মঙ্গলবার, ১৩ সেপ্টেম্বর, ২০২২ ০০:০০ টা
বিশ্বব্যাংকের প্রতিবেদন

ঘূর্ণিঝড়ে মৃত্যুহার শতগুণ কমিয়েছে বাংলাদেশ

নিজস্ব প্রতিবেদক

বিশ্বব্যাংক বলছে স্বাধীনতার পর থেকে ঘূর্ণিঝড়ের আঘাতে বাংলাদেশ মৃত্যুহার শতগুণ কমিয়ে এনেছে। এটা দেশটির জন্য একটি বড় অর্জন। এ অর্জন ধরে রাখতে ও টেকসই প্রবৃদ্ধির জন্য বৈশ্বিক উপকূলীয় অঞ্চলে আরও সহনশীল বিনিয়োগ প্রয়োজন। গতকাল বিশ্বব্যাংকের প্রকাশিত ‘বাংলাদেশ এনহান্সিং কোস্টাল রেজিলিয়েন্স ইন এ চেঞ্জিং ক্লাইমেট’ শীর্ষক প্রতিবেদনে এ কথা বলা হয়েছে। ঢাকার একটি হোটেলে এক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে প্রতিবেদনটি প্রকাশ করা হয়। এতে উল্লেখ করা হয়-রিপোর্টে জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় এ দেশের যাত্রা তুলে ধরেছে এবং উপকূলীয় এলাকায় সহনশীলতা বাড়াতে অধিকতর কার্যক্রম হাতে নেওয়ার সুপারিশ করেছে। জলবায়ু পরিবর্তনের ঝুঁকিতে থাকলেও বাংলাদেশ জলবায়ু পরিবর্তনের সঙ্গে অভিযোজনে বিশ্বে নেতৃত্বস্থানীয় ভূমিকা রেখেছে এবং উপকূল সহনশীলতায় সক্রিয়ভাবে বিনিয়োগের জন্য পরিচিত। বাংলাদেশ দেখিয়েছে, দুর্যোগঝুঁকি কমাতে দীর্ঘমেয়াদি বিনিয়োগ কীভাবে জীবন রক্ষা করে, অর্থনৈতিক ক্ষয়ক্ষতি কমায় এবং উন্নয়ন অর্জন রক্ষা করে। একটি কৌশলগত নীতিকাঠামোর আওতায় মাঠ পর্যায়ে অভিযোজন এবং কমিউনিটিভিত্তিক পূর্ব সতর্কীকরণ ব্যবস্থা থেকে শুরু করে প্রকৃতিভিত্তিক সমাধান এবং উদ্ভাবনে উৎসাহ দেওয়ার মাধ্যমে অবকাঠামো বিনিয়োগে নানা উদ্যোগের কারণে এ অর্জন সম্ভব হয়েছে। স্বাধীনতার পর থেকে বাংলাদেশ ঘূর্ণিঝড়ে প্রাণহানি ১০০ গুণ কমিয়েছে। জলবায়ু ঝুঁকি মোকাবিলায় দেশটির জন্য এটা একটা বড় অর্জন।

তবে দ্রতবর্ধনশীল জনসংখ্যা, পরিবেশগত অবনতি এবং ক্রমবর্ধমান জলবায়ু ঝুঁকি উপকূলীয় অঞ্চলের বিদ্যমান প্রাকৃতিক ও অবকাঠামো ব্যবস্থার ওপর চাপ সৃষ্টি করছে, যেখানে প্রায় ৪ কোটি মানুষ বাস করে। সহনশীলতা বাড়াতে বাংলাদেশকে আরও জরুরি কিছু উদ্যোগ নেওয়া প্রয়োজন। অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ ও ভুটানে নিযুক্ত বিশ্বব্যাংকের ভারপ্রাপ্ত কান্ট্রি ডিরেক্টর ড্যানড্যান চেন বলেন, উপকূলে সহনশীলতা কোনো অপরিবর্তনীয় লক্ষ্য নয়, বরং পরিবর্তিত পরিস্থিতির সঙ্গে খাপ খাইয়ে নেওয়া এবং উন্নয়ন লক্ষ্যগুলোর মধ্যে সমন্বয় খুঁজে বের করা এর লক্ষ্য। বিশ্বব্যাংক বাংলাদেশকে ৫০ বছর ধরে জলবায়ু সহনশীলতা ও দুর্যোগঝুঁকি ব্যবস্থাপনার উন্নতিতে সহায়তা করছে। আজ বাংলাদেশ দুর্যোগ মোকাবিলার প্রস্তুতি এবং জলবায়ু সহনশীলতার উন্নতিতে মূল্যবান অভিজ্ঞতা অর্জন করছে, যা অন্যান্য জলবায়ু ঝুঁকিগ্রস্ত দেশের জন্য অনুপ্রেরণা। রিপোর্টে আরও বলা হয়- উপকূলে জলবায়ু-সহিষ্ণুতায় অধিকতর বিনিয়োগ বাংলাদেশের অর্থনৈতিক, সামাজিক ও পরিবেশগত উন্নয়ন ঘটাবে এবং এ ক্ষেত্রে এখনই কাজ করতে হবে। উপকূলীয় এলাকায় সহনশীলতা বাড়াতে রিপোর্টে সাতটি মূল সুপারিশ করা হয়েছে, যার মধ্যে রয়েছে অবকাঠামোর পরিচালন ও রক্ষণাবেক্ষণ জোরদার, স্থানীয় অভিজ্ঞতার স্বীকৃতি এবং অত্যাধুনিক মডেলিং টুলসের ব্যবহার।

 

 

সর্বশেষ খবর