সোমবার, ৫ সেপ্টেম্বর, ২০২২ ০০:০০ টা

খেলাপি ঋণ পুনঃতফসিলের সুযোগ চারবার

নিজস্ব প্রতিবেদক

খেলাপি ঋণ চারবার পুনঃতফসিল বা ঋণ পুনর্গঠনের সুযোগ দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এই খেলাপিরা ঋণ পরিশোধে ২১ বছর সময় পাবেন। গতকাল এ সংক্রান্ত মাস্টার সার্কুলার জারি করেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। সার্কুলারে বলা হয়, ব্যাংকের পর্ষদের অনুমতি নিয়ে ব্যাংক তার গ্রাহককে ঋণ পুনঃতফসিল বা ঋণ পুনর্গঠন করবে।

সার্কুলারে বলা হয়েছে, নীতিমালার আওতায় ঋণ/ লিজ/ বিনিয়োগ পুনঃতফসিল/ পুনর্গঠন সংক্রান্ত যে কোনো আবেদন বিধিবিধান মেনে আর্থিক প্রতিষ্ঠান-গ্রাহক সম্পর্কের ভিত্তিতে আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর পরিচালনা পর্ষদ নিষ্পত্তি করতে হবে। এক্ষেত্রে, বাংলাদেশ ব্যাংকের অনুমোদন বা অনাপত্তির কোনো আবশ্যকতা নেই। চতুর্থ দফায় পুনঃতফসিলিকরণের পরও ঋণ/লিজ/বিনিয়োগ গ্রহীতা গৃহীত ঋণ পরিশোধে ব্যর্থ হলে তিনি স্বভাবজাত ঋণ খেলাপি হিসেবে গণ্য হবেন। এ বিবেচনায় কোনো ঋণ/লিজ/বিনিয়োগ হিসাব সম্মিলিতভাবে চারবারের বেশি পুনঃতফসিল বা পুনর্গঠন করা যাবে না। মোট চারবার পুনঃতফসিল বা পুনর্গঠন করার পরও ঋণ আদায় না হলে পাওনা আদায়ে আর্থিক প্রতিষ্ঠান আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করবে এবং যথাযথ সংস্থান সংরক্ষণ করবে। ঋণ পুনঃতফসিলে ন্যূনতম ডাউনপেমেন্ট ও সর্বোচ্চ সময়সীমা হবে গ্রাহককে প্রদত্ত মঞ্জুরিপত্রের তারিখ থেকে মোট বকেয়ার ৪ শতাংশ অথবা মেয়াদোত্তীর্ণ কিস্তির অন্যূন ৭ শতাংশ, এই দুইয়ের মধ্যে যা কম। দ্বিতীয় দফা মোট বকেয়ার ৫ শতাংশ অথবা মেয়াদোত্তীর্ণ কিস্তির অন্যূন ৮ শতাংশ, এই দুইয়ের মধ্যে যা কম। তৃতীয় দফা মোট বকেয়ার ৬ শতাংশ অথবা মেয়াদোত্তীর্ণ কিস্তির অন্যূন ৯ শতাংশ এই দুইয়ের মধ্যে যা কম। চতুর্থ দফা পুনঃতফসিল/পুনর্গঠনের ক্ষেত্রে তৃতীয় দফা পুনঃতফসিল/পুনর্গঠনের অনুরূপ ডাউনপেমেন্ট ও মেয়াদ প্রযোজ্য হবে। মেয়াদ হবে প্রথম দফা সর্বোচ্চ ছয় বছর বা ৭২ মাস, দ্বিতীয় দফা সর্বোচ্চ পাঁচ বছর বা ৬০ মাস, তৃতীয় দফা পুনঃতফসিল/পুনর্গঠনের ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ পাঁচ বছর বা ৬০ মাস।

ঋণ খেলাপিদের বড় ছাড়ের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে হাই কোর্টে রিট : ঋণ খেলাপিদের বড় ছাড় দিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের জারি করা সার্কুলারের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে রিট আবেদন দায়ের করা হয়েছে হাই কোর্টে। বিচারপতি জে বি এম হাসানের নেতৃত্বাধীন হাই কোর্ট বেঞ্চে এ রিট দায়ের করা হয়েছে। গতকাল সংশ্লিষ্ট আদালতের ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল তুষার কান্তি রায় বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। মানবাধিকার সংগঠন এইচআরপিবির পক্ষে অ্যাডভোকেট মনজিল মোরসেদ এ রিট দায়ের করেন। অর্থ সচিব, বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরসহ সংশ্লিষ্টদের রিটে বিবাদী করা হয়েছে। গত ১৮ জুলাই ঋণ খেলাপিদের বড় ছাড় দিয়ে সার্কুলার জারি করে বাংলাদেশ ব্যাংক। ব্যাংক খাতে স্থিতিশীলতা বজায় রাখা এবং শ্রেণিকৃত ঋণের সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনার যুক্তি দেখিয়ে ঋণ খেলাপিদের বড় ছাড় দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। ফলে খেলাপি ঋণ নিয়মিত করতে এখন আড়াই থেকে সাড়ে ৪ শতাংশ অর্থ জমা দিলেই চলবে। আগে যা ছিল ১০ থেকে ৩০ শতাংশ। এসব ঋণ পরিশোধ করা যাবে ৫ থেকে ৮ বছরে। আগে এ ধরনের ঋণ পরিশোধে সর্বোচ্চ দুই বছর সময় দেওয়া হতো। খেলাপি ঋণ নবায়ন করার পর আবার নতুন করে ঋণও পাওয়া যাবে। এ বিষয়ে ঋণ পুনঃতফসিলের মাস্টার সার্কুলার জারি করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। ওইদিনই এটি বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর প্রধান নির্বাহীদের কাছে পাঠানো হয়েছে।

সর্বশেষ খবর