সোমবার, ১২ সেপ্টেম্বর, ২০২২ ০০:০০ টা

পাকিস্তানকে উড়িয়ে লঙ্কার জয়

আসিফ ইকবাল

পাকিস্তানকে উড়িয়ে লঙ্কার জয়

অর্থনৈতিক বিধ্বস্ত কলম্বো ছাড়ার আগে দেশবাসীকে স্বপ্ন দেখিয়েছিলেন দানুস শানাকা। বলেছিলেন, দেশে ফিরবেন এশিয়া শাসনের রাজমুকুট নিয়ে। কথা রেখেছেন দাসুন শানাকা। কুশল মেন্ডিস, হাসারাঙ্গা, রাজাপক্ষে, মাদুসাঙ্কাদের নিয়ে দেশবাসীর স্বপ্ন পূরণ করেছেন। পাকিস্তানকে ২৩ রানে হারিয়ে এশিয়া কাপের শিরোপা জিতেছে শ্রীলঙ্কা। ২০১৪ সালের পর পুনরায় এশিয়া কাপে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে ‘দ্বীপরাষ্ট্র’। অথচ এশিয়ার শ্রেষ্ঠত্ব অর্জনের মিশন শুরু করেছিল শানাকা বাহিনী আফগানিস্তানের বিপক্ষে অসহায় হারে। দ্বিতীয় ম্যাচে বাংলাদেশের বিপক্ষে জয়ের পর চিত্র পাল্টাতে থাকে। সময় গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে শ্রীলঙ্কা খোলশ ছেড়ে বেরিয়েছে। টানা ৫ জয়ে চ্যাম্পিয়ন হয়ে বাড়ি ফিরছেন দাসুন শানাকারা। এশিয়া কাপের ১৫ আসরে শ্রীলঙ্কার এটা ৬ নম্বর শিরোপা। ৭ বার চ্যাম্পিয়ন হয়ে সবার উপরে ভারত এবং ২ বার চ্যাম্পিয়ন হয়েছে পাকিস্তান। অশান্ত  শ্রীলঙ্কা উৎসবে মেতেছে। আকাশসমান চাপ সামলে নান্দনিক ব্যাটিংয়ের বহু রেকর্ডস আছে। গতকাল দুবাইয়ে সেই রেকর্ডসের ভাগীদার হয়েছেন ভানুকা রাজাপক্ষে। ৫৮ রানে ৫ উইকেট হারিয়ে শ্রীলঙ্কা যখন পুরোপুরি কোণঠাসা, তখন হিমালয়সমান দৃঢ়তায় ব্যাটিং করেন রাজাপক্ষে। শুধু দৃঢ়তার পরিচয় দেননি, খাঁদের কিনারায় দাঁড়িয়ে থেকে দলকে টেনে নিয়ে যান। তার ২৭ ম্যাচ ক্যারিয়ারের তৃতীয় হাফসেঞ্চুরিতে শ্রীলঙ্কার সংগ্রহ ২০ ওভারে ৬ উইকেটে ১৭০ রান। রাজাপক্ষে ৭১ রানের হার না মানা ইনিংসটি খেলেন ৪৫ বলে ৬ চার ও ৩ ছক্কায়। লড়াকু ইনিংসটি খেলতে অবশ্য তিনি জীবন পেয়েছেন দুবার। তিনি ৫০ রান করেন ৩৫ বলে ৫ চার ও ১ ছক্কায়। পরের ২১ রান করেন ১০ বলে আরও একটি চার ও ২ ছক্কায়। শ্রীলঙ্কার এই স্কোর গড়তে দুটি জুটির গুরুত্ব ছিল অনেক। ৮.৫ ওভারে ৫৮ রানে ৫ উইকেটের পতনের পর জুটি বাঁধেন রাজাপক্ষে ও হাসারাঙ্গা। দুজনে ষষ্ঠ উইকেট জুটিতে ৩৬ বলে যোগ করেন ৫৮ রান। হাসারাঙ্গা ২১ বলে ৫ চার ও ১ ছক্কায় ৩৬ রান করেন। সপ্তম উইকেট জুটিতে রাজাপক্ষে ও চাম্মিরা করুণারতেœ ১৩ বলে ৫৪ রান যোগ করেন। দুবাইয়ে জমাটি ফাইনালে শ্রীলঙ্কার দুইভাগে বিভক্ত। প্রথমভাগে পাকিস্তান বোলিংয়ে অসহায় এবং দ্বিতীয়ভাগে দ্বীপরাষ্ট্রের শাসন। কুয়াশাচ্ছন্ন আবহাওয়ায় টস জিতে ফিল্ডিং করে পাকিস্তান। দুই পেসার নাসিম শাহ ও হারিস রউফ চেপে ধরেন লঙ্কান ব্যাটারদের। পাওয়ার প্লে’র ৬ ওভারে ৩ উইকেট তুলে নেন। এক পর্যায়ে ৫৮ রানে ৫ উইকেট হারিয়ে কোণঠাসা হয়ে পড়ে শ্রীলঙ্কা। প্রথম ১০ ওভারে শ্রীলঙ্কার ৫ উইকেটে ৬৭ রান। চাপ সামলে শেষ ১০ ওভারে স্কোর কার্ডে যোগ করেন ১০৩ রান। রাজাপক্ষের দুর্দান্ত ব্যাটিংয়েও দারুণ বোলিং করেন নাসিম ও রউফ। দুজনে ৮ ওভারে ৬৯ রানের খরচে নেন ৪ উইকেট।

টার্গেট ১৭১। চলতি আসরে এর চেয়েও বেশি রান তাড়া করে জয়ের রেকর্র্ড রয়েছে পাকিস্তানের। চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী ভারতের ১৮১ রান তাড়া করে জিতেছিল ম্যাচ। সেই আত্মবিশ্বাসে ব্যাটিং করে পাকিস্তান। ছন্দ হারিয়ে ফেলা বাবর গতকালও ব্যর্থ হয়েছেন। অথচ ইনিংসের প্রথম বলে দিলশান মাদুশাঙ্কা শূন্য বলে নো-ওয়াইডে ৯ রান দেন। ইনিংসের প্রথম বলে ১০ রান নিয়ে খেলেছে পাকিস্তান। প্রমোদ মাদুশানের বলে মাত্র ৫ রানে সাজঘরে ফিরেন বাবর। সব মিলিয়ে এশিয়া কাপের ৬ ম্যাচে বাবরের রান ৬৮। পরের বলেই আউট হন আরেক ছন্দহীন ব্যাটার ফখর। সেখান থেকে তৃতীয় উইকেট জুটিতে রিজওয়ান ও ইফতেখার ৯.৫ ওভারে যোগ করেন ৭১। ইফতেখার ৩১ বলে ৩২ রান করেন। রাজাপক্ষের মতো লড়াকু ব্যাটিং করেন রিজওয়ান। হাসারাঙ্গা বলে সুইপ খেলে ডিপ মিডউইকেটে তালুবন্দী হন ধানুস্কার। সাজঘরে ফেরার আগে ৪৯ বলে ১ ছক্কা ও ৪ চারে ৫৫ রান করেন। আসরে রিজওয়ানের রান ৩ হাফসেঞ্চুরিতে ৬ ম্যাচে ২৮১ রান। লঙ্কান বোলারদের দুরন্ত বোলিংয়ে পাকিস্তান অলআউট হয় ১৪৭ রানে।                          

সর্বশেষ খবর