রবিবার, ১৮ সেপ্টেম্বর, ২০২২ ০০:০০ টা
লন্ডনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা

সর্বোচ্চ সংযম দেখাচ্ছি মিয়ানমারের ব্যাপারে

আ স ম মাসুম, যুক্তরাজ্য

সর্বোচ্চ সংযম দেখাচ্ছি মিয়ানমারের ব্যাপারে

লন্ডনে গতকাল প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন ব্রিটেনের বিরোধীদলীয় নেতা কিয়ার স্টারমার -পিআইডি

মিয়ানমারের সংঘাতের প্রভাব নিজ অঞ্চলে পড়ার পরও বাংলাদেশ সর্বোচ্চ সংযম দেখাচ্ছে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। গতকাল লন্ডনে ব্রিটিশ লেবার পার্টির প্রধান এবং বিরোধীদলীয় নেতা স্যার কিয়ার স্টারমারের সঙ্গে বৈঠকে তিনি এ কথা বলেন। বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা লেবার পার্টির নেতাকে রোহিঙ্গাদের দীর্ঘায়িত উপস্থিতি কীভাবে বাংলাদেশের ওপর বোঝা হয়ে যাচ্ছে, সে সম্পর্কে জানান। এ সময় তারা বাংলাদেশ সীমান্তের কাছে দেশটির সাম্প্রতিক সশস্ত্র সংঘাতের বিষয়েও আলোচনা করেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, এ সংঘাতের প্রভাব বাংলাদেশের অভ্যন্তরে পড়ার পরও সর্বোচ্চ সংযম দেখিয়ে বাংলাদেশ পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছে। প্রয়াত ব্রিটিশ রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথের শেষকৃত্য অনুষ্ঠানে যোগ দিতে চার দিনের সফরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বর্তমানে লন্ডনে অবস্থান করছেন। প্রধানমন্ত্রীর সফরের তৃতীয় দিন গতকাল সকালে তাঁর সঙ্গে ব্রিটেনের প্রধান বিরোধী দল লেবার পার্টির লিডার কিয়ার স্টারমার সাক্ষাৎ করেন। ব্রিটেন সময় সকাল ১০টায় এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে ব্রিটেনের বিরোধী দলের নেতা ও লেবার পার্টির প্রধান স্যার কিয়ার স্টারমার বলেছেন, ‘বাংলাদেশ ও যুক্তরাজ্য চমৎকার সম্পর্কে আবদ্ধ এবং বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত ব্রিটিশ নাগরিকদের দ্বারা এ সম্পর্ক আরও শক্তিশালী হয়েছে।’ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও জানান, ব্রিটেনের সঙ্গে আমাদের ঐতিহাসিক সম্পর্ক রয়েছে। তারা ব্রিটেনের লেবার পার্টির সাবেক প্রধানমন্ত্রী স্যার হ্যারল্ড উইলসনের সঙ্গে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সাক্ষাৎ এবং ব্যক্তিগত সম্পর্কের কথাও স্মরণ করেন। বৈঠকে কিয়ার স্টারমার লেবার পার্টিতে ব্রিটিশ বাংলাদেশিদের অবদান, চারজন ব্রিটিশ বাংলাদেশি এমপির অবদান নিয়ে কথা বলেন। সাক্ষাতের সময় দুই নেতা গ্লোবাল সাউথ এলাকায় ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাব নিয়েও আলোচনা করেন। বিশ্বের মানুষকে খাদ্য, জ্বালানি এবং আর্থিক দুরবস্থা থেকে রক্ষা করতে এ সংঘাত আলোচনার মাধ্যমে নিষ্পত্তির ওপর গুরুত্ব দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি এ যুদ্ধের কারণে দেওয়া নিষেধাজ্ঞাগুলো পুনর্বিবেচনা করার প্রস্তাব দেন, যা উন্নয়নশীল দেশগুলোর ওপর প্রভাব ফেলছে। বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুুল মোমেন, পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম, যুক্তরাজ্যে নিযুক্ত বাংলাদেশের হাইকমিশনার সাঈদা মুনা তাসনিম। এর আগে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মেরিলিবোনের লর্ড স্বরাজ পলের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। ইউকে হাউস অব লর্ডসের প্রবীণ এ সদস্য প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বের প্রতি তার প্রশংসা পুনর্ব্যক্ত করেন। তিনি দুই দেশের মধ্যে ব্যবসা ও শিক্ষা অংশীদারত্বকে আরও উন্নীত করতে আগ্রহ প্রকাশ করেন। এ ছাড়া প্রয়াত রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথের সঙ্গে ব্যক্তিগত স্মৃতি এবং কমনওয়েলথ পরিবারে জীবনব্যাপী তার অবদানের ওপর প্রধানমন্ত্রী বিবিসিকে একটি সাক্ষাৎকারও দেন। এটি আজ (রবিবার) সকাল ৯টায় প্রচার করা হবে। প্রসঙ্গত, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সফরকে ঘিরে যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগ একটি সভা করার পরিকল্পনা করেছিল গতকাল সন্ধ্যায়। সেটি বাতিল করা হয় রানির প্রতি সম্মান জানিয়ে। এ ছাড়া দুপুরে বিভিন্ন ক্ষেত্রে সফল ব্রিটিশ বাংলাদেশিদের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর পূর্বনির্ধারিত একটি ভার্চুয়াল বৈঠকও বাতিল করা হয় একই কারণে।

সর্বশেষ খবর