বুধবার, ১৭ আগস্ট, ২০২২ ০০:০০ টা

ভারতকে ফুটবলে নিষিদ্ধ করল ফিফা

ক্রীড়া প্রতিবেদক

বিশ্ব ফুটবলের অভিভাবক সংস্থা ফিফা কতটা শক্তিশালী তা আবার প্রমাণ হলো। নিয়ম ভেঙে ফুটবল পরিচালনা করায় ভারতকে ঘরোয়া ও আন্তর্জাতিক সব রকম ফুটবল থেকে নিষিদ্ধ করেছে ফিফা। বিশ্ব ফুটবলে ভারতের অবস্থান নড়বড়ে বলা যায়। তবু দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে তারাই প্রভাবশালী। এএফসি ও ফিফার সঙ্গে দেশটির লবিংও জোরাল ছিল। কিন্তু কোনো কিছুতেই লাভ হলো না। ফিফার বাইলজ উপেক্ষা করলে রক্ষা নেই। যত ধনী ও প্রভাবশালী হোক না কেন তাদের শাস্তি পেতেই হবে। ভারত নিষিদ্ধ হতে পারে এ ধরনের আভাস তারাও পেয়েছিল। তোয়াক্কা না করায় বড় সর্বনাশটা হয়ে গেল। বহিষ্কারের পরই ভারতীয় সরকার উঠেপড়ে লেগেছে। কীভাবে তা প্রত্যাহার করা যায় তা নিয়ে কাজ করতে বলেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। পাকিস্তানও সব রকমের ফুটবল থেকে নিষিদ্ধ ছিল। বাংলাদেশও ২০০২ সালে নিষিদ্ধ হয়েছিল। চার দলীয় জোট ক্ষমতা থাকা অবস্থায় বাফুফে নির্বাচিত কমিটি ভেঙে অ্যাডহক কমিটি গঠন করে। যা ফিফা নিয়মে অবৈধ। দেরি করেনি বিশ্ব ফুটবলের অভিভাবক সংস্থা। বাংলাদেশকে সব রকমের খেলা থেকে বহিষ্কার করে। ওই কমিটির সভাপতি ছিলেন এস এ সুলতান। তিনি বলেন, ‘সরকার বলব না। বিএনপি সমর্থিত প্রভাবশালী ক্রীড়া সংগঠকদের বাড়াবাড়ির কারণে আমাদের এত বড় খেসারত দিতে হয়েছিল। তবে বেশি দিন নিষিদ্ধ ছিলাম না। নির্বাচিত কমিটির কাছে দায়িত্ব ফিরিয়ে দেওয়ার পরই তা প্রত্যাহার করা হয়।’ সুলতান বলেন, ‘ভারত ও বাংলাদেশের বহিষ্কার প্রায় একই। আমরা নির্বাচিত কমিটি ভেঙে দিয়েছিলাম। আর ভারতে মেয়াদ শেষ হওয়ার পরও প্রফুল্ল প্যাটেল ফেডারেশন দখল করে রাখেন।’ ভারতীয় ফুটবল ফেডারেশনের নির্বাচন হওয়ার কথা ছিল ২০২০ সালের ডিসেম্বরে। কিন্তু গঠনতন্ত্র সংশোধন সংক্রান্ত একটি অচলাবস্থা তৈরি হয়। এই জটিলতা প্যাটেলের তৈরি অভিযোগ ছিল। যাতে তিনি নির্বাচন ছাড়াই দায়িত্ব পালন করতে পারেন। গত মে মাসে তার কমিটি ভেঙে দেওয়া হয়। তিন সদস্যের কমিটি গঠন করা হয় নির্বাচনের মাধ্যমে।

নতুন কমিটির হাতে দায়িত্ব তুলে দেওয়া কিন্তু তা আর হয়নি। অবৈধভাবে ফুটবল পরিচালনায় এ নিয়ে মামলা হওয়ার পরই ফিফা নড়েচড়ে বসে। শেষ পর্যন্ত বহিষ্কারে টনক নড়ল ভারতীয় ফুটবল ফেডারেশনের। তারা ঘরোয়া বা আন্তর্জাতিক কোনো ফুটবলই খেলতে পারবে না। ফিফা যখন দেখবে ভারত সরকার ফেডারেশনের কোনো কর্মকান্ডে হস্তক্ষেপ করছে না তখনই তা প্রত্যাহার করবে। ভারতের এই বহিষ্কার বাংলাদেশের জন্য সতর্ক বার্তাও। নির্বাচনের মাধ্যমে কমিটি গঠন হচ্ছে ঠিকই। কিন্তু স্বচ্ছতা নিয়ে প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে। তাছাড়া অডিট রিপোর্ট, ফিফা ও এএফসির পাঠানো ফান্ড কোন কোন খাতে ব্যয় করা হচ্ছে তা অজানা থেকেই যাচ্ছে। ফিফা যদি ইউরোপের এক্সপার্ট পাঠিয়ে এসব কাজের তদন্ত করে তাহলে ফেঁসে যাওয়ার সম্ভাবনা বেশি। আর এর ফল কি হতে পারে বুঝিয়ে বলার দরকার নেই।

 

 

সর্বশেষ খবর