বৃহস্পতিবার, ১ সেপ্টেম্বর, ২০২২ ০০:০০ টা

মারা গেলেন সোভিয়েত নেতা সেই গর্বাচেভ

প্রতিদিন ডেস্ক

মারা গেলেন সোভিয়েত নেতা সেই গর্বাচেভ

সোভিয়েত ইউনিয়নের সর্বশেষ নেতা মিখাইল গর্বাচেভ আর নেই।

মঙ্গলবার সন্ধ্যায় ৯১ বছর বয়সে তিনি মারা যান। তিনি দীর্ঘদিন অসুস্থ ছিলেন। রাশিয়ার তাস বার্তা সংস্থা জানিয়েছে, তাকে মস্কোর নভোদেভিচি কবরস্থানে তার  স্ত্রীর কবরের পাশে সমাহিত করা হবে। যেখানে অনেক নামি রাশিয়ানের কবর রয়েছে। ১৯৮৫ সালে সোভিয়েত ইউনিয়নের সংস্কারে হাত দেন গর্বাচেভ। সে সময় তাঁর একমাত্র উদ্দেশ্য ছিল সোভিয়েত ইউনিয়নের স্থবির অর্থনীতিকে পুনরুজ্জীবিত ও রাজনৈতিক প্রক্রিয়াগুলো পর্যালোচনা করা। তবে তাঁর এসব প্রচেষ্টার মধ্য দিয়েই সোভিয়েত ইউনিয়নে সমাজতন্ত্রের অবসান হয়েছে। স্নায়ুযুদ্ধের অবসান ঘটানোর জন্য তিনি পশ্চিমা বিশ্বে প্রশংসিত হন। তবে সোভিয়েত ইউনিয়নের পতনের জন্য তার সংস্কার কর্মসূচিকে দায়ী করে থাকেন ইতিহাসবিদরা। ১৯৮৫ সালে ক্ষমতায় আসার পর তিনি বিশ্বের কাছে সোভিয়েত ইউনিয়নকে উন্মুক্ত করে দিয়েছিলেন। অনেক সংস্কার কর্মসূচি নিয়েছিলেন। মূলত এরপর থেকেই সোভিয়েত ইউনিয়নের মধ্যে ভাঙন শুরু হয়। বিবিসি জানিয়েছে, মিখাইল গর্বাচেভের মৃত্যুতে তাঁর প্রতি সারা বিশ্ব থেকে শ্রদ্ধা জানানো হচ্ছে। জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস বলেছেন, তিনি ইতিহাসের গতিপথ বদলে দিয়েছিলেন। মিখাইল গর্বাচেভ ব্যতিক্রমী একজন রাষ্ট্রনায়ক।

 তাঁর মৃত্যুতে বিশ্ব একজন নেতা হারাল যিনি শান্তির জন্য অক্লান্ত সমর্থক ছিলেন। ১৯৮৫ সালে সোভিয়েত কমিউনিস্ট পার্টির সাধারণ সম্পাদক হন মিখাইল গর্বাচেভ, যখন তাঁর বয়স ৫৪ বছর। সেই সময় তিনি ছিলেন ক্ষমতাসীন কাউন্সিল পলিটব্যুরোর সর্বকনিষ্ঠ সদস্য। তার পূর্বসূরি মাত্র এক বছর দায়িত্বে থাকার পর ৭৩ বছর বয়সে মারা গেলে বয়স্কদের ভিড়ে তিনি দায়িত্ব পান। তার মূল নীতি গাসনস্তের (উন্মুক্ত হওয়া) ফলে সোভিয়েত ইউনিয়নের অনেক অঞ্চলে জাতীয়তাবাদী চিন্তার উদ্ভব হয়। আর এর পরিপ্রেক্ষিতে ইউনিয়নের পতন ঘটে। আন্তর্জাতিকভাবে তিনি যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে অস্ত্র নিয়ন্ত্রণ চুক্তি করেছিলেন। পশ্চিমা দেশগুলো তাঁকে একজন সংস্কারক হিসেবে দেখে, যিনি স্নায়ুযুদ্ধে অবসান করার পরিবেশ  তৈরি করেছিলেন। পশ্চিমের সঙ্গে সম্পর্কে ব্যাপক পরিবর্তন আনায় ১৯৯০ সালে তাঁকে শান্তিতে নোবেল পুরস্কার দেওয়া হয়। কিন্তু ১৯৯১ সালে যে নতুন রাশিয়ার জন্ম হয়, সেখানে রাজনীতিক হিসাবে তাঁর তেমন ভূমিকা ছিল না। তিনি বরং শিক্ষা এবং মানবিক কর্মকান্ডে নিজেকে নিয়োজিত করেছিলেন। ১৯৯৬ সালে তিনি একবার রাজনীতিতে ফিরে আসার চেষ্টা করেছিলেন, কিন্তু প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে মাত্র ০.৫ শতাংশ ভোট পেয়েছিলেন।

সর্বশেষ খবর