রাজশাহীর বোয়ালিয়া থানা (পূর্ব) আওয়ামী লীগ সভাপতি আতিকুর রহমান কালুকে হত্যাচেষ্টার অভিযোগ পাওয়া গেছে। শনিবার রাত ১টা ১০ মিনিটের দিকে রাজশাহী মহানগরীর মুন্সিডাঙ্গা মহল্লায় এ ঘটনা ঘটে। পুলিশ এ ঘটনায় জড়িত দুজনকে গ্রেফতার করেছে। তবে কেন হত্যার চেষ্টা সে প্রশ্নের উত্তর মিলছে না।
গ্রেফতার একজনের নাম ওয়াহিদ মুরাদ জামিল ওরফে লিংকন (৫৬)। অন্যজন সজল আলী (২৫)।
পুলিশ জানায়, রাতে আওয়ামী লীগ নেতা আতিকুর রহমানকে হত্যার উদ্দেশ্যে পিস্তল হাতে তার বাড়ির সামনে গিয়েছিলেন ওয়াহিদ। কিন্তু কেন এ হত্যাচেষ্টা তা পুলিশকে বলেননি। আতিকুর রহমানও জানিয়েছেন, তাঁর সঙ্গে ওয়াহিদের আগে কোনো দিন দেখা হয়নি। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতার সজলও ঘটনার কথা স্বীকার করেছেন। পুলিশ জানায়, ওয়াহিদ নগরীর উপশহরের ৩ নম্বর সেক্টরের ৪ নম্বর সড়কের ১৭৭ নম্বর বাসার চার তলার নিজের ফ্ল্যাটে থাকেন। তিনি পুলিশকে জানিয়েছেন, তিনি একটি ডেভেলপার কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক। তার আমেরিকার নাগরিকত্ব আছে। জানা গেছে, রাতে আতিকুর রহমানের বাড়ি লক্ষ্য করে পরপর ২ রাউন্ড গুলি চালান ওয়াহিদ। গুলির শব্দ শুনে তিন তলা থেকে নেমে আসেন আতিকুর রহমান। লোহার ফটকের ভিতর থেকেই বাইরে অপেক্ষমাণ দুজনকে প্রশ্ন করেন, কী সমস্যা? এরপর পিস্তল হাতে থাকা ব্যক্তি আতিকুর রহমান কালুকেই বলেন, কালুকে পাঠাও। কালু বলেন, ‘আমিই কালু’। তখন আরও ৩ রাউন্ড গুলি করেন। তবে লোহার ফটক পেরিয়ে গুলি ভিতরে যেতে পারেনি। আতিকের গায়েও গুলি লাগেনি। পরে বিষয়টি পুলিশকে জানালে তাকে গ্রেফতারে তখনই অভিযান শুরু করে। পুলিশের চেকপোস্ট বসানো হয়। রাজশাহী কলেজের সামনে থাকা কালো রঙের প্রাইভেট কার দেখে পুলিশের কম্পিউটার অপারেটর সেলিমের সন্দেহ হয়। তিনি গাড়ির ভিতরে কারা আছেন দেখতে চাইলে তাকে লক্ষ্য করে ১ রাউন্ড গুলি ছোড়ে প্রাইভেট কারে থাকা যাত্রীদের একজন। যদিও গুলি লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়। নগরীর বোয়ালিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাজহারুল ইসলাম জানান, পরে ভোর ৪টায় ওয়াহিদের ঢাকা মেট্রো-গ-২১-৮৫৮৩ নম্বরের গাড়িটি ওয়াহিদের বাড়ির গ্যারেজে পাওয়া যায়। এ সময় গাড়িতে কেউ না থাকলেও ইঞ্জিন স্টার্ট ছিল। খোলা ছিল দরজাও।বাড়ির তিন তলায় গিয়ে দেখা যায়, সোফায় বসে আছেন ওয়াহিদ। পুলিশ তাকে আটক করে। এ সময় ওয়াহিদের ঘরে পাওয়া যায় একটি অত্যাধুনিক শটগান, ৮৭ রাউন্ড শটগানের তাজা কার্তুজ, ১৩টি খোসা, একটি অত্যাধুনিক পিস্তল, ৩১ রাউন্ড পিস্তলের তাজা গুলি, ৬টি খোসা ও ৩টি ম্যাগজিন। ওসি মাজহারুল ইসলাম বলেন, ‘এ ঘটনায় থানায় দুটি আলাদা মামলা হয়েছে। কেন হত্যাচেষ্টা সে বিষয়ে আটক দুজন কিছু বলছেন না। বিষয়টি জানার চেষ্টা করছি।’