শনিবার, ১৩ আগস্ট, ২০২২ ০০:০০ টা

ব্রিটিশ ঔপন্যাসিক সালমান রুশদির ওপর হামলা

প্রতিদিন ডেস্ক

ব্রিটিশ ঔপন্যাসিক সালমান রুশদির ওপর হামলা

‘দ্য স্যাটানিক ভার্সেস’-এর রচয়িতা ব্রিটিশ ঔপন্যাসিক সালমান রুশদির ওপর হামলা হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কের শিটোকোয়া ইনস্টিটিউটে এক মঞ্চে তাঁর ওপর এ হামলা হয়। তাঁর ঘাড়ে হামলাকারী ছুরিকাঘাত করেন। তাঁকে হেলিকপ্টারে স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। বিবিসি ‘স্যাটানিক ভার্সেস’, যাকে মুসলিম বিশ্বের অনেকেই ধর্মদ্রোহী বলে মনে করেন- এ উপন্যাস প্রকাশের পর বছরের পর বছর ধরে তিনি হত্যার হুমকি পেয়ে আসছেন। নিউইয়র্ক পুলিশ জানিয়েছে, সন্দেহভাজন ব্যক্তি একজন পুরুষ। তিনি মঞ্চে উঠে রুশদি ও সাক্ষাৎকার গ্রহণকারীর ওপর হামলা চালান। পুলিশ এক বিবৃতিতে জানায়, রুশদির ঘাড়ে ছুরি দিয়ে কয়েকটি আঘাত করা হয়েছে। হামলাকারীকে পুলিশের হেফাজতে নেওয়া হয়েছে। বুকার পুরস্কার বিজয়ী রুশদির বয়স ৭৫ বছর। অনলাইনে পোস্ট করা ঘটনাস্থলের এক ভিডিওতে দেখা যায়, ঘটনার পরপরই রুশদিকে সহায়তা করতে উপস্থিত লোকজন মঞ্চে ছুটে আসেন। বিবিসি জানিয়েছে, তাঁকে যখন পরিচয় করিয়ে দেওয়া হচ্ছিল, তখনই এক লোক দৌড়ে স্টেজে উঠে ছুরি নিয়ে তাঁর ওপর হামলা চালান।

একজন প্রত্যক্ষদর্শী কার্ল লেভান বিবিসিকে বলেন, এটি প্রত্যক্ষ করা খুবই ভয়ংকর ছিল। তিনি ঘটনার সময় অ্যাম্পিথিয়েটারের ১৪ বা ১৫তম সারির আসনে ছিলেন। হামলাকারী দর্শক সারির বাঁ-দিক থেকে মঞ্চে গিয়ে রুশদিকে একের পর এক ছুরিকাঘাত করতে থাকেন।

স্থানীয় সাংবাদিক বাফেলো নিউজের মার্ক সোমার কয়েকজন প্রত্যক্ষদর্শীর সঙ্গে কথা বলেছেন। তিনি বিবিসি নিউজ চ্যানেলকে বলেন, হামলাকারীর মুখে কালো মাস্ক ছিল। তিনি দর্শকদের মধ্য থেকে বেরিয়ে মঞ্চে ঝাঁপিয়ে পড়েন এবং রুশদির ওপর হামলা করেন।

ঘটনার আকস্মিকতা কাটিয়ে উপস্থিত দর্শক রুশদির সহায়তায় ছুটে আসেন এবং হামলাকারীকে ধরে ফেলেন। রুশদি ৫ মিনিট বা তারও বেশি সময় মেঝেতে পড়ে ছিলেন। পরে তাঁকে হেলিকপ্টারে সরিয়ে নেওয়া হয়।

অনুষ্ঠানে উপস্থিত একজন চিকিৎসক রিতা র‌্যান্ডম্যান নিউইয়র্ক টাইমসকে বলেন, তিনি রুশদিকে তাৎক্ষণিক সহায়তা করেছেন। তিনি টাইমসকে বলেন, ঘাড়ের ডান পাশে একটি ক্ষতসহ কয়েকটি ক্ষত হয়েছে। তাঁর শরীরের নিচে রক্ত বয়ে যাচ্ছিল।

ভারতীয় বংশোদ্ভূত ঔপন্যাসিক ১৯৮১ সালে ‘মিডনাইটস চিলড্রেন’ দিয়ে খ্যাতি অর্জন করেছিলেন, যা শুধু যুক্তরাজ্যে এক মিলিয়নের বেশি কপি বিক্রি হয়েছিল।

কিন্তু ১৯৮৮ সালে রুশদির চতুর্থ বই ‘দ্য স্যাটানিক ভার্সেস’-এর জন্য তাঁকে নয় বছর বাধ্য হয়ে লুকিয়ে থাকতে হয়েছিল।

এ বই প্রকাশের এক বছর পর ইরানের সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা আয়াতুল্লাহ খোমেনি রুশদির মৃত্যুদণ্ডের ফতোয়া জারি করেছিলেন এবং তাঁর মাথার দাম ৩ মিলিয়ন ডলার ঘোষণা করেছিলেন। এ বই প্রকাশের পর সহিংসতায় কয়েকজন নিহত হন। তাঁদের মধ্যে বইটির অনুবাদকরাও ছিলেন।

রুশদির যুক্তরাজ্য ও যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিকত্ব রয়েছে। তিনি মতপ্রকাশের স্বাধীনতার পক্ষে সোচ্চার।

সর্বশেষ খবর