বুধবার, ৭ সেপ্টেম্বর, ২০২২ ০০:০০ টা
সীমান্তে আবারও গোলাগুলি

ওপারে লড়াই এপারে আতঙ্ক

বান্দরবান ও কক্সবাজার প্রতিনিধি

বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার ঘুমধুম সীমান্তের ওপারে মিয়ানমারে দুই দিন বন্ধ থাকার পর গতকাল সকাল থেকে আবার গোলাগুলি শুরু হয়েছে। মিয়ানমার সরকারি বাহিনী ও গেরিলাদের এই গোলাগুলি চলছে বলে জানা গেছে। থেমে থেমে ছোড়া হচ্ছে আর্টিলারি ও মর্টার শেল। তবে আকাশে ফাইটার জেট ও হেলিকপ্টার উড়তে দেখা যায়নি। ওপার থেকে নিক্ষিপ্ত কোনো গুলি বা মর্টার শেল এপারে এসে পড়েনি। তবে ভোর থেকেই উৎকণ্ঠায় রয়েছেন সীমান্তের বাসিন্দারা। পুলিশ, স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও সীমান্ত সুরক্ষার দায়িত্বে থাকা সংশ্লিষ্টরা জানান, শনিবার পর্যন্ত টানা ২৩ দিন মিয়ানমারের নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে রাখাইন রাজ্যের স্বাধীনতাকামী বিদ্রোহী সশস্ত্র গোষ্ঠী আরাকান আর্মির (এএ) তুমুল লড়াই চলে। ২৮ আগস্ট পর পর দুটি মর্টার শেল এসে পড়ে সীমান্তের তুমব্রু উত্তরপাড়া এলাকায়। ৩ সেপ্টেম্বর আরও দুটি মর্টার শেল পড়ে বাইশপারি এলাকায়।

স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর আজিজ জানান, গতকাল সকাল থেকে আবারও থেমে থেমে গোলাগুলির শব্দ ভেসে আসছে। ওয়ালিডং পাহাড়ের পূর্ব পাশে খ্য মং সেক পাহাড়ে আরাকান আর্মির সঙ্গে মিয়ানমার সেনাবাহিনীর তুমুল লড়াই চলছে বলে খবর পাওয়া গেছে। শূন্যরেখার বাসিন্দা নুরুল ইসলাম বলেন, মিয়ানমার সরকারের সৈন্যরা গোলাগুলি বেশি করছে। শতাধিক সৈন্য কাঁটাতারের বেড়া দিয়ে মিয়ানমারের অভ্যন্তরে অস্ত্র হাতে নিয়ে টহল দিচ্ছে। রাত দিন নেই, যখন যেখানে খুশি তারা তাদের ইচ্ছেমতো গুলি করছে। এতে ভয়ে আছি। জাহাঙ্গীর আজিজ আরও জানান, সীমান্তের আকাশে এখনো কোনো হেলিকপ্টার বা যুদ্ধবিমান উড়তে দেখা যায়নি। তবে সীমান্তের বাসিন্দারা ভয়ে খেত-খামারে যাচ্ছে না। সীমান্তের স্থানীয় লোকজন জানান, জরুরি প্রয়োজন ছাড়া বের হচ্ছেন না ঘর থেকে। ঘুমধুম ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা নুরুল আলম বলেন, গোলাগুলি আতঙ্কে তারা এখন বাচ্চাদেরও স্কুলে যেতে দিচ্ছেন না। শূন্যরেখার বাসিন্দা রোহিঙ্গা মোহাম্মদ রহিম বলেন, শূন্যরেখায় সাড়ে ৪ হাজার রোহিঙ্গা রয়েছে। আমরা শান্তিতে নেই। আতঙ্কে দিন কাটছে।

নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) সালমা ফেরদৌস বলেন, এপারের বাসিন্দারা যাতে সীমান্তের কাছাকাছি অংশে যেতে না পারে সে বিষয়ে সচেতন করতে- স্থানীয় জনপ্রতিনিধি এবং পুলিশকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। বিজিবির পক্ষ থেকে স্থানীয় প্রশাসনকে জানানো হয়েছে, নিয়মিত টহলের চেয়ে কয়েক গুণ বেশি টহল দিচ্ছে জওয়ানরা।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর