শিরোনাম
শনিবার, ১৩ আগস্ট, ২০২২ ০০:০০ টা
তৃণমূলে দলের হালচাল

সাংগঠনিক সম্পাদকদের সঙ্গে শেখ হাসিনার বৈঠক কাল

নিজস্ব প্রতিবেদক

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে দলকে ঢেলে সাজাতে চান আওয়ামী লীগ সভানেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। করোনাসহ নানা কারণে দলটির তৃণমূল নেতাদের সঙ্গে তাঁর বৈঠক করা সম্ভব হয়ে ওঠেনি। পরিস্থিতি অনেকটা স্বাভাবিক হওয়ায় এখন থেকে সিরিজ বৈঠকে বসবেন আওয়ামী লীগপ্রধান। এরই অংশ হিসেবে তিনি আগামীকাল ১৪ আগস্ট সকাল সাড়ে ১০টায় আট বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত আট সাংগঠনিক সম্পাদককে নিয়ে গণভবনে বৈঠকে বসছেন।

দলের একাধিক সূত্র জানিয়েছে, বৈঠকে দলীয় প্রধান সারা দেশের সাংগঠনিক অবস্থার কথা জানবেন। এরপর সেপ্টেম্বর থেকে জেলা নেতাদের সঙ্গে ধারাবাহিক বৈঠক করবেন। এ প্রসঙ্গে আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এস এম কামাল হোসেন বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, ‘১৪ আগস্ট বেলা সাড়ে ১০টায় আট সাংগঠনিক সম্পাদককে ডেকেছেন দলীয় সভানেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আমাদের সাংগঠনিক রিপোর্ট নিয়ে যেতে বলা হয়েছে। আমি রাজশাহী বিভাগের সাংগঠনিক রিপোর্ট প্রস্তুত করেছি। ৭৬টি উপজেলার সম্মেলন শেষ করেছি। বাকি আছে ছয়টি উপজেলা। দলীয় সভানেত্রী যে নিদের্শনা দেবেন, আমরা সে মোতাবেক কাজ শুরু করব।’

সূত্রমতে, টানা তিন মেয়াদে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকায় তৃণমূলের নেতাদের মধ্যে দ্বন্দ্ব-বিরোধ বেড়েছে। আগামী জাতীয় নির্বাচন প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ হলে সেখানে জয় পেতে দলীয় ঐক্য জরুরি। জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দেড় বছর বাকি থাকলেও এখন থেকে তৃণমূলকে প্রস্তুত করতে চায় দলের হাইকমান্ড। সে জন্য ছোট পরিসরে জেলা নেতাদের ডাকা হবে গণভবনে। আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা চাইছেন তৃণমূলের নেতাদের ডেকে গুরুত্বপূর্ণ নির্দেশনা দিতে। তার আগে তৃণমূলের সার্বিক পরিস্থিতি কী, তা জানতে চান তিনি। সাংগঠনিক রিপোর্টের ভিত্তিতে কোন্দলপূর্ণ ও দুর্বল জেলাকে আগে ডাকা হবে গণভবনে।

এ প্রসঙ্গে দলের আরেক সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম বলেন, ‘দলের কার্যনির্বাহী বৈঠকে সাংগঠনিক বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়ে থাকে। কিন্তু শুধু সাংগঠনিক সম্পাদকদের নিয়ে আলাদা করে বৈঠক দীর্ঘদিন হয় না। জাতীয় সংসদ নির্বাচন এবং জাতীয় কাউন্সিলকে সামনে রেখে এ বৈঠক গুরুত্বপূর্ণ বলেই মনে হচ্ছে। আমার বিভাগে কোন জেলায় কী অবস্থা, সাংগঠনিক দুর্বলতা কোথায়- সেগুলো চিহ্নিত করেছি। ১৪ আগস্ট নেত্রীকে সে তালিকা তুলে দেব।’  তিনি বলেন, ‘শুধু সাংগঠনিক দুর্বলতার কথাই নয়, সফলতাও আছে। এই প্রথম ঢাকা মহানগরে ইউনিটভিত্তিক কমিটি গঠন করা হয়েছে। ঢাকা মহানগর উত্তরের সব ইউনিট এবং ওয়ার্ড সম্মেলন শেষ করা হয়েছে। এটা অতীতের যে কোনো সময়ের চেয়ে রেকর্ড, সেটাও নেত্রীকে জানানো হবে।’ সূত্রগুলো জানায়, সারা দেশে আওয়ামী লীগের ৭৮ সাংগঠনিক জেলা রয়েছে। এর মধ্যে ৪৪টি জেলার সম্মেলন হয়েছে। বাকিগুলোর ডিসেম্বরের আগেই শেষ করার প্রস্তুতি রয়েছে। আওয়ামী লীগের দফতর সম্পাদক এবং প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহকারী বিপ্লব বড়ুয়া বলেন, ‘জাতীয় নির্বাচনের আগে জেলার নেতাদের নিয়ে আওয়ামী লীগ সভানেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বসবেন, সেটা মোটামুটি চূড়ান্ত। আগামী সেপ্টেম্বরে নেত্রীর দিল্লি ও নিউইয়র্ক সফর আছে। এর মাঝে সময় পেলে সেপ্টেম্বরেই তিনি জেলা নেতাদের নিয়ে বসতে পারেন।’

দলীয় একাধিক সূত্র জানান, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দলের কৌশল কী হবে- এসব বিষয়ের আলোচনা জেলা নেতাদের সঙ্গে বৈঠকে স্থান পাবে। সরকার পরিচালনা এবং উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের প্রচারে দলের নেতাকর্মীদের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা আছে। জনগণের সমস্যা সমাধানেও ক্ষমতাসীন দলের নেতাকর্মীদের কাজ করতে হয়। ফলে জেলা নেতাদের এসব বিষয়ে নির্দেশনা দেবেন আওয়ামী লীগ সভানেত্রী। এ ছাড়া আগামী নির্বাচনের প্রস্তুতির বিষয়ও আছে। সাংগঠনিক নানা বিষয়সহ গুরুত্বপূর্ণ দিকনির্দেশনা দেবেন আওয়ামী লীগ প্রধান।

সর্বশেষ খবর