বুধবার, ২১ সেপ্টেম্বর, ২০২২ ০০:০০ টা
বিদেশি কূটনীতিকদের সরকার

ফায়দা লুটতে দেওয়া হবে না মিয়ানমারকে

কূটনৈতিক প্রতিবেদক

সীমান্ত এলাকায় মিয়ানমারের মর্টার শেল ও গোলা নিক্ষেপের ঘটনা ঢাকায় নিযুক্ত বিভিন্ন দেশের কূটনীতিকদের অবহিত করেছে বাংলাদেশ। ঘটনার শান্তিপূর্ণ সমাধানে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে কূটনীতিকদের সহায়তাও চাওয়া হয়েছে।    গতকাল পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের আমন্ত্রণে সাড়া দিয়ে কূটনীতিকরা এলে তাঁদের পরিস্থিতি সম্পর্কে অবহিত করেন রিয়ার অ্যাডমিরাল (অব.) মো. খুরশেদ আলম। পরে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, সীমান্তে অব্যাহত উসকানিতে মিয়ানমার যেন কোনো ধরনের ফায়দা নিতে না পারে এজন্য রাষ্ট্রদূতদের পরিস্থিতি অবহিত করা হয়েছে। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা জানান, রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন পদ্মায় কূটনৈতিক ব্রিফিংয়ে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, মিসর, তুরস্ক, জাপানসহ বিভিন্ন দেশের কূটনীতিকরা যোগ দেন। তবে চীনের কোনো কূটনীতিক কিংবা দেশটির ঢাকা দূতাবাসের কর্মকর্তারা বৈঠকে অংশ নেননি। কূটনীতিকরা বাংলাদেশের অবস্থানে সন্তোষ প্রকাশ করে আশ্বাস দিয়েছেন, সীমান্ত পরিস্থিতি নিয়ে জাতিসংঘে গেলে বাংলাদেশকে সহায়তা করবেন তাঁরা। ব্রিফিং শেষে ভারপ্রাপ্ত পররাষ্ট্র সচিব অবসরপ্রাপ্ত রিয়ার অ্যাডমিরাল খুরশেদ আলম বলেন, কূটনীতিকদের আমরা বলেছি, আমরা রোহিঙ্গাদের নিয়েছি পাঁচ বছর হয়ে গেল, তারা একটা রোহিঙ্গাও আজ পর্যন্ত ফেরত নেয়নি, আমাদের প্রধানমন্ত্রীও বলেছেন আমরা ধৈর্যের সঙ্গে কাজ করছি। আসলেই, আমরা ধৈর্যের সঙ্গে কাজ করছি। কিন্তু আমরা এমন কিছু করিনি, যার জন্য মিয়ানমারের গোলা এসে আমাদের যে জনগণ, যারা আমাদের সীমান্তের ভিতরে আছে তাদের জানমালের নিরাপত্তা ব্যাহত করবে এবং তারা গরু-বাছুর নিয়ে বাইরে যেতে পারবে না, তাদের ধান খেতে যেতে পারবে না, তাদের ঘরবাড়িতে থাকতে পারবে না, এটা তো চলতে দেওয়া যায় না। এ কারণে আমরা তাদের কাছে বলেছি, আপনাদের সাহায্য আমরা চাই, যাতে মিয়ানমার এ অঞ্চলে একটা অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টি করে ভবিষ্যতে ফায়দা লুটতে না পারে, যাতে এ রোহিঙ্গাদের ফেরত নিতে না হয়। তিনি বলেন, আমরা কোনোভাবে চাই না এখানে জড়িত হতে, যাতে এখানে জড়িত হলে মিয়ানমার হয়তো সুযোগ পাবে, এই রোহিঙ্গাদের ফেরত না নেওয়ার জন্য অজুহাত পাবে, সেই রকম কোনো অজুহাত আমরা মিয়ানমারকে এ মুহূর্তে দিতে চাচ্ছি না। কূটনীতিকদের প্রতিক্রিয়া কী ছিল- এ প্রশ্নে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মেরিটাইম বিষয়াবলি ইউনিটের এই সচিব বলেন, আমরা যে চরম ধৈর্য দেখাচ্ছি এবং আমরা যে কোনো উসকানিতে পা দিচ্ছি না, এটাকে তাঁরা অ্যাপ্রিশিয়েট করেছেন। এবং তাঁরা বলেছেন, তাঁরা তাঁদের রাজধানীতে এ বিষয়গুলো জানাবেন এবং ভবিষ্যতে যদি কোনো কিছু করণীয় থাকে, বিশেষ করে জাতিসংঘে যদি কোনো কিছু করণীয় থাকে, তাঁরা আমাদের সে বিষয়ে সহায়তার আশ্বাস প্রদান করেছেন। সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে খুরশেদ আলম বলেন, ‘মিয়ানমারের মর্টার শেল ও গোলা নিক্ষেপের ঘটনা এ অঞ্চলকে অস্থিতিশীল করে ফেলবে। কাজেই মিয়ানমার সরকারকে এটা বুঝতে হবে। তাদের বুঝতে হবে, বাংলাদেশ হলো পশ্চিমে, দক্ষিণে আরাকান আর্মি। তাদের গোলা কোনোভাবেই বাংলাদেশে আসার কথা নয়।’ অন্য এক প্রশ্নের জবাবে খুরশেদ বলেন, ‘আমরা সর্বস্তরেই মিয়ানমারের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছি যাতে মিয়ানমার বুঝতে পারে, এ রকম একটা অস্থিতিশীল পরিস্থিতি তাদের জন্যও বিপজ্জনক। আমরা এটা কোনোভাবেই গ্রহণ করব না।’

 

সর্বশেষ খবর