শুক্রবার, ২৩ সেপ্টেম্বর, ২০২২ ০০:০০ টা

মার্চের মধ্যে পাঠানো হতে পারে পি কে হালদারকে

কলকাতা প্রতিনিধি

মার্চের মধ্যে পাঠানো হতে পারে পি কে হালদারকে

আগামী বছর মার্চের মধ্যে ভারত থেকে বাংলাদেশে ফেরত পাঠানো হতে পারে প্রশান্ত কুমার হালদার ওরফে পি কে হালদারকে। এমন একটি আভাসই পাওয়া গেছে। বাংলাদেশ থেকে কয়েক হাজার কোটি টাকা আত্মসাৎ করে পশ্চিমবঙ্গে গ্রেফতার হয়ে এখন ভারতের কারাগারে আটক রয়েছেন পি কে হালদার। তিনি বাংলাদেশের এনআরবি গ্লোবাল ব্যাংকের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক। এদিকে ১৭ নভেম্বর ফের কলকাতার নগর দায়রা আদালতে তোলা হবে পি কে হালদারসহ ছয় অভিযুক্তকে। গতকাল এ নির্দেশ দেন সিবিআই স্পেশাল কোর্ট-৪-এর বিচারক বিদ্যুৎ কুমার রায়। এদিন স্থানীয় সময় বেলা ১টা নাগাদ তাদের এজলাসে তোলা হয়। উভয় পক্ষের আইনজীবীদের বক্তব্য শুনে বিচারক আগামী ১৭ নভেম্বর অভিযুক্তদের ফের আদালতে হাজিরা দেওয়ার নির্দেশ দেন। এদিন আদালতে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেটের (ইডি) তরফে সাড়ে ৪ হাজার পাতার যে আরইউডি নথি জমা দেওয়া হয়েছিল, এর একটি কপি অভিযুক্তদের হাতে তুলে দেওয়া হয় এবং অভিযুক্তরা তাতে স্বাক্ষরও করেন। সে ক্ষেত্রে আগামী ১৭ নভেম্বর এই আরইউডি কপি যাচাই করে অভিযুক্তরা আদালতে জানাবেন। ততদিন পর্যন্ত অভিযুক্তরা প্রত্যেকেই কারাগারে থাকবেন। সে ক্ষেত্রে শারদীয় উৎসবে কারাগারের চার দেয়ালের ভিতর কাটাতে হবে পি কে হালদারসহ অভিযুক্ত সবাইকে। তবে এই সময়কালে প্রয়োজনে কারাগারে গিয়ে তদন্ত কর্মকর্তারা জিজ্ঞাসাবাদ করতে পারবেন বলেও আদালত নির্দেশ দেন। ইডির আইনজীবী অরিজিৎ চক্রবর্তী বলেন, ‘অভিযুক্ত প্রত্যেককেই আগামী ১৭ নভেম্বর ফের আদালতে তোলা হবে। ততদিন পর্যন্ত তারা কারাগারেই থাকবেন এবং প্রয়োজনে ইডির কর্মকর্তারা কারাগারে গিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করতে পারবেন।’ তবে কারাগারে থাকাকালীন অবস্থায় অভিযুক্তদের জিজ্ঞাসাবাদ করে নতুন কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি বা নতুন কোনো সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত হয়নি বলেও এদিন জানান ইডির আইনজীবী। এদিন আদালতে প্রবেশের সময় গণমাধ্যমকর্মীদের কোনো প্রশ্নের উত্তর দিতে চাননি পি কে হালদার বা তার সহযোগীরা। যদিও ইডি সূত্রে খবর, এই মামলা আর দীর্ঘায়িত করতে চায় না তারা। সে ক্ষেত্রে নতুন করে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে আদালতে সাপ্লিমেন্টারি চার্জশিট দেওয়ারও পক্ষপাতী নয় তারা। ফলে বিচার শুরু হলে আর ভারতীয় আইন অনুযায়ী দোষী সাব্যস্ত হলে এ মামলায় সাত বছরের জেল হতে পারে অভিযুক্তদের। সে ক্ষেত্রে আগামী বছরের মার্চের মধ্যে বাংলাদেশে ফেরত পাঠানো হতে পারে পি কে হালদারসহ অভিযুক্তদের। আর ভারত-বাংলাদেশের মধ্যে বন্দি প্রত্যর্পণ চুক্তি অনুযায়ী তাকে ফেরত পাঠানো হতে পারে। আর তা-ই যদি হয় তবে ভারতীয় আইনে সাজাপ্রাপ্ত পি কে হালদারের বাকি সাজার মেয়াদ বাংলাদেশে ভোগ করতে হবে। অন্য একটি সূত্র জানায়, চলতি মাসের গোড়ার দিকে শেখ হাসিনার দিল্লি সফরে পি কে হালদারকে দেশে ফেরানোর ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট মহলের সঙ্গে কথা বলে থাকতে পারেন তিনি। আগামী বছরের শেষে বা পরের বছরের গোড়ায় সে দেশে দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন। আর সেই নির্বাচনের আগেই পি কে হালদারকে দেশে ফিরিয়ে সে দেশের আইন অনুযায়ী তার বিচার শুরু করতে চায় বাংলাদেশ সরকার। উল্লেখ্য, ১১ জুলাই অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে কলকাতার আদালতে চার্জশিট জমা দেয় ইডি। ১০০ পাতার ওই চার্জশিটে পি কে হালদারসহ ছয় অভিযুক্ত ব্যক্তির নাম রয়েছে। এ ক্ষেত্রে কেবল ‘প্রিভেনশন অব মানি লন্ডারিং অ্যাক্ট, ২০০২’ মামলায় ওই ছয় অভিযুক্তের নামে চার্জ গঠন করা হয়েছে। চার্জশিটে রয়েছে তাদের দুটি সংস্থার নামও। এ মুহূর্তে অভিযুক্ত পি কে হালদারসহ পাঁচ পুরুষ অভিযুক্ত রয়েছেন প্রেসিডেন্সি কারাগারে। অন্যদিকে একমাত্র নারী অভিযুক্ত রয়েছেন আলীপুর কেন্দ্রীয় কারাগারে। উল্লেখ্য, অশোকনগরসহ পশ্চিমবঙ্গের বেশ কিছু জায়গায় অভিযান চালিয়ে ১৪ মে পি কে হালদারের সঙ্গেই গ্রেফতার করা হয় তার ভাই প্রাণেশ হালদার, স্বপন মিস্ত্রি ওরফে স্বপন মৈত্র, উত্তম মিস্ত্রি ওরফে উত্তম মৈত্র, ইমাম হোসেন ওরফে ইমন হালদার এবং আমানা সুলতানা ওরফে শর্মী হালদারকে।

 

সর্বশেষ খবর