বৃহস্পতিবার, ১৮ আগস্ট, ২০২২ ০০:০০ টা
আন্তর্জাতিক গবেষণা তথ্য

বায়ুতে শেষ আয়ু

♦ এক বছরে মৃত্যু ২২ হাজার ♦ বায়ুদূষণে ঢাকা পঞ্চম

নিজস্ব প্রতিবেদক

বায়ুদূষণের কারণে ২০১৯ সালে এক বছরেই ঢাকায় ২২ হাজারের বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে। সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক দুই সংস্থা-হেলথ ইফেক্টস ইনস্টিটিউট এবং ইনস্টিটিউট ফর হেলথ মেট্রিকস-এর এক প্রতিবেদনে এই চিত্র উঠে এসেছে। প্রতিবেদন অনুযায়ী বিশ্বে বায়ুদূষণে শীর্ষ শহরগুলোর মধ্যে ঢাকার অবস্থান পঞ্চম। ‘এয়ার কোয়ালিটি অ্যান্ড হেলথ ইন সিটিস’ শীর্ষক ওই প্রতিবেদন বলা হয়েছে, ঢাকার প্রতি ঘনমিটার বাতাসে বার্ষিক গড় সূক্ষ্ম বস্তুকণার (পিএম ২.৫) উপস্থিতি ৭১ দশমিক ৪ মাইক্রোগ্রাম এবং নাইট্রোজেন ডাই-অক্সাইডের (এনও ২) উপস্থিতি ২৩ দশমিক ৬ মাইক্রোগ্রাম। সূক্ষ্ম বস্তুকণা হলে বাতাসে ভেসে থাকা সব কঠিন ও তরল কণার সমষ্টি, যা স্বাস্থ্যের জন্য বিপজ্জনক। এই জটিল মিশ্রণে ধুলা, পোলেন, কালি, ধোঁয়া এবং তরল ড্রপলেটের মতো অসংখ্য জৈব ও অজৈব কণা অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, ২০১৯ সালে ৭ হাজার শহরের মধ্যে ৮৬ শতাংশ শহরেই ডব্লিউএইচওর বেঁধে দেওয়া প্রতি ঘনমিটারে নাইট্রোজেন ডাই-অক্সাইডের উপস্থিতি ১০ মাইক্রোগ্রামের সহনীয় মাত্রা ছাড়িয়ে যায়। এতে ২৬০ কোটি মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হন। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) বায়ুমান নির্দেশিকা অনুসারে, প্রতি ঘনমিটারে বার্ষিক পিএম২.৫ উপস্থিতি ৫ মাইক্রোগ্রাম আর নাইট্রোজেন ডাই-অক্সাইডের উপস্থিতি ১০ মাইক্রোগ্রাম সহনীয় মাত্রা।

পুরনো যানবাহন, বিদ্যুৎ কেন্দ্র, শিল্প প্রতিষ্ঠান এবং আবাসিক এলাকায় রান্না ও গরমের জন্য পোড়ানো জ্বালানি থেকে নাইট্রোজেন ডাই-অক্সাইডের মতো ক্ষতিকর পদার্থ বাতাসে ছড়িয়ে পড়ছে। ফলে দূষিত হচ্ছে বায়ু। শহরের বাসিন্দারা ব্যস্ত সড়কের কাছাকাছি বসবাস করায় তারা গ্রামের লোকজনের তুলনায় বেশি দূষণের শিকার হন। ২০১০-১৯ সালের প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, পিএম ২.৫ এর সংস্পর্শে আসার প্রবণতা নিম্ন ও মধ্যম আয়ের দেশগুলোর শহরে বেশি। অন্যদিকে নিম্ন ও মধ্যম আয়ের দেশগুলোর পাশাপাশি উচ্চ আয়ের দেশগুলোর শহরে নাইট্রোজেন ডাই-অক্সাইডের সংস্পর্শে আসার প্রবণতা বেশি।

কয়েক বছর ধরে বিশ্বের সবচেয়ে দূষিত শহরগুলোর তালিকায় ওপরের দিকে নাম থাকছে ঢাকার। সাম্প্রতিক এক হিসাবে দেখা গেছে, বছরের পাঁচ মাসই এ শহরের বায়ু ‘অস্বাস্থ্যকর’ থাকে। জীবাশ্ম জ্বালানি ও কাঠ পোড়ানো, ফিটনেসবিহীন গাড়ি থেকে নির্গত ধোঁয়া, ইটভাটা ও ব্যাপক উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের কারণে ঢাকার বায়ুমান প্রায়ই বৈশ্বিক শিরোনাম হয়। ডব্লিউএইচওর পরিসংখ্যান অনুযায়ী বায়ুদূষণে বিশ্বে প্রতি বছর ৭০ লাখ মানুষের মৃত্যু হয়।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর