মঙ্গলবার, ১৬ আগস্ট, ২০২২ ০০:০০ টা

ঘুম ভাঙল না বিল্লালের

নিজস্ব প্রতিবেদক

সারা দেশের পাইকারি ব্যবসায়ীদের আনাগোনায় ব্যস্ত থাকত চকবাজার। দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের ক্রেতা-বিক্রেতাদের আনা-গোনায় জমজমাট থাকত দেবীদাস ঘাটের বরিশাল হোটেলটি। রবিবার রাত ১২টা পর্যন্ত হোটেলটির নানা কাজে ব্যস্ত সময় কাটে বিল্লালের (৩৩)।

ক্লান্ত শরীরে কাজ শেষে হোটেলটির ওপরে বানানো মাচাংয়ে অন্য সহকর্মীদের সঙ্গে ঘুমিয়ে পড়েন তিনিও। রাত কেটে সকাল। সকাল শেষে বেলার আলো ফুটতেই চিরঘুমে চলে গেলেন বিল্লাল। বিল্লালের এমন চলে যাওয়া যেন কোনোভাবেই মেনে নিতে পারছেন না তার শ্যালক আবদুল্লাহ। ঘুমন্ত দুলাভাইয়ের পুড়ে অঙ্গার হওয়ার দৃশ্য দেখে আহাজারি করতে থাকেন তিনি। আগুনের ধ্বংসস্তূপ থেকে ছয়টি লাশ পাওয়া গেলেও কোনটি দুলাভাইয়ের তা চিনতে পারেননি আবদুল্লাহ।

বিল্লালের মতো ঘুমিয়ে থাকা অবস্থায় পুড়ে আঙ্গার হয়েছেন তার সহকর্মী ওসমানও। তার খালাতো ভাই রুবেল জানান, যে ভবনে আগুন লেগেছে তার নিচতলায় বরিশাল হোটেলে কাজ করতেন ওসমান। রাতে কাজ করে ওই হোটেলের মাচাংয়ে ঘুমিয়ে ছিলেন তিনি। চার বছর ধরে ওসমান ওই হোটেলে কাজ করতেন। ওসমানের সঙ্গে আরও চার-পাঁচজন থাকতেন। তাদের কী অবস্থা হয়েছে, বলতে পারছি না।

এদিকে আর্তনাদ করতে করতে আবদুল্লাহ জানান, তার দুলাভাইও বরিশাল হোটেলে কাজ করতেন। রাতে নাইট ডিউটি শেষে মাচাংয়ে ঘুমাচ্ছিলেন তিনি। আগুন লাগার পর থেকে তার খোঁজ পাওয়া যাচ্ছিল না।

গতকাল দুপুর ১২টায় পুরান ঢাকার চকবাজারে ওই অগ্নিকাণ্ড ঘটে। বরিশাল হোটেলের সিলিন্ডার বিস্ফোরণ থেকে আগুনের সূত্রপাত হয় বলে দাবি কয়েকজন প্রত্যক্ষদর্শীর। 

জানা গেছে, অগ্নিকাণ্ডের শিকার বরিশাল হোটেলের ভিতর ঘুমিয়ে ছিলেন অন্তত চার-পাঁচজন। ফায়ার সার্ভিস আড়াই ঘণ্টা চেষ্টার পর আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। তবে হোটেলের ভিতর ঘুমিয়ে থাকা ওই চার-পাঁচজনের হদিস মিলছে না। চকবাজার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবদুল কাইয়ুম জানিয়েছেন, হোটেলের ভিতরে সবকিছু পুড়ে গেছে। মানুষের হাড়পোড়াসদৃশ কিছু দেখা গেছে।

এদিকে আগুন নিয়ন্ত্রণে আসার খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে আসতে শুরু করেন নিখোঁজ ব্যক্তিদের স্বজনরা।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর