শুক্রবার, ৫ আগস্ট, ২০২২ ০০:০০ টা

সংকটে থাকা ব্যাংক চিহ্নিত

নিজস্ব প্রতিবেদক

সংকটে থাকা ব্যাংক চিহ্নিত

বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আবদুর রউফ তালুকদার বলেছেন, আমানতকারীদের অর্থ নিরাপদ রাখতে কাজ করছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। দেশের অর্থনীতির চালিকাশক্তি হিসেবে ব্যাংক খাতের কার্যক্রম খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এই খাতের উন্নয়নের জন্য কেন্দ্রীয় ব্যাংক সচেতনভাবে কাজ শুরু করেছে। সক্ষমতা, আইন, আমানত ইত্যাদি বিবেচনায় নিয়ে সংকটে থাকা ১০ ব্যাংককে চিহ্নিত করা হয়েছে। এসব ব্যাংকের পরিস্থিতি উন্নয়নে কেন্দ্রীয় ব্যাংক কাজ করছে। গতকাল কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন। সংবাদ সম্মেলনে ডেপুটি গভর্নর আহমেদ জামাল, কাজী ছাইদুর রহমান, আবু ফরাহ মো. নাছের, এ কে এম সাজেদুর রহমান খান, বিএফআইইউ প্রধান মাসুদ বিশ্বাস, নির্বাহী পরিচালক ও প্রধান অর্থনীতিবিদ হাবিবুর রহমান, নির্বাহী পরিচালক মো. সিরাজুল ইসলাম ও সহকারী মুখপাত্র জি এম আবুল কালাম আজাদসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। রউফ তালুকদার বলেন, একটি ব্যাংক দুর্বল হলে অন্য ব্যাংকের ওপর এর প্রভাব পড়ে। তাই আমানতকারীদের কথা চিন্তা করে এসব ব্যাংককে সাপোর্ট দেওয়া হবে। আমাদের উদ্দেশ্য কোনো ব্যাংক বন্ধ বা দুর্বল করা নয়, সব ব্যাংককে সবল করা। এ জন্য চারটি ইন্ডিকেটর (শ্রেণিকৃত ঋণের মাত্রা, মূলধনের পর্যাপ্ততা, ঋণ-আমানত অনুপাত ও প্রভিশনিং) বিবেচনা করে ১০টি ব্যাংকের তালিকা করেছি। তিনি আরও বলেন, আমাদের লক্ষ্য ব্যাংকগুলোকে উন্নতির মাধ্যমে অর্থনৈতিকভাবে শক্তিশালী করা। কয়েকটি ব্যাংকের সঙ্গে আমরা আলোচনায় বলেছি, ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষকে স্বাধীনভাবে কাজ করতে দিতে হবে। চিহ্নিত দুর্বল ব্যাংকগুলোকে তাদের সমস্যা সমাধানকল্পে বাংলাদেশ ব্যাংক ওয়ান-টু-ওয়ান ভিত্তিতে আলোচনা কার্যক্রম শুরু করেছি। এ ক্ষেত্রে ব্যাংকগুলো তিন বছর মেয়াদি বিজনেস প্ল্যান দেবে, যার ক্রম অগ্রগতি বাংলাদেশ ব্যাংকের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা পর্যবেক্ষণ করবেন। তিনি আরও বলেন, ঋণের সুদহার ৯ শতাংশ থেকে আপাতত বাড়ানো হবে না। মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে আয়কর বাড়াতে হবে। তাতে মানুষ খরচ কম করবে। বাজারে কম  কেনাকাটা করবে। এতে মুদ্রাস্ফীতির হার কমে যাবে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পক্ষ থেকে কনজ্যুমার লোন কমানোর বিষয়ে নির্দেশনা আছে। এতে বাজারে সরবরাহ বাড়বে। মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে আসবে। গভর্নর বলেন, শেয়ারবাজার উন্নয়নের ক্ষেত্রে আমরা নতুন কিছু পদক্ষেপ নিয়েছি। সরকারি বন্ড শিগগিরই সেকেন্ডারি মার্কেটে লেনদেন হবে। বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন পুঁজিবাজার উন্নয়নে ভালো কাজ করছে। তাদের নীতি সহায়তার জন্য যা দরকার আমরা দেব। ব্যাংকগুলোর এক্সপোজার লিমিট নিয়ে প্রায় ১০-১২ বছরের একটা সমস্যা ছিল। এর সমাধান হয়ে গেছে। সরকারি বন্ডগুলো সেকেন্ডারি মার্কেটে বিক্রি হবে। ভালো কোম্পানি বন্ড নিয়ে আসুক আমরা তা চাই। সেকেন্ডারি মার্কেটকে কার্যকর করতে এবং নতুন নতুন বন্ড আনতে যত ধরনের সহায়তা দরকার তা কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পক্ষ থেকে করা হবে। গভর্নর বলেন, দেশের আমদানি কমে আসার প্রবণতা দেখা যাচ্ছে। মার্কিন ডলারের ব্যবহার রয়েছে- এমন অন্যান্য সূচকেও এর চাহিদা কমে আসবে এমন ইঙ্গিত মিলছে। দুই মাসের মধ্যে দেশের মুদ্রাবাজারে ডলারের মূল্য স্থিতিশীল হবে। এটি হলে তখন বাজার মূল্যের ভিত্তিতে আন্তঃব্যাংক পর্যায়ে ডলারের বিনিময় হার নির্ধারিত হবে। বর্তমানে আন্তঃব্যাংক লেনদেন নির্ধারণে বাংলাদেশ ব্যাংক হস্তক্ষেপ করছে।  

সর্বশেষ খবর