কুষ্টিয়া থেকে যাত্রী নিয়ে নারায়ণগঞ্জগামী ঈগল পরিবহনের একটি চলন্ত বাসে এক নারীকে গণধর্ষণ ও যাত্রীদের সর্বস্ব লুটে নেওয়ার ঘটনা ঘটেছে। মঙ্গলবার মধ্যরাতে এ ঘটনা ঘটে। বুধবার ভোরে ডাকাতরা টাঙ্গাইলের মধুপুর উপজেলার রক্তিপাড়ায় বাসটি রাস্তার পাশে ফেলে রেখে পালিয়ে যায়। এ ঘটনায় ধর্ষিত ওই নারী গতকাল বিকালে মধুপুর থানায় ধর্ষণ ও ডাকাতি মামলা করেছেন। পুলিশ জানায়, মঙ্গলবার রাতে কুষ্টিয়া থেকে বাসটি ২৪ জন যাত্রী নিয়ে চট্টগ্রামের উদ্দেশে রওনা হয়। রাত ১১টার দিকে সিরাজগঞ্জের একটি হোটেলে খাবারের জন্য বিরতি নেয় বাসটি। সেখান থেকে ৫ মিনিট যাওয়ার পর মূল সড়ক থেকে প্রথমে তিনজন যাত্রী ওঠেন। কিছু দূর যাওয়ার পর ওঠেন আরও চারজন। নির্ধারিত স্টেশন ছেড়ে কিছু দূর যাওয়ার পর আরও তিনজন ওঠেন। ১২টার দিকে যাত্রীরা ঘুমানোর এক পর্যায়ে টাঙ্গাইলের নাটিয়াপাড়া পৌঁছলে ডাকাতরা হঠাৎ পুরো বাসের নিয়ন্ত্রণ নেয়। কিছু দূর যাওয়ার পর বাসটি ঘুরিয়ে তারা কালিহাতী হয়ে মধুপুরে আসে। এরই মধ্যে ডাকাতরা যাত্রীদের সবার হাত-মুখ ও চোখ বেঁধে জিম্মি করে ফেলে। এরপর তাদের মোবাইল, টাকা, স্বর্ণালংকার লুটে নেয়। এরপর তারা গাড়িতে থাকা এক নারীকে ধর্ষণ করে। ভোর সাড়ে ৩টার দিকে মধুপুর রক্তিপাড়া জামে মসজিদের পাশে বাসটি বালুর ঢিবির মধ্যে উল্টিয়ে ফেলে পালিয়ে যায় ডাকাতরা। এ পুরো সময় বাসটি চলন্ত অবস্থায় ছিল। বাসযাত্রীরা বলেন, টানা তিন ঘণ্টা যাত্রীদের ওপর চালানো নির্যাতনের পর রক্তিপাড়ায় এসে বাসটির গতি থামিয়ে ডাকাতরা নেমে যায়। মুহূর্তের মধ্যেই চোখ-মুখ ও হাত বাঁধা যাত্রীদের নিয়ে বাসটি রাস্তার পাশের বালুর ঢিবিতে কাত হয়ে পড়ে দুর্ঘটনার শিকার হয়। স্থানীয়রা এগিয়ে এসে তাদের উদ্ধার করেন।

এ ব্যাপারে টাঙ্গাইলের পুলিশ সুপার সরকার মোহাম্মদ কায়সার বলেন, ‘ঈগল পরিবহনের ওই বাসে যাত্রী সেজে ডাকাতরা ওঠে। পরে তারা টাঙ্গাইল সীমান্তে এসে এক নারীকে ধর্ষণ ও যাত্রীদের সর্বস্ব লুটে নেয়। এ ব্যাপারে ডিবিসহ একাধিক টিম মাঠে কাজ করছে। আশা করি শিগগিরই আসামিদের গ্রেফতার করা যাবে।’ তিনি আরও জানান, ভুক্তভোগী ওই নারী টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালের রয়েছেন। আগামীকাল (বৃহস্পতিবার) তার ডাক্তারি পরীক্ষা সম্পন্ন হবে। মধুপুর থানার ওসি মোহাম্মদ মাজহারুল আমিন বলেন, ‘এ ঘটনায় ভুক্তভোগী নারী থানায় ধর্ষণ ও ডাকাতি মামলা করেছেন। অজ্ঞাতদের আসামি করা হয়েছে। ওই নারীর বয়স ২৫ থেকে ২৬ বছর হবে। আশা করি শিগগিরই আসামিদের গ্রেফতার করা যাবে।’