বৃহস্পতিবার, ২২ সেপ্টেম্বর, ২০২২ ০০:০০ টা

সাফ চ্যাম্পিয়নদের বীরোচিত সংবর্ধনা

রাশেদুর রহমান

সাফ চ্যাম্পিয়নদের বীরোচিত সংবর্ধনা

ছবি : রোহেত রাজীব

‘সাফ চ্যাম্পিয়নশিপজয়ী নারী ফুটবলারদের হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের পক্ষ থেকে জানাই প্রাণঢালা অভিনন্দন ও শুভেচ্ছা।’ সাফ চ্যাম্পিয়নশিপজয়ী সাবিনা খাতুনরা ঢাকায় পা রাখতেই বিমানবন্দরের মাইকে থেমে থেমে এই ঘোষণা চলতে লাগল। কিছুক্ষণ পরই ইমিগ্রেশনের আনুষ্ঠানিকতা শেষ করে বেরিয়ে এলেন সাবিনা খাতুনরা। চারপাশ থেকে তাদের ঘিরে ধরলেন সংবাদকর্মীরা। গলায় ফুলের মালা দিয়ে ও মিষ্টিমুখ করিয়ে বাংলাদেশের অদম্য মেয়েদের বরণ করে নেন যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী এবং বাফুফের কর্মকর্তারা। গতকাল দুপুর ১টা ৪৫ মিনিটে ঢাকায় অবতরণ করে সাফজয়ী নারী ফুটবল দল।

ইউরোপিয়ান ফুটবল চ্যাম্পিয়নদের মতোই বরণ করা হলো সাবিনা খাতুনদের। বিমানবন্দরের ভিআইপি টার্মিনালের গেটেই তাদের জন্য অপেক্ষায় ছিল ‘চ্যাম্পিয়ন’ লেখা দ্বিতল ছাদখোলা বাস। অপেক্ষায় ছিল  ব্যান্ডদল।

তারা ঢাক-ঢোল বাজিয়ে চারপাশ কাঁপিয়ে তোলেন। হাজার হাজার ফুটবলপ্রেমী ফুল হাতে নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকেন লাইন ধরে। চ্যাম্পিয়নদের অভিবাদন জানাতে বাংলাদেশ ক্রীড়া শিক্ষা প্রতিষ্ঠান (বিকেএসপি) থেকে বেশ বড় একটা দল নিয়ে আসেন ফুটবল কোচ জয়া চাকমা। ভিআইপি গেটের পাশে ভিড় সামলানোই মুশকিল হয়ে পড়ে নিরাপত্তাকর্মীদের জন্য। সাবিনা খাতুনরা ইমিগ্রেশন পেরিয়ে এলেও প্রচ  ভিড়ের কারণে বের হতে পারছিলেন না। বিমানবন্দরে সংবাদ সম্মেলন হওয়ার কথা থাকলেও প্রথমে তা করা সম্ভব হয়নি। নিরাপত্তাকর্মীরা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে ব্যর্থ হলে ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী সাংবাদিকদের সঙ্গে মিলে নিজেই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করেন। ছোট্ট বক্তৃতায় সাফজয়ী দলের অধিনায়ক সাবিনা খাতুন ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রীসহ সবাইকে ধন্যবাদ জানান রাজকীয় সংবর্ধনা দেওয়ার জন্য। ‘চ্যাম্পিয়ন’ লেখা ছাদখোলা বাসে চেপেই গোলাম রব্বানী ছোটনের শিষ্যরা যাত্রা করেন বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন ভবনের দিকে। বিমানবন্দর থেকে বের হতেই অভূতপূর্ব দৃশ্য দেখতে পান নারী ফুটবলাররা। রাস্তার পাশে লাখ লাখ মানুষ অপেক্ষায় ছিলেন তাদেরকে বরণ করতে। বিভিন্ন সামাজিক সংগঠনের ব্যানার নিয়ে হাজির হন অনেকে। শিশু-কিশোররাও বাদ পড়েনি এই তালিকা থেকে। ছেলে-বুড়ো-নারী-শিশু আর ধনী-গরিব একই শ্রেণিতে মিশে গিয়েছিল গতকাল। সব ভেদাভেদ ভুলে সবাই হয়ে পড়েছিল ফুটবলপ্রেমী। বাঘ সেজে আসা শোয়েব বলছিলেন, ‘আমি এখানে বাংলাদেশের পতাকা নিয়ে এসেছি চ্যাম্পিয়ন মেয়েদের বরণ করে নিতে।’ প্রচ  গরম সহ্য করে ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করে সাবিনাদের অভিবাদন জানিয়েছে মানুষ।

বিমানবন্দর থেকে কাকলী, জাহাঙ্গীর গেট, প্রধানমন্ত্রীর অফিস, তেজগাঁও, কাকরাইল হয়ে প্রায় ৫ ঘণ্টার যাত্রা শেষে সন্ধ্যায় বাফুফে ভবনে পৌঁছে নারী ফুটবলাররা। সেখানে তাদেরকে বরণ করে নেওয়া হয় আরেক দফা। কথা ছিল সাফজয়ী মেয়েদের ফুলের স্টিক দিয়ে বরণ করবেন বাফুফে সভাপতি কাজী সালাউদ্দিন। কিন্তু অতিরিক্ত ভিড়ের কারণে তা সম্ভব হয়নি। পরে এক সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।

 

সর্বশেষ খবর