মঙ্গলবার, ৩০ আগস্ট, ২০২২ ০০:০০ টা

ভিন্ন নামেও নিবন্ধনের সুযোগ নেই জামায়াতের

ভোটে সেনা স্ট্রাইকিং ফোর্স

নিজস্ব প্রতিবেদক

ভিন্ন নামেও নিবন্ধনের সুযোগ নেই জামায়াতের

নির্বাচন কমিশনার আলমগীর

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সেনাবাহিনী স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে থাকবে বলে জানিয়েছেন নির্বাচন কমিশনার মো. আলমগীর। এ ছাড়া জামায়াতে ইসলামী ভিন্ন নামে এলেও নিবন্ধন পাওয়ার সুযোগ নেই বলেও জানিয়েছেন তিনি। গতকাল নির্বাচন ভবনে নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন তিনি।

আদালত জামায়াতে ইসলামীর নিবন্ধন অবৈধ ও বাতিল ঘোষণা করায় আরপিও অনুযায়ী দলটির নিবন্ধন বাতিল করা হয়। দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে আগ্রহী দলগুলোর অক্টোবর পর্যন্ত আবেদনের সুযোগ রয়েছে। যদি নতুন করে আবেদন করে একই মানুষ, কিন্তু ভিন্ন দল; তাহলে কী সুযোগ আছে- এমন প্রশ্নের জবাবে নির্বাচন কমিশনার মো. আলমগীর বলেন, একই মানুষ আসবে কি-না, তা তো আর বলতে পারব না। যারা আবেদন করছেন, যদি দেখি যে ক্রাইরেটিয়া মেলে না, তাহলে তো দিতে পারব না। অন্য নামেও হলে কি নিবন্ধন পাওয়ার সুযোগ আছে, এই প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, অন্য নামে হলেও তো জিনিস তো একই। দলের গঠনতন্ত্র যদি আমাদের সংবিধানের সঙ্গে অসঙ্গতিপূর্ণ হয়, তাহলে তো কোনো সুযোগ নেই।

জামায়াতকে নিবন্ধন দেওয়ার সিদ্ধান্ত চ্যালেঞ্জ করে তরিকত ফেডারেশনের সেক্রেটারি জেনারেল সৈয়দ রেজাউল হক চাঁদপুরী, জাকের পার্টির মহাসচিব মুন্সি আবদুল লতিফ, সম্মিলিত ইসলামী জোটের প্রেসিডেন্ট মাওলানা জিয়াউল হাসানসহ ২৫ জন ২০০৯ সালের জানুয়ারিতে একটি রিট আবেদন করে। তাতে বলা হয়, গণপ্রতিনিধিত্ব অধ্যাদেশ অনুসারে শর্ত পূরণ না হওয়ায় জামায়াতে ইসলামী রাজনৈতিক দল হিসেবে নিবন্ধন পেতে পারে না। ওই রিটের পরিপ্রেক্ষিতে জারি করা রুলের ওপর শুনানি শেষে হাই কোর্ট ২০১৩ সালের ১ আগস্ট জামায়াতের নিবন্ধন অবৈধ ঘোষণা করে। ফলে বিএনপির জোট শরিক এই দলটির নির্বাচনে অংশ নেওয়ার পথও বন্ধ হয়ে যায়। ইসি মো. আলমগীর জানান, দেশের প্রেক্ষাপটে আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে একাধিক দিনে ভোট করা কঠিন। তবে গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশে এ জন্য কোনো বাধা নেই। তিনি বলেন, একাধিক দিনে ভোট বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে করা কঠিন। তবে এ জন্য আইনে কোনো বাধা নেই। গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশে আমাদের দেশে একাধিক দিনে নির্বাচন করার ব্যবস্থা আছে। তবে আমাদের এখানে একাধিক দিনে নির্বাচন হয় না। কারণ এটা তো ছোট দেশ। ভোটের মাঠে সেনাবাহিনী একটি নির্দিষ্ট এলাকায় স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে থাকবেন উল্লেখ করে তিনি বলেন, তারা টহল দেবেন। আর গুরুত্বপূর্ণ, যেমন আমরা নির্বাচনের আগেই একটা রিপোর্ট নিই বিভিন্ন সূত্র থেকে, যে কোনো কেন্দ্র ভার্নারেবল হতে পারে। র‌্যাব, বিজিবি, সেনার কাছে সেই তালিকা আমরা দিই। কারণ পর্যাপ্ত সদস্য তো তাদের নেই। তারা পর্যালোচনা করে কোথায় সেনা, কোথায় র‌্যাব, কোথায় বিজিবি, তারা আলোচনা করে সেই সিদ্ধান্ত নেয়।

সাবেক এই ইসি সচিব বলেন, যদি জোর পূর্বক কেউ ভোট দিতে চাইলে প্রথমে প্রিসাইডিং কর্মকর্তা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের সহয়তা নেবেন। তারা কুলিয়ে উঠতে না পারলে বিজিবি কিংবা সেনার সহায়তা নেবেন।

বিচারিক ক্ষমতাসহ সেনা মোতায়েন দেশের অন্যান্য আইন কভার করে না জানিয়ে এই কমিশনার বলেন, এক্ষেত্রে মৌলিক আইন পরিবর্তন করতে হবে। এ ছাড়া যিনি ক্ষমতা প্রয়োগ করবেন, তার হাতে বিচারিক ক্ষমতা থাকে না। মূল কথা হলো আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় সশস্ত্র বাহিনী সহযোগিতা করবেন। সেটা তো আমরা একমত হয়েছি। তিনি বলেন, আগামী সপ্তাহে রোডম্যাপ প্রকাশ করা হবে। সেখানে বিস্তারিত পরিকল্পনা থাকবে। নির্বাচনের টার্গেট রেখেছি আগামী বছরের ডিসেম্বরের শেষ সপ্তাহ অথবা ২০২৪ সালের জানুয়ারি প্রথম সপ্তাহে। অন্য এক প্রশ্নের জবাবে মো. আলমগীর বলেন, কোনো দল নির্বাচনে আসা, না আসা গণতান্ত্রিক অধিকার। সেই অধিকার আমরা হস্তক্ষেপ করতে পারব না। তারা কী ধরনের সহযোগিতা চয় তা আমাদের কাছে এসে বলতে হবে এবং এমন সহায়তা চাইবে যেটা নির্বাচন কমিশনের দেওয়ার ক্ষমতা আছে। এখন একটা দল যদি বলে আমাদের ফান্ড দিতে হবে, সেটা দেওয়ার ক্ষমতা তো আমাদের নেই।

 

 

সর্বশেষ খবর