শুক্রবার, ৯ সেপ্টেম্বর, ২০২২ ০০:০০ টা

রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথের জীবনাবসান

৯৬ বছরে সাত দশক যুক্তরাজ্য শাসন

যুক্তরাজ্য প্রতিনিধি ও নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথের জীবনাবসান

ব্রিটেনের রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথ আর নেই। স্কটল্যান্ডের বালমোরো প্রাসাদে ৯৬ বছর বয়সে তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথের মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করেছেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। গতকাল সকালেই রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথের মৃত্যু হলেও সঙ্গে সঙ্গে সংবাদটি প্রকাশ করা হয়নি। সকাল থেকেই ব্রিটেনে রানির গুরুতর অসুস্থ সংবাদটি প্রচার হচ্ছিল। রানির মৃত্যুর পর তার পরিবারের সব সদস্য গিয়ে জড়ো হন বালমোরো প্যালেসে। পরিবারের সব সদস্যের প্রাসাদে ছুটে যাওয়া ও ব্রিটিশ গণমাধ্যমের শোকাবহ আয়োজন দেখে ধারণা করা হচ্ছিল খারাপ কোনো সংবাদ আছে। ব্রিটিশ সময় সন্ধ্যা ৬টা ৩০ মিনিটে রানির মৃত্যু সংবাদটি প্রচার করে বিবিসি। সংবাদটি ব্রিটিশ জনগণের কাছে আসতে অনেকগুলো প্রটোকল মেনে আসতে হয়েছে। রানির মৃত্যুর খবর প্রথমে যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী লিজ ট্রাসকে জানানো হয়। এর পর জেনেছেন সংশ্লিষ্ট শীর্ষ কর্মকর্তারা। আর তা করা হয়েছে বিশেষ কোড ওয়ার্ড অর্থাৎ সংকেতের মাধ্যমে। রানির কোড বা সংকেত ছিল ‘লন্ডন ব্রিজ’। তিনি মারা যাওয়ার পর বিশেষ টেলিফোন লাইনে বিষয়টি জানানোর সময় সংশ্লিষ্ট সরকারি কর্মকর্তা বলেন, ‘লন্ডন ব্রিজ ইজ ডাউন’। আকাশপথে উড়োজাহাজের পাইলটরা যাত্রীদের সংবাদটি জানান। এদিকে এই খবরটি প্রচার হওয়ার আগেই হাজার হাজার মানুষ জড়ো হতে থাকে বাকিংহাম প্যালেসের সামনে। ফুল দিয়ে শত শত মানুষ শোক জানাচ্ছেন, প্রার্থনা করছেন প্রিয় রানির জন্য। রানির মৃত্যু সংবাদে অনেকেই কান্নায় ভেঙে পড়েন। ১৯৫২ সালে রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথের বাবা রাজা ষষ্ঠ জর্জ মারা যাওয়ার পর থেকে যুক্তরাজ্যকে আর কোনো রাষ্ট্রপ্রধানকে অন্তিম বিদায় জানাতে হয়নি। রানির শেষ মুহূর্তে তাঁর পাশে ছিলেন জ্যেষ্ঠ চিকিৎসক অধ্যাপক হিউ টমাস। রানির ঘরে কে কে প্রবেশ করবেন তা নিয়ন্ত্রণ করেছেন সারাদিন তিনি। ঠিক করেছেন সাধারণ মানুষকে কী তথ্য জানানো যেতে পারে, তা-ও। রানি মারা যাওয়ার পর তাঁর ব্যক্তিগত সচিব ক্রিস্টোফার গাইট প্রধানমন্ত্রীকে খবরটি জানান। পরে লন্ডনে পররাষ্ট্র দফতরের গ্লোবাল রেসপন্স সেন্টার থেকে এ খবর যুক্তরাজ্যের বাইরে ১৫টি দেশের সরকারের কাছে পাঠানো হয়। যুক্তরাজ্যের রানিই এসব দেশের রাষ্ট্রপ্রধান। এ ছাড়া রানির প্রভাব রয়েছে কমনওয়েলথভুক্ত এমন ৩৬টি দেশেও খবরটি পাঠানো হয়। এসব দেশের প্রধানমন্ত্রী, গভর্নর জেনারেল ও রাষ্ট্রদূতেরা শোক প্রকাশ করতে বাঁ বাহুতে সোয়া ৩ ইঞ্চি প্রশস্ত কালো বন্ধনী পরবেন। বাকিংহাম প্যালেসের ফটকে কালো নোটিস টাঙানো হয়েছে। প্রাসাদের ওয়েবসাইটটিও একই রং ধারণ করবে। রানির মৃত্যুতে পার্লামেন্টের উভয় কক্ষের অধিবেশন ডাকা হবে, সাধারণ মানুষকে কাজ থেকে দ্রুত ছুটি দিয়ে বাড়ি পাঠানো হয়েছে। রানির মৃত্যুর পর তাঁর বড় ছেলে ‘প্রিন্স অব ওয়েলস’ প্রিন্স চার্লসকে রাজা ঘোষণা করা হয়েছে। চার্লস ও নতুন রানি ক্যামিলা যুক্তরাজ্যের অন্তর্ভুক্ত ইংল্যান্ড, ওয়েলস, স্কটল্যান্ড এবং নর্দার্ন আয়ারল্যান্ড সফর করবেন। এর সবকিছু সেই ১৯৬০-এর দশক থেকেই নির্ধারিত। রানির প্রয়াণের পরই প্রক্রিয়াটি শুরু হয়েছে।

 

 

সর্বশেষ খবর