শনিবার, ১৭ সেপ্টেম্বর, ২০২২ ০০:০০ টা
নিউইয়র্ক পৌঁছাবেন সোমবার

লন্ডনে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী

আ স ম মাসুম, যুক্তরাজ্য

লন্ডনে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী

লন্ডনে শুক্রবার স্থানীয় সময় সকাল সাড়ে ১০টায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন কমনওয়েলথ মহাসচিব প্যাট্রিসিয়া স্কটল্যান্ড -বাংলাদেশ প্রতিদিন

ব্রিটিশ রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথের শেষকৃত্যের অনুষ্ঠানে যোগ দিতে যুক্তরাজ্যে আসা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন। বৃহস্পতিবার তিনি লন্ডনে পৌঁছান। সফরের দ্বিতীয় দিন গতকাল কমনওয়েলথ মহাসচিব প্যাট্রিসিয়া স্কটল্যান্ড প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন। এরপর যুক্তরাজ্যের ফরেন, কমনওয়েলথ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট অফিস (এফসিডিও)-এ দক্ষিণ এশিয়া, উত্তর আফ্রিকা, জাতিসংঘ ও কমনওয়েলথ বিষয়ক মন্ত্রী লর্ড আহমদ সেখানে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। এর আগে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা লন্ডনে পৌঁছালে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের যুক্তরাজ্য শাখা তাঁকে স্বাগত জানিয়েছে। যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা প্রধানমন্ত্রীকে লন্ডনে ক্ল্যারিজ হোটেলে ফুলের তোড়া দিয়ে স্বাগত জানান। যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগের সভাপতি সুলতান মাহমুদ শরীফ, সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ সাজিদুর রহমান ফারুকের নেতৃত্বে যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দ প্রধানমন্ত্রীকে ফুলেল শুভেচ্ছা জানান। এ সময় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগের উপদেষ্টামণ্ডলীর চেয়ারম্যান আলহাজ শামসুদ্দিন খান, সিনিয়র সহ-সভাপতি আলহাজ জালাল উদ্দিন, সহ-সভাপতি অধ্যাপক আবুল হাশেম, সহ-সভাপতি হরমুজ আলী, যুগ্ম সম্পাদক নঈম উদ্দিন সিরাজ, মারুফ আহমেদ চৌধুরী ও সাংগঠনিক সম্পাদক আবদুল আহাদ চৌধুরী প্রমুখ।

সফরসূচি অনুসারে, আজ যুক্তরাজ্যের বিরোধীদলীয় এবং লেবার পার্টির নেতা স্যার কেইর স্টারমার প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করবেন। আগামীকাল বাকিংহাম প্যালেসে রাষ্ট্র ও সরকার প্রধানদের সম্মানে যুক্তরাজ্যের রাজার আয়োজিত এক সংবর্ধনায় যোগ দেবেন। ১৯ সেপ্টেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ওয়েস্টমিনিস্টার অ্যাবেতে রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথের শেষকৃত্য অনুষ্ঠানে অংশ নেবেন। একই দিন সন্ধ্যায় বাংলাদেশ বিমানের বিশেষ ফ্লাইটে নিউইয়র্কের উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রী লন্ডন ত্যাগ করবেন। জন এফ কেনেডি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে প্রধানমন্ত্রীকে স্বাগত জানাবেন যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মুহাম্মদ ইমরান এবং জাতিসংঘে বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি মুহাম্মদ আবদুল মুহিত। ২০ সেপ্টেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাতিসংঘ মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেসের আয়োজিত সংবর্ধনা এবং জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ৭৭তম অধিবেশনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে যোগ দেবেন।

 

স্বাগতম স্লোগানে মুখর বাংলাদেশিদের এলাকা

‘শেখ হাসিনার আগমন-শুভেচ্ছা-স্বাগতম’ স্লোগানে মুখরিত নিউইয়র্ক সিটির বাংলাদেশি অধ্যুষিত অলিগলি। এসব এলাকায় শেখ হাসিনার জাতিসংঘ সফরের সমর্থনে পোস্টারিং করাও হয়েছে। অন্যদিকে বিএনপি বলছে, শেখ হাসিনাকে প্রতিরোধ করতে হবে। শেখ হাসিনা জাতিসংঘের চলতি ৭৭তম অধিবেশনে যোগ দিতে ১৯ অক্টোবর সন্ধ্যায় নিউইয়র্কে আসছেন। জাতিসংঘের কর্মসূচি শেষে তিনি ওয়াশিংটন ডিসিতে যাবেন এবং ১ অক্টোবর পর্যন্ত তাঁর যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থানের কথা।

যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ, নিউইয়র্ক মহানগর আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে ১৫ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যায়ও গণসংযোগ করা হয় শেখ হাসিনার সফরের সমর্থনে। র‌্যালি অনুষ্ঠিত হয়েছে জ্যাকসন হাইটসে। সমাবেশ করা হয় নবান্ন পার্টি হলে মহানগর আওয়ামী লীগের উদ্যোগে। এতে সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের সভাপতি জাকারিয়া চৌধুরী এবং সঞ্চালনা করেন ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারি সুব্রত তালুকদার। বক্তারা জেএফকে এয়ারপোর্টে ১৯ সেপ্টেম্বর সাদর অভ্যর্থনা এবং জাতিসংঘে শেখ হাসিনার ভাষণের সময় বাইরে (২৩ সেপ্টেম্বর) শান্তি সমাবেশকে সাফল্যমণ্ডিত করতে নেতা-কর্মীদের প্রতি উদাত্ত আহ্বান জানান। তারা বলেন, শত শত  নেতা-কর্মী জড়ো হলে জামায়াত-শিবিরের সব অপতৎপরতা আপনা-আপনি নিশ্চিহ্ন হয়ে যাবে।

এ সমাবেশের আগে নবান্ন রেস্টুরেন্টের সামনে ৭৩ স্ট্রিটের ওপর স্বেচ্ছাসেবক লীগের ব্যানারে ‘শেখ হাসিনার সফরের সমর্থনে’ এক র‌্যালি অনুষ্ঠিত হয়। সুবল দেবনাথের সঞ্চালনায় এতে সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের সভাপতি নুরুজ্জামান সরদার। প্রায় একই স্থানে নিউইয়র্ক মহানগর আওয়ামী লীগের ব্যানারে আরেকটি র‌্যালিতে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন নুরল আমিন বাবু।

এদিকে, শেখ হাসিনার সফরের সমর্থনে জ্যাকসন হাইটস, ব্রুকলিন, ওজোনপার্ক, জ্যামাইকা, ব্রঙ্কসে রং-বেরঙের পোস্টার লাগানো হয়েছে। সর্বত্র একই আলোচনা। কিছুটা উত্তেজনাও রয়েছে বিএনপির পক্ষ থেকে ‘যেখানে হাসিনা-সেখানেই প্রতিরোধ’ কর্মসূচির সমর্থনে জনসংযোগ চলে। এ কর্মসূচি প্রসঙ্গে ১৫ সেপ্টেম্বর বৃহস্পতিবার অপরাহ্ণে যুক্তরাষ্ট্র বিএনপির সাবেক ভারপ্রাপ্ত সভাপতি এবং আন্তর্জাতিক সম্পাদক গিয়াস আহমেদ ও যুবদলের কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক সহ-আন্তর্জাতিক সম্পাদক এম এ বাতিন এক যুক্ত বিবৃতিতে বলেছেন, ‘কেয়ারটেকার সরকার গঠিত না হওয়া পর্যন্ত বাংলাদেশের নির্বাচন বিএনপি মানবে না। এ দাবির সমর্থনে আন্তর্জাতিক জনমত জোরদার কল্পেই শেখ হাসিনাকে নিউইয়র্কে প্রতিরোধ করা জরুরি।’

যুক্তরাষ্ট্র জাসাসের আহ্বায়ক ইঞ্জিনিয়ার সায়েম রহমানে সভাপতিত্বে এবং সদস্য-সচিব জাহাঙ্গীর সোহরাওয়ার্দীর সঞ্চালনায় ১৫ সেপ্টেম্বর দুপুরে ভার্চুয়ালি এক মিটিং অনুষ্ঠিত হয়।

সর্বশেষ খবর