শনিবার, ১৩ আগস্ট, ২০২২ ০০:০০ টা

জনগণের সুনামিতে সরকারের পতন ঘটবে : ফখরুল

নিজস্ব প্রতিবেদক

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, জনগণ জেগে উঠেছে। সরকারের পতন অনিবার্য। রাজপথ দখল করে জনগণের সুনামিতে এ সরকারের পতন ঘটবে। তিনি বলেন, এ সরকার চুরি-ডাকাতি করছে, বর্গীদের মতো হামলা করছে। পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর মতো হামলা করে যাচ্ছে। গতকাল জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদের এক সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

জ্বালানি  তেলের অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধি, নিত্যপ্রয়োজনীয় সব পণ্যের লাগামহীন দাম, বিদ্যুতের বিপর্যয়, গ্যাসের মূল্যবৃদ্ধি, রাজনৈতিক নেতাদের নির্বিচারে গুলির প্রতিবাদে এবং খালেদা জিয়ার নিঃশর্ত মুক্তির দাবিতে এ সমাবেশের আয়োজন করা হয়। বিএফইউজের সাবেক সভাপতি রুহুল আমিন গাজীর সভাপতিত্বে সমাবেশে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির আহ্বায়ক আবদুস সালাম, উত্তরের আহ্বায়ক আমানউল্লাহ আমান, বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. তাজ মেরী ইসলাম, ড. মাহবুব উল্লাহ, জাতীয় প্রেস ক্লাবের সাবেক সভাপতি কামাল উদ্দিন সবুজ, বিএফইউজে সভাপতি এ বি এম আবদুল্লাহ, বিএনপি নেতা অধ্যক্ষ সেলিম ভূইয়া, অ্যাবের প্রকৌশলী রিয়াজুল ইসলাম রিজু প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, আওয়ামী লীগ জানে যে- ইভিএম ছাড়া তারা নির্বাচনে জিততে পারবে না। এ ছাড়া তাদের নির্বাচনে জেতার উপায় নেই। ইভিএম একটি জালিয়াতির যন্ত্র। আপনারা ভোট দেবেন ধানের শীষে, সেই ভোট পড়বে নৌকায়। এ জন্য আওয়ামী লীগ নির্বাচন কমিশনে গিয়ে বলেছে- ইভিএম মেশিন চায় তারা ৩০০ আসনে। পাঁয়তারার মাধ্যমে আবারও তারা এমন একটি নির্বাচন করেই ক্ষমতায় বসতে চায়। মির্জা ফখরুল বলেন, নির্বাচন ছাড়াই আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় বসতে চায়। তারা দেশটাকে একটি ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত করেছে। ক্ষমতায় থাকার জন্য তারা নির্বাচন ব্যবস্থা ধ্বংস করে দিয়েছে। ২০১৪ সালে তারা ১৫৪ জনকে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত করেছে, ২০১৮ সালে বিনা ভোটে সরকার প্রতিষ্ঠা করেছে। বিএনপি মহাসচিব বলেন, পেশাজীবীরা দেশ ও মানুষের জন্য দায়িত্ব পালন করছেন। দেশের প্রতিটি আন্দোলন-সংগ্রামে তারা সংহতি প্রকাশ করেছেন। দেশের কী অবস্থা তা জানতে রিকশাচালকদের প্রশ্ন করুন যে- তারা কীভাবে সংসার চালাচ্ছেন? শিক্ষকরা আজ সংসার চালাতে পারছেন না। কৃষকদের জিজ্ঞাসা করুন, তারা ভালোভাবে ফসল উৎপাদন করতে পারছেন কি না। ছোট চাকরিজীবীরা সংসার চালাতে হিমশিম খাচ্ছেন।বিএনপির এই মুখপাত্র বলেন, সরকার এখন ভদ্র হয়ে গেছে। নির্বাচনের আগে আন্তর্জাতিক চাপে এখন দেখাতে চায় যে, বিরোধী দলকে সভা-সমাবেশ করতে দিচ্ছে। তারা গণতন্ত্রে বিশ্বাসী। এটা এক ধরনের প্রতারণা। এই প্রতারণা তাদের চরিত্রের সঙ্গে মিশে গেছে। গত ১৩ বছরে তারা আমাদের ৬ শতাধিক নেতা-কর্মীকে গুম করেছে। সহস্রাধিক নেতা-কর্মী হত্যা করেছে। মির্জা ফখরুল বলেন, সরকার পরিকল্পিতভাবে দেশের অর্থনীতি ধ্বংস করে দিচ্ছে। ব্যাংকগুলো খালি করে দিচ্ছে। কিছুদিন আগে দেশকে সিঙ্গাপুর বলত, এখন দেশের রিজার্ভ তলানিতে। বিশ্ববাজারে তেলের দাম কমছে। আর আমাদের দেশে বাড়ছে।

আওয়ামী লীগ রাজপথে পরাজিত : এর আগে সকালে রাজধানীর বনানী কবরস্থানে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার ছোট ছেলে আরাফাত রহমান কোকোর ৫৩তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে তাঁর কবর জিয়ারত করেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। সেখানে তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ রাজপথে পরাজিত হয়েছে। আগামীতেও জনগণের আন্দোলনে পরাজিত হবে। ‘বিএনপিকে রাজপথে মোকাবিলা করা হবে’- আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের এমন বক্তব্য প্রসঙ্গে বিএনপি মহাসচিব বলেন, তারা সব সময় পুরনো বক্তব্যই দিয়ে যাচ্ছেন। আওয়ামী লীগ সরকার যত দিন ক্ষমতায় থাকবে- মানুষের দুর্ভোগ ততই বাড়বে। তিনি বলেন, জ্বালানি তেল, পানি, বিদ্যুৎসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সবকিছুর দাম বেড়েছে। সরকারের দুর্নীতি আকাশচুম্বী। সরকার রাষ্ট্র পরিচালনায় ব্যর্থ হয়েছে। বিএনপি মহাসচিব বলেন, আমরা আজ শপথ নিয়েছি। শোককে শক্তিকে রূপান্তরিত করে এই সরকার সরিয়ে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা করব।

এ সময় ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির আহ্বায়ক আবদুস সালাম, উত্তরের আহ্বায়ক আমানউল্লাহ আমান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

সর্বশেষ খবর