নতি পাবেন তারা এগিয়ে যাবেন, যারা বাদ পড়বেন তারা পিছিয়ে পড়বেন। এ নিয়ে ব্যাচের ভিতরে দ্বিধা-বিভক্তি দেখা দেয়। ব্যাচের প্রভাবশালীরা স্ব স্ব অবস্থান থেকে পদোন্নতির জন্য তদবির শুরু করেন। পরে ওই সিদ্ধান্ত হতে সরে আসে সরকার। নাম প্রকাশ না করার শর্তে এসএসবি-সংশ্লিষ্ট একজন কর্মকর্তা জানান, প্রশাসনের পদোন্নতির ক্ষেত্রে সরকার এখন অনেকটাই উদারনীতি গ্রহণ করেছে। বড় ধরনের অভিযোগ বা বিভাগীয় মামলা না থাকলে প্রায় সব কর্মকর্তাকেই যোগ্যতা অনুযায়ী মূল্যায়ন করা হচ্ছে। বিসিএস ২১তম ব্যাচের কর্মকর্তাদের পদোন্নতি দিতে এরই মধ্যে তাদের তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ করা হয়েছে। গত ২০ জুলাই এসএসবির বৈঠক হয়েছে। সেখানে প্রাথমিক আলোচনা হয়েছে। আরও একাধিক বৈঠক করতে হবে। জনপ্রশাসন সচিব দেশের বাইরে রয়েছেন। এ মাসের ১২ তারিখে আসার কথা রয়েছে। এরপর জাতীয় শোক দিবসের কর্মসূচি রয়েছে। সব কিছু মিলিয়ে আগস্টে আর এসএসবির বৈঠক নাও হতে পারে। সেপ্টেম্বরে বৈঠক করে অক্টোবরের দিকে পদোন্নতি দেওয়া হতে পারে। স্থায়ী পদ না থাকায় এমনিতেই অনেক যুগ্ম সচিবকে নিচের পদে কাজ করতে হচ্ছে, তার ওপর নতুন করে পদোন্নতি দেওয়া হলে তাদেরও বর্তমান কর্মস্থলে ইনসিটু (উপসচিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করা স্থানে) থাকতে হবে। অর্থাৎ পদোন্নতি পেলেও তাদের আগের পদেই কাজ করতে হবে। ‘সরকারের উপসচিব, যুগ্ম সচিব, অতিরিক্ত সচিব ও সচিব পদে পদোন্নতি বিধিমালা-২০০২’-এ বলা হয়েছে, যুগ্ম সচিব পদে পদোন্নতির ক্ষেত্রে ৭০ শতাংশ প্রশাসন ক্যাডারের কর্মকর্তাদের ও ৩০ শতাংশ অন্যান্য ক্যাডারের উপসচিব পদে কর্মরতদের বিবেচনায় নিতে হবে। বিধিমালা অনুযায়ী, উপসচিব পদে কমপক্ষে পাঁচ বছর চাকরিসহ সংশ্লিষ্ট ক্যাডারের সদস্য হিসেবে কমপক্ষে ১৫ বছরের চাকরির অভিজ্ঞতা বা উপসচিব পদে কমপক্ষে তিন বছর চাকরিসহ ২০ বছরের অভিজ্ঞতা থাকলে কোনো কর্মকর্তা যুগ্ম সচিব পদে পদোন্নতির জন্য বিবেচিত হন।

 

সর্বশেষ খবর